ফাঁকি
মেয়েটা যতবার মুখ লুকিয়ে কাঁদতে চাইছে, ততবার কয়েকটা চুল মুখের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। আবার মাথা তুলে চুলগুলো বার করে কানের পিছনে সরিয়ে, আবার টেবিলে মাথা নীচু করে কাঁদতে শুরু করছে। কাঁদতে কাঁদতেই ভাবছে চুলগুলো আরেকটু ছোট করে কাটবে সামনের বার।
চলো
যে পথে কিছু কাঁকড় এখনো প্রতিশোধ নেবে বলে বুক চিতিয়ে শুয়ে আছে
লোভী
ইচ্ছাগুলোর গলা টিপে
তাদের তাজা উষ্ণ রক্ত দিয়ে
বানাতে গিয়েছিলে নিজের স্মৃতিসৌধ
ভেবেছিলে বিশ্ববাসী প্রদীপ হাতে
প্রতিদিন আনবে শ্রদ্ধার অর্ঘ্য
অমানিশা
মা
ছুটি মঞ্জুর
বুঝবে না
যদি
শুধু বৃন্ত বা কুঁড়ি হলেও হবে
গল্প কথা
সময়
তারপর কি রৌদ্রোজ্বল পথে হেঁটে চলে যাবে দূরে?
নাকি নদী সাঁতরে যাবে ওপারে ওই ঘন জঙ্গলে?
জানোয়ার
হস্টেল রুমে ঢুকে বাঁদিকের দেওয়াল হাতড়ে স্যুইচটা জ্বালতেই পরমা চীৎকার করে উঠল। বাইরে প্রচণ্ড জোর বৃষ্টি হচ্ছে। জানে কেউ শুনতে পাবে না। তবু রিফ্লেক্সে চীৎকারটা বেরিয়ে এলো গলা থেকে। তার মেরুদণ্ড দিয়ে একটা হিমেল স্রোত নেমে গেল। সে বুঝতে পারছে তার নীচের ঠোঁটটা থরথর করে কাঁপছে। তার পা-দুটোও যেন তাকে ধরে দাঁড়াতে দিচ্ছে না, এমন দুর্বল অবশ হয়ে আসছে তার শরীর। মনে মনে বলল, 'জানোয়ারটা ঢুকল কখন?
পরিচয়
তীর্থযাত্রী ফিরে এসেছিল
পথ হারায়নি
দিক ভুলেছিলো
আজকের বিশেষ বিশেষ খবর হল...
খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে
কখনো মৃদু হেসে
বয়েই চলো
হিসাব মেলেনি?
যার সময়ে দাঁড়ানোর কথা ছিল সে দাঁড়ায়নি?
(তাকে অন্য কারোর সাথে অন্য কোনো গলিতে দেখেছো?)
সময়ে কে আসে বলো জীবনে?
পেপারওয়ালা আর দুধওয়ালা ছাড়া
(তাও খুব বর্ষায়, খুব শীতে তারাও তো দেরি করে!)
মনের ভিতর মনকে আটকিয়ো না
আটকানো মনের অভিমান বেশি
বইতে দাও, নিষেধ করবে? কেন?
কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়
১
---
তো হল কি, অনেকে বলছেন কাল কেমন বেড়ালুম সে বিষয়ে কিছু লিখতে। প্রথমে ভাবলাম লিখব না, কারণ গন্তব্য (কামারপুকুর-জয়রামবাটি) কিছু নতুন জায়গা নয়, আগেও গেছি, আর যাঁদের উদ্দেশ্যে যাওয়া তাঁরাও ঘরের মানুষ। তবে আর লেখার কি থাকতে পারে?
অসহ্য
১
---
রত্না সিমেন্ট বাঁধানো বেঞ্চে বসে। বিকাল পাঁচটা। সদ্য দূর্গাপূজো গেল। লক্ষীপূজোও। রত্নার ছেলে বউ নাতি নাতনি কেউ আসেনি। ওরা আসবে না, বউমা বলেছে (নিজেও চায় না)। “কনকা” বৃদ্ধাশ্রমটা তাদের বাড়ি থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার হবে। রত্না আশা করে না আর।
বাসবে ভালো একদিন আমায়?
সরে দাঁড়াও
শূন্য আঙিনাও কাড়বে?
দুদিক
এখন যা খুশি তাই কাটছ কচ কচ করে
বারণ করতে গেলেই বলছ
শিখণ্ডী
কাঁটার মত বিঁধে আছে
সিঁদুর
ওটা বেড়া না বাগানের সীমারেখা?
তবে আমার মাথায় নেই কেন?
আসল কেউ নয়
সাজঘর বদলে যায়
মঞ্চ বদলে যায়
স্পর্ধা!
পঁয়তাল্লিশ ঊর্দ্ধ, চশমা চোখে ছিপছিপে মহিলাটি
UNCALLED
as solitary incense ;
some were indulging ,
জল
জল অভিমানী নাকি বীতশ্রদ্ধ?
তাকে ডাকলেও সাড়া দিচ্ছে না
দ্বন্দ্ব
ভাবনা হয়েও
ভাবনার সাথে দ্বন্দ্ব হল
পাঁজরগুলো চেঁচিয়ে উঠে চুপ করল
আমি হয়েও আমি না হওয়ার ছল বুনল
কেন এ হিংসা দ্বেষ
অযাচিত
ধূপের মত
ঘাম
ফটক
আমি কোনো দূরের তারার গতিবিধিতে চোখ রাখিনি কোনোদিন
আকাশের দিকে তাকিয়ে কোনো অসীম অস্তিত্বের দিকে হাত বাড়াইনি কখনো
আমার বুকের মধ্যে বারবার ঢুকেছি
সেখানে আছে মস্ত একটা ফটক
বাইরে আসার। নিজেকে ছেড়ে বাইরে দাঁড়াবার, নিজের দিকে পিছন ফিরে।
আনা কারেনিনা
'আমি'
আমি আকাশকে নীল আর মাঠকে সবুজ প্রথম তাকিয়েই বুঝেছি।
তুমি শুধু শব্দদুটো দিলে - নীল আর সবুজ।
আমি মায়ের জন্যে কান্না আর অপরিচিত হাতের থেকে দূরত্ব রাখা জন্মলগ্নেই জেনেছি।
তুমি দুটো শব্দ দিলে - ভালোবাসা আর ভয়।
আজ থাকা আর ছেড়ে যাওয়া দুজনকেই দেখছি পাশাপাশি।
তুমি দুটো শব্দ দিলে - জীবন আর মৃত্যু।
'Self'
My first sight knew,
The pasture is green...
And the sky has a bluish hue...
You blessed me with two words,
Emerald Green and Azure Blue..
Unbound tears for my mother,
Distance from the touch of a stranger...
I knew from my first footstep, by Jove...
You named one feeling as Fear
And the other one as Love..
Now I see existance
তুমি জানতে?
আমার ভালোবাসার সাক্ষী কি কেবল আমিই ছিলাম? না তুমিও ছিলে?
ভয় করে
ভুল শুধু আমিই বুঝলাম
না তুমিও
খালের জল খরস্রোত হল
তুমি ওপারে কখন গেলে?
তুমি কি জানতে বান আসছে?
অপেক্ষা
বাইরে দাঁড়িয়ে
বাইরে দাঁড়িয়ে
একা
তোমার দিকে অবিশ্বাসের দেওয়াল
আমার বুকে অভিমানের পাঁচিল
কোনো একদিন না হয়
কোনো একদিন না হয়
অকারণেই দরজার বাইরে পা রাখলে
ভিড় সরিয়ে, চেনা চোখ এড়িয়ে এলে
বুকের একটা অচেনা দরজার সামনে
টোকা দিলে
ঠক ঠক ঠক
দরজার ওপাশে শুনলে কার চুড়ির আওয়াজ
নূপুরের রিনিরিনি শব্দ উঠল যেন মৃদু ঝংকারে
ফুটেছে কি?
দীর্ঘ না অল্প পথ সামনে
জানি না।
ধুলোয় নিজের পায়ের ছাপ মিলাতে দেখেছি কতবার, অতীতে।
সামনের পথটাতেও সে ছাপ থাকবে না জানি
আমি হেঁটে যাওয়ার পর।
অভিমান হয় খুব
তবে এত আয়োজনের কি খুব দরকার ছিল?
SUCH
The lustrous sky with glittering glow,
after a ceaseless rain-flow,
till afternoon ;
My eyes behold in tranquil eve,
splendor central sky achieve,
an extensive Moon!
বনাম
অত্যাচার দু'রকম হতে পারে। প্রমাণ সাপেক্ষ আর প্রমাণ সাপেক্ষ নয়। যা প্রমাণ সাপেক্ষ তার পরিমাপ নেওয়ার একটা পদ্ধতি আছে। আর যা প্রমাণ সাপেক্ষ নয়, তার স্বাভাবিকভাবেই পরিমাপ করবার কোনো উপায় নেই। প্রমাণ সাপেক্ষ আর প্রমাণ সাপেক্ষ নয়, দুর্নীতির ক্ষেত্রেও একই কথা।
টু দ্যা সেক্রেটারীস, শুভ বিজয়া স্যার/ ম্যাডাম/?
এবার প্যাণ্ডেলগুলো খুলে ফেলুন প্লিজ। একটু তাড়াতাড়ি করুন। এত মাইকের আওয়াজ হচ্ছিল আপনারা শুনতে পাননি, এই বড় রাস্তাটার সামনেই যে বাঁদিক ঘেঁষে গলিটা, ওর পাঁচ নম্বর বাড়ির ভদ্রলোকের (অবশ্য ততটাও ভদ্রলোক নন, শুনেছি ক্লার্ক ছিলেন কোনো একটা প্রাইভেট স্কুলের, কত টাকাই বা মাইনে পেতেন!) হাঁপানির টান উঠেছে সপ্তমীর দিন রাত থেকে। বেশিরভাগ সময় একটা সবুজ নাইটি পরে থাকা ওনার মেয়েটা এখানে ওখানে ছুটে বেড়িয়েছে একটা
দশমী
ওনারা অনেকক্ষণ হল ঝুল বারান্দায় বসে। বিকাল ছটা থেকে। সামনে লোকের ভিড়। বাড়ছে। বিসর্জনের বাজনা। সিঁদুরে সিঁদুরে লাল প্রতিমার মুখ। মুখে ভাঙা মিষ্টি। উত্তাল ঢাকের আওয়াজ। নাচ, উদ্দাম নাচ।
বৃদ্ধ-বৃদ্ধার চোখজোড়া ইতস্তত খুঁজছে রাস্তায় চেনামুখ। ছেলে, ছেলের বউ আর দুটো নাতনি। এবারেও এলো না। গতবারও আসেনি। গতবার অফিসে ছুটি ছিল না। এবার পেয়েছে। বেড়াতে গেছে বাইরে, সিঙ্গাপুর।
কি ভাবছ
যেন
নবমী
রাস্তার ধারে বসে আছে পাগলীটা। তাকে ঘিরে মাছি ঘুরছে ভনভন করে। কালো মোটা বোঁচকাটায় পিঠে ঠেসান দিয়ে আছে মল্লিকদের বাড়ির রকে। সামনে চলেছে লোকের বান। পাগলী আলোর খেলা দেখছে মুখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। হঠাৎ কানখাড়া করে কি শুনতে লাগল। মাইকে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের ঘোষণা চলছে। তাদের পার্টি অফিসের সামনে দেখা করতে বলছে। পাগলী চুল পাকাতে পাকাতে শুনছে মন দিয়ে। চোখে মুখে উদ্বিগ্নতা। তার চোখে রাস্তায় লাগানো আলোর ঝলকানি।
এক্সপায়ারী ডেট
অষ্টমী
কুসুমের এই সময়টায় অনেক কাস্টমার। কোমরে ব্যাথা হয়। তলপেটটাও টাটায়। তবু অন্যদিনের মত ঘুমিয়ে পড়ে না ভোরের দিকে। পূজোর দিনগুলো ডালা সাজিয়ে প্যাণ্ডেলে যায়। আজ অষ্টমী। পুরোহিত বসে প্রতিমার সামনে। তার আরেক কাস্টমার। পুরোহিতের দুইদিকে দুই নারী। মাটির আর রক্তমাংসের। পুরোহিতের মন্ত্রপড়ার আওয়াজ বেড়ে যায়..ওঁ অপবিত্র পবিত্রবা সর্বাবস্থাং...
মেঘ
সূর্য বাষ্পীভূত করে জলকে
পাত্রকে জলশূন্য করে
আমি বহুকাল আগেই বাষ্পীভূত
তোমার চোখের তাপে
'আমি' শূন্য বুকের খাঁচা এখন
আজ আমি মেঘ
বন্ধুতা (PDF)
সপ্তমী
মেয়েটার বছর বারো বয়েস। একটাই জামা হয় প্রতিবার। এবারেও হয়েছে। বাবার মিল বন্ধ। তাই জুতো হয়নি। জামাটা হলুদ রঙের। ইচ্ছা ছিল একটা লিপিস্টিক যদি দিত কিনে..হলুদ রঙের।
বন্ধুতা
ষষ্ঠী
কাল অনেক রাত অবধি লোকটা বারান্দার রেলিং এ ঝুঁকে লোকের স্রোত দেখছিল। তার বাড়ির সামনে আলোয় আলো। আলোতে ছোটোছোটো পোকার ঘূর্ণী। মাইকে মান্না দে।
শুভেচ্ছা
তাকিয়েছো কি নিবিড় করে
পথের পরে
চেয়েছিলে কি আপনমনে
আমার কাছে
গোপন উপহার?
সরিয়ে নাও
তুমি তোমার থেকে তোমাকে সরিয়ে নাও
তুমি তোমার থেকে আমিকে আমাকে দাও
পারো?
ক্ষমা চাইতে হাতজোড় করতেই হবে?
না তো!
ভালোবাসি বোঝাতে সংলাপের সুর আনতেই হবে?
না তো!
অমুকবাবু
সক্কাল সক্কাল অমুকবাবুর সাথে রাস্তায় দেখা। বর্ষীয়ান, মার্ক্স-লেনিন নিবেদিত মস্তিষ্ক, আর জ্যোতি-বুদ্ধ নিবেদিত প্রাণ, অত্যন্ত ভালোমানুষ। আমার হাতটা খপ করে চেপে ধরে বললেন, অ্যাই তুমি নাকি ফ্যাসবুকে লেখোটেখো?
PINK
মহাত্মা
কুহক
দূরত্বই থাক
কিছুটা কুহকে বাঁচুক ভালোবাসা
খাদের ধারে দাঁড়িয়ে
সামনে পথ নেই জানি
তবু কুহকে ঢাকুক পথের নিরাশা
The Road
Where does this journey end?
The answer's known to none...
But don't lock your feet
Halfway on your path,
O, a moment is gone!
Take a step forward,
A step defined...
Leaving the cosy shelter
Of your home, far behind..
Like a venturing swallow
Ditches its nest,
And sails the empty sky,
In an eternal quest.
পথ
শেষমেশ কোথায় যাবে?
কোনোদিন জানতে পারবে না
কেউ পারেনি জানতে
তবু রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পোড়ো না
এক পা এক পা করে এগোও