November 2019

এমনই ভাবে ভীষণ
এমনই ভাবে অকারণ
...

সেদিন রাতে তো মাঠ, রাস্তা, পুকুর,
  নারকেল, আম, অশ্বত্থ, কৃষ্ণচূড়া সব গাছগুলো
          জ্যোৎস্না হয়ে দাঁড়িয়েছিল
...

পাঁচিলটা গোল
   ওপারে যাওয়া যায় না

আকাশটা উঁচু,
...

যে কবিতাটা লেখা শুরু হয়েছিল দিনের মধ্যভাগে, সে কবিতার শেষ ছত্রের কয়েকটা শব্দ কবিকে এমন নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল যে, ভাবতে ভাবতে সূর্য গেল পাটে।
...

মানুষ কি জন্মায় তবে শূন্য সাদা কাগজ হয়ে? নাকি মানুষের সত্তার গভীরে জন্মলগ্ন থেকেই কোনো বোধের ইঙ্গিত থাকে, কি বলেন মশায়? -- দেখেন, এই নিয়ে পাশ্চাত্যে ক্যাঁচালের শ্যাষ নাই। দেকার্ত, স্পিনোজা, লাইবিনিৎজ মহাশয় তো বলেন কয়েকখানা নামতা মুখস্থ করেই মানব সংসারের সিংহদুয়ারে এসে দাঁড়ায়।
...

ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি, সেটা খুব সম্ভবত পঞ্চমীর দিন ছিল। বেশ রাত হয়ে গেছে। আমি ভাই আর বোনকে নিয়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ঢুকেছি। এমন সাজ আমি এরপরে আর কোনোদিন দেখিনি, কালীমূর্তিকে একটা লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পরানো, সব গয়না খোলা, দু'জন মিলে হাত পা মোছাচ্ছে।
...

ঈশ্বর
 মানুষ হতে হতে
   অবতার হতে হতে
      ধর্মের তর্ক-বিতর্ক শুনতে শুনতে
...

বারবার খসে পড়া আঁচলটা কাঁধে তুলে নিতে নিতে
     যে মানুষটার একবারও একটা শব্দও আলটপকা উচ্চারিত হল না,
     দুই মলাটের বাইরে
...

এমন কোনো ভালোবাসা নেই
যার জন্ম পূর্বদিকে নয়
...

তুমি কথা বলোনি
    মানে বলতে পারোনি হয় তো
তোমার তো অনেকরকম ব্যস্ততা
...

আমি হুমায়ূন আহমেদ প্রথম পড়ি কলেজে উঠে। ওনার সম্বন্ধে জেনেছিলাম তার আগেই অবশ্য, সুনীলবাবুর একটা প্রবন্ধে, দেশে বেরিয়েছিল। বিস্মিত হয়েছিলাম, এমন জনপ্রিয় একজন লেখক? কিন্তু বই পড়ব কি করে?
...

মৈঠা হাস্পাতাল থেকে এসে ইস্তক বিছানা ছাড়েনি, চারদিন হল। শুয়ে শুয়েই বাচ্চাটাকে দেখে, বিজন বাচ্চাটাকে কোলে দিয়ে যায়, দুধ খাওয়ায়। ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, দুঃস্বপ্ন দেখে চমকে ওঠে। এত দুধ যে শাড়ি ভেসে যায়।
...

সরোবর বলল, এসো
... সে বলল, না, তুমি কেমন স্থির, তোমার বুকের মধ্যে পূর্ণচন্দ্রের ছায়া, সে কেমন ধ্যানমগ্ন, স্থির। চারদিকের এই নীরবতার মাধুর্য ভেঙে, তোমার বুকে ঢেউ তুলে কি হবে নেমে? তার চাইতে বসি তোমার তীরে।
...

একটা ফড়িং ছাদে ঠোক্কর খেতে খেতে উড়ছে।
সকালবেলা, বুঝলাম, ব্যাটা নিশ্চয় জানলাটা বা দরজাটা দেখতে পাচ্ছে না, রাতে কখন এসে ঢুকেছে।
...

জিভ আর কলম ভ্রমণে বেরিয়েছে,
সামনে চলেছে দরদী পেয়াদা
      রক্ষাকবচ,
...

বইতে পড়েছিলাম, সারদাদেবী বলছেন, সংসারে কেউ তোমার পর নয় মা, জগতকে আপন করতে শেখো।
       এ হল গিয়ে বাণী। পড়া তো হল, কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ এর উদাহরণ দেখব বলে ভক্ত, অনুরাগী, সাধু, পণ্ডিত কার না দরজায় দরজায় ঘুরলাম। পেলাম না।
...

আমিও ছিলাম
  পিছনে
    অনুরাগী অনুসরণকারী
...

ঝড় থেমে গেছে। বাতাসে ভেসে আসছে রবীন্দ্রসংগীতের সুর। দূরে মাইকে বাজছে কোথাও। রবিবারের সকাল। এলোমেলো বাতাসে গাছগুলোর নড়েচড়ে ওঠার আওয়াজ।
...

এ লেখাটা আমি লিখতে চাইছি না, কিন্তু এও জানি, এ লেখাটা না লেখা অবধি আমার শান্তি নেই। কেন লিখতে চাইছি না? কারণ নবনীতা দেবসেন নামটা আমার পরিচিত, জ্ঞাত নাম শুধু না,
...

মানুষ তারপর কোত্থাও যায় না। ও সব স্বর্গ-নরক কিচ্ছু হয় না।
...

Life is a courtroom
Where you don't have your lawyer
Wating for the verdict
...

একজন নাস্তিক মন্দিরের বাইরের চাতালে ঘুমিয়ে পড়েছে। অনেক রাত। মাঝরাতে মশার কামড়ে তার ঘুম ভেঙে গেল। পায়ে কি একটা ঠেকল। তাকিয়ে দেখে মন্দিরে যার বিগ্রহ, সে!
...

আমরা কেউ কারোর বন্ধু নই
  পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছি
          এই
...

পুরো সংসারটা ছেদরে যাচ্ছে। কিচ্ছু মনের মত হচ্ছে না। কিচ্ছু না। বাঁচাটা কেমন যেন প্ল্যাটফর্মের শেডের মত হয়ে গেছে। এ সে এসে দাঁড়াচ্ছে, চলে যাচ্ছে। সবাই ঠকাচ্ছে। কেউ নেই এমন একজন যে ক'টা মনের কথা খুলে বলা যায়।
...

ভরসা তবে কি?

সেকি নদী?

   পাথর?

     না আকাশ?
...

লাট্টু ঘোরে কিভাবে? লাট্টু মাটিতে ঘুরিয়ে ছাড়ার একটা নিয়ম আছে। সবাই পারে না। লাট্টু যতক্ষণ তার তীক্ষ্ণ লোহার ফলাকে মাটির সাথে বিঁধিয়ে ঘুরতে পারবে ততক্ষণ সে সোজা থাকবে।
...

আম্বিলি - সিনেমাটা মালায়ালম ভাষায়। আমি হঠাৎ করে আমাজন প্রাইম ভিডিওতে পেয়ে গেলাম। দেখতে দেখতে ডুবতে শুরু করলাম। হাসলাম, কাঁদলাম। বুক ভরে একটা জোরদার শ্বাস নিয়ে জমে থাকা কঠিন বিচ্ছিরি বিরক্তিকর যা যা কাজ, সব্বাইকে বললাম এসো, সেরে ফেলি চটপট। সেরে ফেললাম।
...

সেলুনওয়ালা আমায় চেনে। কারেন্ট নেই। গান চলছে না তাই। যা হোক বসলাম কেশত্যাগী আসনে।
       হঠাৎ শুনি কানের কাছে সেলুনয়াওয়ালা গাইছে, "কিতাবে বহুত সি পঢ়ি হোগি তুমনে"
...

ছাত্রীকে জিজ্ঞাসা করলাম, একটা অবলুপ্ত পক্ষীর নাম বলো।
...

ছাপার অক্ষর, উচ্চারিত অক্ষর আর চিন্তার অক্ষরের কি করে কি করে জানি একদিন দেখা হয়ে গেল তেমাথার মোড়ে।
       তিনজনেই অপ্রস্তুত।
...

গুরুতর ভালোবাসার অভাব নিয়ে মানুষটা বেঁচে ছিল। তার সবসময় মনে হত সে যখন তখন যা খুশী করে ফেলতে পারে। অহংকারকে ইচ্ছা ভেবে গুলিয়ে ফেলতে ফেলতে লোকটা যখন একেবারে খাদের ধারে - তখনই তার মাথায় জড়ানো জরির কাজ করা পাগড়িটা খসে গিয়ে পড়ল খাদে।
...

কতটা জোরে দৌড়েছিলে?
কতটা ছিল পেশীর জোর?
কত নির্ভুল ছিল প্রতিটা পদক্ষেপ?
...