Skip to main content

বিছানার চাদর

".. মৃত্যুর জন্য তো পথ" ~ রবীন্দ্রনাথ

 

     এমনকি বিছানার চাদরেও তোমার না থাকার গন্ধ লেগেছিল, তুমি কি মেখে এসেছিলে? 

কুয়ো

ছোটোবেলায় একটা স্বভাব ছিল দু পায়ের বুড়ো আঙুলে ভর দিয়ে কুয়োর মধ্যে ঝুঁকে দেখা। কুয়োটা নিয়ে আমার মনে যে কি রহস্য ছিল সে বলার নয়। মাথা ঝোঁকালেই জলে আমার মাথার ছায়া। একটা ঢিল ফেলে দিলেই মাথা দুলে উঠল। মাথার পিছনে কখনও নীল আকাশ, কখনও সাদা-কালো মেঘের আকাশ। রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবতাম, কুয়োর নীচটা কত অবধি গেছে?

তুঁহু মম

যখন হ্যাঁচকা টানে বুকটা আকুপাকু করে, তখন জানলার পাশে দাঁড়িয়ে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। কত কত মেঘ এলো গেলো। আকাশ অনাসক্ত। তার নীল রঙে না সাদা দাগ, না কালো। আকাশ কি মিথ্যুক! কি কপট!

     যখন তার হাসি, চাহনি, কি হাতের স্পর্শ পাওয়ার জন্য উন্মাদ হয়, তখন সে বাথরুমে গিয়ে কলটা খুলে কান্না গিলতে চায়। জলের আওয়াজ তাকে বলে, বাষ্প হ। মেঘ হ। উড়ে যা। সময়কে ধরে রাখিস না শিকলের মত। হাত কাটবে। রক্তারক্তি হবে। জল বড় চতুর।
...

বাসা

পাখি চারদিক থেকে যা পায়, খড়কুটো, একটা প্লাস্টিকের সুতো, একটা দড়ি... সব জমিয়ে সে আবর্জনার স্তূপ বানায় না, বাসা বানায়। সেখানে সে ডিম পাড়ে। বাচ্চাদের বড় করে। তারপর সব ছেড়ে চলে যায়। 

    সেটাই বলছিলাম, মনের মধ্যে আবর্জনার স্তূপ বানিয়ে লাভ কি? অভিমানের পাহাড় বানিয়েই বা কি লাভ? 
...

বিদ্যাবধূ

মহাপ্রভু বললেন, কি চাই জানো? প্রেম। ভালোবাসা। অহংকারের মেঘ যদি সরে গেল, অমনি দেখো, ভালোবাসার চাঁদ উঁকি দিল। তোমায় শান্ত করবে, শীতল করে আনন্দিত করবে, পূর্ণ করবে। 
    কিন্তু কাকে ভালোবাসবো?
...

মোহনা

স্মৃতি নয়, জীবন। সময় তো শুধু বাইরেই সামনের দিকে এগোয়। অন্তরে তো নয়। সেখানে সময় উভমুখী। চাইলেই পিছনে যেতে যেতে কোন ভাঙা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। ফেলে আসা একটা শুকনো পাতা তুলে বলে, মনে পড়ে? 
    আমি বলি, কেন অকারণ ব্যথা জাগাও?
...

সম্পর্ক - মন্থন

সম্পর্ক, সে তো মন্থন। জীবন মন্থন। শুধু কি অমৃতই উঠবে বলো? বিষও উঠবে। ধৈর্য ধরো। বিষকে ধারণ করে মহাদেব। মানে মহাকাল। কালের হাতে ধীরে ধীরে ছেড়ে দাও বিষ। নিজে ধারণ করতে যেও না। নিজে হজম করতে যেও না। শেষ হয়ে যাবে। সে বরং সময়ের হাতে থাক। বিন্দু বিন্দু করে দিয়ে দাও। অল্প অল্প করে নির্ভার হও।
...

ধুনুচি

মন তো, ধুনুচি তো নয়, যে এর ওর দুষ্টুমির ছোবড়া মনে করে করে আনবে আর অভিমানের,আক্রোশের কর্পূর দিয়ে রাতদিন ধিকিধিকি জ্বালিয়ে রাখবে। তারপর সারা ঘরদোর ধোঁয়া, ধোঁয়া। ধরতে গেলে ছ্যাঁকা। ধুর ধুর, ওভাবে হয় নাকি! 

    পোড়াতে হলে অভিমান পুড়ুক। পাঁচ কান হওয়া কথা, মনের দীঘিতে ডুবে মরুক। দশ কান হওয়া নিন্দা নিরুদ্দেশ হোক আর নতুন কোনো কান না পেয়ে। 
...

বই

তো হল কি, একদিন সব বই অক্ষরহীন ছাপা হল। বাজারেও এলো। কেউ কিনল। আর কেউ কিনল না।
যারা কিনল না, তারা জিজ্ঞাসা করল, কি লেখা আছে বইতে?
যারা বই কিনেছিল তারা বলল, আরে দারুণ লেখা। কি ভাষা। কি বর্ণনা। কি ভাব। কি ভয়। কি কান্না। কি জ্ঞান। কি পরিণতি।

অন্যমনস্ক

এলোপাথাড়ি ভাবনা। অন্যমনস্ক ভাবনা। এলোমেলো ভাবনা। সব এক কথা। লাগাম নেই। কে পরাবে লাগাম? বলি হাত-পা-মুখ
কিছু আছে প্রাণীটার, যে তাকে লাগাম পরাই? সে যাঁতাকলে পিষছে আমার মাথাটা।
এক-এক সময় মনে হয় মাথা তো না, যেন গ্রাইণ্ডার মেশিন। সব গুঁড়ো করে ঘোঁট পাকিয়ে দিচ্ছে।
Subscribe to চিন্তন