মাত্র কদিনের পরিচয়
মাত্র এই কদিনেই তোমায় ভালোবেসে ফেললাম
বন্যায় গাছপালা বাড়িঘর
ভেসে যেতে দেখেছি টিভিতে
এইবার নিজেকে ভেসে যেতে দেখলাম
হৃদয়ে
সারাক্ষণ কেমন যেন
মন খারাপ খারাপ লাগা
যেন গ্রীষ্মের দুপুরে বন্ধ পাখার দিকে তাকিয়ে
কারেন্ট আসার অপেক্ষা করা
এগুলো সত্যিই কি আসলে ভালোবাসা বলো?
নয়। তুমিও জানো। আমিও জানি।
এ হল নেশা
তাকানোর নেশা
নিখুঁতভাবে পরখ করার নেশা
চোখের পলক, মণির উজ্জ্বলতা
ঠোঁটের রঙ, গলার গড়ন
গায়ের গন্ধ,
কপট অনিচ্ছাকৃত স্পর্শ
এ সব নেশা
বাস্তবের জগতে নেশা
গাছের গোড়ায় জল দাও
মূল সব শুষে নেবে
তুমি সেই জলের মত
আমি শুষে নিচ্ছি তোমার রূপ
তোমার মাধুর্য,
তোমার যা কিছু সুন্দর
আসলে কি শুষে নিচ্ছি?
সেকি কেউ পারে?
নেওয়ার ইচ্ছাকে বলে
নেশা
নিয়ে নিচ্ছি এ বোধকে বলে
মোহ
ভালোবাসা অন্ধ করে দেয়
সত্যিই তাই
ধুলোঝড়ের মত যে ভালোবাসা
আচমকা বিনা ভূমিকায় জন্মায়
সে অন্ধই করে যায়
তুমি আমায় অন্ধ করে দিলে
আমিও চাই তুমি অন্ধ হও
আমার জন্য অন্ধ হও
হবে না। তা হয় না।
দুজনে অন্ধ হলে
একদিন না একদিন
চোখ খুলবে একজনের
চোখ খুলে সে চমকে উঠে বলবে
এই তুমি! তোমার জন্য এতদিন এতকিছু!
চোখের পাতা তখন আর চাইলেও বন্ধ হবে না
বিশ্রাম নেওয়া যাবে না একদণ্ড অন্ধত্বের সুখে
সারাক্ষণ চোখ জ্বালা
আবার এমন ভালোবাসা খোঁজা
যা অন্ধত্বের সুখ দেবে
আরো দীর্ঘক্ষণ
আসলে আমরা কাউকেই স্পষ্ট দেখতে চাই না
সমস্ত ভালোবাসাকে চাই
যেন টুরিস্ট স্পট হোক
আমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে ঘুরে ঘুরে আসি
বাস্তবতাকে এড়িয়ে
পুরী মানে যেমন সমুদ্র খালি
নর্থ বেঙ্গল মানে যেন শুধুই পাহাড়
সেখানে কোথাও কোনো দুঃখ অভাব অসম্পূর্ণ কিছু থাকতে নেই
এভাবে নিজের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে খেলতে
একদিন খেয়াল করি
সংসারের পরিখার বাইরে
চলে এসেছি
গুটিবসন্তের মসীমাখা গায়
তখন ক্লান্ত শরীরে অপেক্ষা করি
সেই তরুণ করুণ সন্ন্যাসী উপগুপ্তের
যে শুশ্রূষাময় ভালোবাসায় জীবন ফিরিয়ে দেবে।
কিন্তু উপগুপ্ত কি সবার জীবনে আসে?
=======================
"একটা সোজা কবিতা লিখো। আমাদের জন্য, ভালোবাসা নিয়ে ।"
লিখলাম। তবে একবার রবীন্দ্রনাথের 'অভিসার' কবিতাটা পড়ে নিও, নইলে শেষে শুধু প্রশ্নচিহ্ন কান্নাকাটি করবে)