Skip to main content

ঈশ্বর
 মানুষ হতে হতে
   অবতার হতে হতে
      ধর্মের তর্ক-বিতর্ক শুনতে শুনতে
হঠাৎ বিষম হিক্কা তুলতে শুরু করলেন
দৌড়ে মাঠে গিয়ে শুয়ে পড়েই বললেন -

 "আমি যেন কে? ওরে কে কোথায় আছিস?
   আমি কে রে, আমার বাবা-মা ভাই বোন কে কোথায়?
    ওরে ডেকে নিয়ে আয়, ওরে ওদের খবর দেরে"

সাধু সন্ন্যাসী, জ্ঞানী যোগী সবাই পড়লেন ভীষণ বিপদে
   "আমি কে" - এ প্রশ্ন তো ছিল তাঁদের একচেটিয়া,
    হঠাৎ ঈশ্বর যদি এ প্রশ্ন করেন
       তারা তবে যায় কোথায়?

সবাই তাঁকে ঘিরে গোল হয়ে বসে পড়লেন
   শুরু হল জল্পনা-কল্পনা, যাগজজ্ঞ, জপতপ, শাস্ত্রপাঠ।
   হঠাৎ শোনা গেল জোরে জোরে নাক ডাকার আওয়াজ

 ঈশ্বর ঘুমিয়ে পড়েছেন

সবাই বলল, আরে এই সুযোগ, তাড়াতাড়ি তুলে নিয়ে চলো
  মন্দিরে বন্দী করো, মানুষের বুলি শেখাও,
    দাও নানা উপঢৌকন, তোষামদ

তাই হল। ধীরে ধীরে, মন্দিরে থাকা অভ্যাস হয়ে গেল ঈশ্বরের।
  এর ওর সমস্যার কথা শুনতে শুনতে, লোভের কথা শুনতে শুনতে
     ঈর্ষা, রাগ, প্রতিশোধ, ছলনার কথা শুনতে শুনতে
ঈশ্বরের মনে পড়ে গেল তিনি কে ছিলেন।
  মাঠের কথা, আকাশের কথা ভাবতে ভাবতে
    মন্দিরের ছাদে দৃষ্টি আটকে
      অপেক্ষা করতে লাগলেন
        কয়েকটা চামচিকের জন্য
            অনেক রাতে মন্দির ফাঁকা হলে
        যারা তার সাথে দাবা খেলতে বসবে
                  দাবা খেলা শেখাবে

ঠিক সেই সময়ে
  মধ্যরাতে
একটা বাচ্চা মেয়ে
    শুক্লপক্ষে নীল জামা গায়ে
      কৃষ্ণপক্ষে লাল জামা গায়ে
        রেললাইনের ধারে এক্কাদোক্কা খেলে
         সে ঘাড় তুলে এদিক ওদিক তাকায়
           খেলতে খেলতে
        কাকে যেন খুঁজছে।
       তার আকুল অপেক্ষা
          মন্দিরের ঘন্টায়
           আঘাত করে ফেরে
               ঢং ঢং ঢং

   ঈশ্বরের দাবার চালে ভুল হয়ে যায়
      চামচিকেরা বিরক্ত হয়
 বকাঝকা করে বলে
          "কেন এত অন্যমনস্ক?"

ঈশ্বর নিজেকে সামলে নিয়ে বলেন
        "না, কই কিছু না তো"

Category