আত্মদীপ
অবশেষে তোমার কান্না তোমাকেই কেঁদে নিতে হবে
অবশেষে তোমার ধর্ম তোমাকেই খুঁজে নিতে হবে
অবশেষে তোমার সাথে তোমার ভিতরে
তোমাকেই ঘর বাঁধতে হবে
আমার ভীষণ ভয় করল
ঘাটও চেয়েছিলে শ্যাওলাহীন
খেলার সাথী
ঘরের সব ক'টা দরজা বাজারে, লোকের ভিড়ে না খুলুক
কোনো একটা রাস্তা থাকুক নিরুদ্দেশের বালাই নিয়ে,
অদরকারি, খোলামকুচি, অনাদরের নুড়ি-পাথর
সে দরজার বাইরে অপেক্ষা করুক আমার জন্য,
ওরা বড় আপনার আমার
এক কোপে নাশে
নিদ্রামগ্ন তীর্থযাত্রীগণ
নিদ্রাহারা তারকামালা রহিয়াছে চাহি, যেন সশস্ত্র প্রহরী ওরা
বিস্তীর্ণ মরুভূমি মাঝে,
সত্য
যে চলতে চলতে দাঁড়িয়ে পড়ে
দাঁড়িয়ে পড়ে পিছন ঘুরে
সবার চলা আড়াল করে,
বলে ওঠে গম্ভীর স্বরে -
'ইহাই সত্য'
তাকে আমি এড়িয়ে চলি
কোনো কবিতাই
আসলে তো একটাও কবিতা পুরো লেখা হয়নি আজ অবধি
একটা স্লেট হাতে
জঙ্গলে, গাছের ডালে, গুহায় যে মানুষটা নগ্ন হয়ে
বা কখনও ছাল-বাকলা গায়ে
বাদামগুলোর মত
মন্দিরের গায়ে গায়ে অনেক গর্ত
পায়রা, মাকড়সা, পিঁপড়ের জমায়েত
মানত করা লাল কাপড়, সিঁদুরের খালি ডিব্বা, ভাঙা চিরুনি
এরকম অনেক কিছু থেকে যায়
ভাঙা, ফেলে দেওয়া, অবহেলার সংসার গড়ে ওঠে অলক্ষ্যে
একদিন কারোর শুচিবায়ু চোখে পড়ে
অবহেলার সংসার আবর্জনা হয়ে যায় নিমেষেই
আমি যেখানে
আমি যেখানে নির্ভাষ
আমি যেখানে অন্তরিন নগ্ন
আমি যেখানে মহাকাশের কালহীন আবর্ত
আমি যেখানে গভীর জঙ্গলে ফোটা কোনো অখ্যাত ফুলের সহচর
আমি যেখানে বিস্তীর্ণ মরুভূমির একটি নির্বিশেষ বালুকণা
অকারণ
আজ পূর্ণিমা না
তবু আধফালি চাঁদই যেন সারা আকাশ জুড়ে
ঢেউয়ের পাড় ভাঙার শব্দ শুনেছি
গভীর রাতে পুরীর বিচে বসে
আজ অন্তত
তোমার ঝুড়িতে সাজানো
শেষ গোলাপি কুঁড়িটা আমায় দিয়ো
ওরা শিশিরে ভেজা নয়, জানি
চাঁপাকলের জলে ভেজানো।
ভূগর্ভস্থ জলে সিক্ত
ওদের কোমল শেষ শরীরটা বেচো না,
আমায় দিয়ো
আমি ফুল ফুটিয়ে তোমার হাতে দেব।