এইবার?
সৌরভ ভট্টাচার্য
16 December 2021
বার কয়েকবার উঠে আবার বসে পড়লেন সুধীরবাবু। পাঁশকুড়া লোকাল এই নিয়ে তিনটে ছেড়ে দিলেন। পেটটায় অস্বস্তি হচ্ছে। সাহস পাচ্ছেন না। এদিকে ঠাণ্ডাও যা পড়েছে, ইচ্ছাও করছে না। তবে? চা, কফি কিছুর দিকে তাকাচ্ছেনও না। জীবনে অনেক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া কেন যে এত কঠিন হয়ে পড়ে? আগে এই সময়ে অনেকবার ঈশ্বরকে ডেকেছেন। লাভ হয় না খুব একটা। যার যখন ভূমিষ্ঠ হবার, সে হবেই।
প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ভাবা
সৌরভ ভট্টাচার্য
16 December 2021
রবীন্দ্রনাথ কোন পিতার কথা বলেছিলেন? রবীন্দ্রনাথ সারা জীবন কটা মন্দির সংস্কার করেছিলেন? রবীন্দ্রনাথ কি কোথাও বলেছিলেন, প্রাচীন মন্দিরকে অত্যাধুনিক করলেই ভারতের উন্নতি? রবীন্দ্রনাথ কি আদৌ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মে নিজেকে রেখেছিলেন? তবে "মানুষের ধর্ম" কার লেখা? তবে "দীনদান" কার লেখা?
ভুলেই গেল
সৌরভ ভট্টাচার্য
15 December 2021
অমলেশ বলেছিল, যেখানে সকালে পাখির ডাক শোনা যায় না, সেখানে সে কোনোদিন থাকবে না। থাকেওনি অমলেশ। বৈঁচি থেকে আরো ভিতরে একটা গ্রামে অমলেশ সারাটা জীবন কাটিয়ে দিল।
রাতের দোকান
সৌরভ ভট্টাচার্য
14 December 2021
এত রাতে দোকান খোলা রাখেন?
রাখতেই হয়। ওই যে মোড়টা দেখছেন, বড় লাইটটা জ্বলছে, ওর থেকে কয়েক মিটার গেলেই শ্মশান। রাতে কোনো দোকান খোলা থাকে না। শ্মশানযাত্রীরা চা'টা খেতে সব এখানে। সবাই জানে বলাইদার দোকান সারারাত খোলা। বাইকে বসেই চা খাবেন? ভিতরে আসুন।
রাখতেই হয়। ওই যে মোড়টা দেখছেন, বড় লাইটটা জ্বলছে, ওর থেকে কয়েক মিটার গেলেই শ্মশান। রাতে কোনো দোকান খোলা থাকে না। শ্মশানযাত্রীরা চা'টা খেতে সব এখানে। সবাই জানে বলাইদার দোকান সারারাত খোলা। বাইকে বসেই চা খাবেন? ভিতরে আসুন।
কবীর কবীর
সৌরভ ভট্টাচার্য
14 December 2021
সন্ত কবীর অন্তিমকালে কাশী ত্যাগ করে মঘরে গিয়ে দেহত্যাগ করলেন। কাশীতে দেহত্যাগ করলেই মুক্তি - এ ভ্রম। কবীর বললেন। নিজের ধর্ম, নিজের নীতি, নিজের সত্যনিষ্ঠা নিজের দায়িত্বে। কবীর আমাদের ধর্মে সাবালক হতে বললেন। আমরা নাবালাক থেকে যেতে চাইলাম। আমরা অনন্ত, নিরাকার ঈশ্বরকে হৃদয়ে অনুভব করতে চাইলাম না। আমরা অবতার বানালাম। আমরা একজনকে দেখিয়ে বললাম, এই সে। একে ধরে থাকলেই সব হবে। কবীর বললেন, অনুপ্রেরণা ভালো। সে তুমি নিতেই পারো কারোর কাছ থেকে। কিন্তু তাকেই সব ধরে বসে থাকলে হবে কি করে?
পাঁজর
সৌরভ ভট্টাচার্য
13 December 2021
ঠিক কোথায় খেইটা হারিয়ে গেল। রমেশ বুঝলই না। পুরো জীবনটাই যেন হুস করে এক ভাঁড় চায়ের মত ফুরিয়ে গেল। মানুষ কতবার খোলস ত্যাগ করে। নতুন মানুষ হয়। বারবার নতুন হয়। কিন্তু ভালো লাগে কি? আগের বারের খাঁচার জন্য মন খারাপ করে না?
স্বপ্ন
সৌরভ ভট্টাচার্য
11 December 2021
বাবা তুমি কোনোদিন সমুদ্দুরের ওদিকে গেছো?
বাবা ছেলের মুখের দিকে একবার তাকিয়ে, জালটা গোটাতে গোটাতে বলল, না বাবা।
ছেলে বলল, তবে রোজ রোজ সমুদ্দুরে নৌকা নিয়ে কেন যাও?
বাবা বলল, মাছ ধরতে। মাছ বিক্রি না করলে আমাদের যে না খেয়ে থাকতে হবে।
ছেলে বলল, আমি একদিন তোমার নৌকাটা নিয়ে ওপার থেকে ঘুরে আসব। বড় হই। তুমি দেবে তো তোমার নৌকাটা আমায়?
বাবা ছেলের মুখের দিকে একবার তাকিয়ে, জালটা গোটাতে গোটাতে বলল, না বাবা।
ছেলে বলল, তবে রোজ রোজ সমুদ্দুরে নৌকা নিয়ে কেন যাও?
বাবা বলল, মাছ ধরতে। মাছ বিক্রি না করলে আমাদের যে না খেয়ে থাকতে হবে।
ছেলে বলল, আমি একদিন তোমার নৌকাটা নিয়ে ওপার থেকে ঘুরে আসব। বড় হই। তুমি দেবে তো তোমার নৌকাটা আমায়?
মায়ের ইচ্ছে
সৌরভ ভট্টাচার্য
10 December 2021
অর্জুন বাড়ুজ্জে আচমন করে সবে কোশাকুশিতে গঙ্গাজল ঢেলেছে, অমনি মা কাটা মুণ্ডুটা বেদীতে নামিয়ে এক চড় কষালেন অর্জুনের গালে।
অর্জুন গালে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, কি অন্যায় হল মা? আমি কি মন্ত্র কিছু ভুল পড়লাম....
মা বললেন, না বুঝে তো সেই ছোটোবেলা থেকেই মন্ত্র পড়ে আসছিস... সে দোষ আমি ধরিও না.. তাছাড়া আজকাল স্বর্গের কচি দেবতারাও ধাতুরূপ, শব্দরূপ মনে রাখতে পারে না, সব সারাদিন নয় হিন্দী, নয় ইংরাজিতে কথা বলে যাচ্ছে। মায় বাংলাটাও বলে না। সে জন্যে মারিনি..
অর্জুন গালে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, কি অন্যায় হল মা? আমি কি মন্ত্র কিছু ভুল পড়লাম....
মা বললেন, না বুঝে তো সেই ছোটোবেলা থেকেই মন্ত্র পড়ে আসছিস... সে দোষ আমি ধরিও না.. তাছাড়া আজকাল স্বর্গের কচি দেবতারাও ধাতুরূপ, শব্দরূপ মনে রাখতে পারে না, সব সারাদিন নয় হিন্দী, নয় ইংরাজিতে কথা বলে যাচ্ছে। মায় বাংলাটাও বলে না। সে জন্যে মারিনি..
ক্যাডবেরি
সৌরভ ভট্টাচার্য
9 December 2021
ধুম করে আলোটা নিভিয়ে চলে এলে যে?
দিলীপ কম্বলের ভিতর থেকে বলল।
রত্না শুতে গিয়েও বসে পড়ে বলল, মানে, আলো জ্বালিয়ে শোবে নাকি। যত বুড়ো হচ্ছ, তত ভীমরতি ধরছে...
দিলীপ উঠে বসে বলল, বাহাত্তুরেও বলতে পারো, তিয়াত্তর তো হল না?
রত্না বলল, শোনো এই মাঝরাতে আমার খেজুরে আলাপ করার কোনো ইচ্ছা নেই, শোও...
দিলীপ কম্বলের ভিতর থেকে বলল।
রত্না শুতে গিয়েও বসে পড়ে বলল, মানে, আলো জ্বালিয়ে শোবে নাকি। যত বুড়ো হচ্ছ, তত ভীমরতি ধরছে...
দিলীপ উঠে বসে বলল, বাহাত্তুরেও বলতে পারো, তিয়াত্তর তো হল না?
রত্না বলল, শোনো এই মাঝরাতে আমার খেজুরে আলাপ করার কোনো ইচ্ছা নেই, শোও...
বোকা কোথাকার!
সৌরভ ভট্টাচার্য
8 December 2021
ঘুঁটেগুলো তুলে নিয়ে ফিরতে যাবে, হঠাৎ গাছের উপর থেকে কেউ যেন বলল, দুটো দিয়ে যা না রে, ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছি, একটু আগুন জ্বেলে বসি।
রমার ঠাকুমার তো দাঁত কপাটি লাগার জোগাড়। "রাম রাম" বলতে আবার দু পা এগিয়েছে, অমনি গাছ থেকে আবার সে বলল, রাম নামে পালাবো আমি অমন পাপী ভূত না রে, ভ্যাকেন্সি নেই উপরে তাই মাঝখানে রিজার্ভে আছি। বডি পেলেই ঢুকে যাব।
মানুষ কি তাই
সৌরভ ভট্টাচার্য
8 December 2021
সবাই এক এক সময় পালিয়ে যেতে চায়
জঙ্গলে, মরুভূমিতে, সমুদ্রের ধারে, পাহাড়ে নিজের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে একা হতে চায় সবাই তা সে চায়
জঙ্গলে, মরুভূমিতে, সমুদ্রের ধারে, পাহাড়ে নিজের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে একা হতে চায় সবাই তা সে চায়
হঠাৎ হাওয়ায় উড়ে এলো
সৌরভ ভট্টাচার্য
7 December 2021
হঠাৎ হাওয়ায় উড়ে এলো
একগুচ্ছ শুকনো পাতা
...
একগুচ্ছ শুকনো পাতা
...
আনুগত্য
সৌরভ ভট্টাচার্য
7 December 2021
সত্যের আনুগত্য শেখাবেন, না ব্যক্তির আনুগত্য শেখাবেন - এ সিদ্ধান্তটা কিন্তু আপনাকে আপনার সন্তানের ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বাবাকে কি মাকে সন্তুষ্ট করতে পারলেই যদি সন্তানের সাত খুন মাফ হয়ে যায়, তবে আপনি যে ওর কি সর্বনাশ করছেন সে এখনই হয় তো স্পষ্ট বুঝতে পারবেন না, না তো সে নিজেও বুঝে উঠতে পারবে।
বাবাকে কি মাকে সন্তুষ্ট করতে পারলেই যদি সন্তানের সাত খুন মাফ হয়ে যায়, তবে আপনি যে ওর কি সর্বনাশ করছেন সে এখনই হয় তো স্পষ্ট বুঝতে পারবেন না, না তো সে নিজেও বুঝে উঠতে পারবে।
যার মধ্যে ডুবে গিয়ে
সৌরভ ভট্টাচার্য
7 December 2021
যার মধ্যে ডুবে গিয়ে ঘুমে
নিশ্চিন্তে হারালে নিজেকে
সেও তুমি
নিশ্চিন্তে হারালে নিজেকে
সেও তুমি
ছোরি
সৌরভ ভট্টাচার্য
6 December 2021
ছোরি, আমাজন প্রাইমে বেশ কিছুদিন ধরে দেখছিলাম দিয়েছে। ইচ্ছা করছিল না দেখতে, ভূতের সিনেমা আর কি দেখব এখন। কদিন আগে মামু ফোন করে বলল, জানো মামু ছোরি দেখলাম। সে সদ্য ইলেভেনে উঠেছে, আমি ওই বয়সে নিজেকে নিয়ে গিয়ে বললাম, তবে তো তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস, একা একা ভূতের সিনেমা দেখে ফেললি? আমি তো ভয়ে দেখতেই পারছি না।
মামু বলল, হ্যাঁ ভয়ের আছে, তবে সিনেমাটা ঠিক ভয়ের বা ভূতের না, একটা সোশ্যাল মেসেজ আছে, দেখো।
মামু বলল, হ্যাঁ ভয়ের আছে, তবে সিনেমাটা ঠিক ভয়ের বা ভূতের না, একটা সোশ্যাল মেসেজ আছে, দেখো।
পুরুষোত্তম আগরওয়াল ও জাভেদ আখতার
সৌরভ ভট্টাচার্য
6 December 2021
নতুন বাড়িতে একটা সমস্যা হল। জল ঢুকে বাড়ির দেওয়াল খারাপ করে দিল।
বাড়ির মালিক বলল, ভাই এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না।
এখন ইঞ্জিনিয়ার বেশ চালাক মানুষ, সে হাজার একটা কারণ দেখিয়ে বলল, স্যার, এটা পসিবল, এটা অসম্ভব কিছু নয়, এটা তো হতেই পারে।
বাড়ির মালিক বলল, ভাই এরকম তো হওয়ার কথা ছিল না।
এখন ইঞ্জিনিয়ার বেশ চালাক মানুষ, সে হাজার একটা কারণ দেখিয়ে বলল, স্যার, এটা পসিবল, এটা অসম্ভব কিছু নয়, এটা তো হতেই পারে।
সেলাই তো পডবে, কিন্তু ক'টা?
সৌরভ ভট্টাচার্য
5 December 2021
ঘরটা খুব বড় না, খুব ছোটও না। একটা খাট। খাটে একজন বয়স্ক মানুষ আধশোয়া। জেগে আছেন। দৃষ্টি ছাদের দিকে। পাখাটা বন্ধ। সারাটা ঘর খুব গোছানো নয়, আবার আগোছালোও নয়। চারদিকে তাকিয়েই বোঝা যায় যে দীর্ঘদিন অসুস্থ মানুষটা। একজন মহিলা, পঞ্চাশের বেশিই বয়েস হবে, উনি কাপে কিছু একটা গুলছেন, ধোঁয়া উঠছে জল থেকে, মানে জলটা গরমই হবে। দেওয়াল ঘড়িটা দেখা যাচ্ছে, সকাল সাড়ে ন’টা। যিনি বিছানায় শুয়ে, ওর নাম অনন্ত; যিনি দাঁড়িয়ে, ওর নাম বিশাখা।
তাদেরও যাওয়ার কথা ছিল
সৌরভ ভট্টাচার্য
5 December 2021
"শুবি না? এই শালা, এদিকে আয়, এই... আরে এই... কাঁথাটা ফেললি কেন?"
একটা ঘর। কাঠের পাতলা পাটাতনের দেওয়াল। শীতের হাওয়া, বর্ষার জল, কিছুই বাধা মানে না। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রেললাইন। ট্রেনের কাঁপুনিতে দেওয়ালে ঝোলানো আয়নায় সারাঘরের দুলুনি দেখা যায়।
শীতের সন্ধ্যে। দুটো কাঁথার তলায় শুয়ে তিন চারটে রাস্তার কুকুর। প্রমাণ সাইজের কুকুর। ষাটোর্ধ মানুষটা একটা লুঙ্গি কোমরের কাছে জড়িয়ে, হাঁটু অবধি তুলে, মেঝেতে মদের বোতল নিয়ে বসে। ঘরে টিমটিম করছে হলুদ ডুমের আলো।
একটা ঘর। কাঠের পাতলা পাটাতনের দেওয়াল। শীতের হাওয়া, বর্ষার জল, কিছুই বাধা মানে না। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রেললাইন। ট্রেনের কাঁপুনিতে দেওয়ালে ঝোলানো আয়নায় সারাঘরের দুলুনি দেখা যায়।
শীতের সন্ধ্যে। দুটো কাঁথার তলায় শুয়ে তিন চারটে রাস্তার কুকুর। প্রমাণ সাইজের কুকুর। ষাটোর্ধ মানুষটা একটা লুঙ্গি কোমরের কাছে জড়িয়ে, হাঁটু অবধি তুলে, মেঝেতে মদের বোতল নিয়ে বসে। ঘরে টিমটিম করছে হলুদ ডুমের আলো।
সানাই
সৌরভ ভট্টাচার্য
4 December 2021
সানাই তাকে পেয়ে হারিয়ে কাঁদে? না, তাকে না পাওয়ার যন্ত্রণায় কাঁদে?
এ দ্বন্দ্ব আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মনোরমা। যখনই সানাই বেজেছে, বুকে কান্না উঠেছে। কিন্তু কেন? কাকে সে চায়? সে মুখটা স্পষ্ট নয়। বিয়াল্লিশ বছর আগে যখন পুরোহিত মন্ত্র পড়ছিল, চারদিক হুল্লোড়, সানাই বাজছিল মনোরমাকে কাঁদিয়ে একা একা, গোপনে। মনোরমা নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছে, কে সে? কার জন্য এমন বুক হাহাকার কান্না তার?
মন উত্তর দেয়নি স্পষ্ট করে। শুধু বলেছে, এ সে নয়, যার হাতের উপর হাত, এ নয় সে।
এ দ্বন্দ্ব আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মনোরমা। যখনই সানাই বেজেছে, বুকে কান্না উঠেছে। কিন্তু কেন? কাকে সে চায়? সে মুখটা স্পষ্ট নয়। বিয়াল্লিশ বছর আগে যখন পুরোহিত মন্ত্র পড়ছিল, চারদিক হুল্লোড়, সানাই বাজছিল মনোরমাকে কাঁদিয়ে একা একা, গোপনে। মনোরমা নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছে, কে সে? কার জন্য এমন বুক হাহাকার কান্না তার?
মন উত্তর দেয়নি স্পষ্ট করে। শুধু বলেছে, এ সে নয়, যার হাতের উপর হাত, এ নয় সে।
সেদিনের আকাশ ভাঙা মেঘ
সৌরভ ভট্টাচার্য
2 December 2021
জগন্নাথ মন্দিরে ঢুকে বুড়ি দুটো পেঁপে বার করে পুরোহিতের হাতে দিয়ে বলল, একটু ঝোল রেঁধে খাইয়ো তো, আমায় কাল স্বপ্নে বলল পেটটা ভালো যাচ্ছে না, তোর বাগানে তো ভালোই পেঁপে হয়েছে, আমায় দুটো দিয়ে যাস না।
পুরোহিত বলল, তোমার বাড়ি কোথায়?
বুড়ি বলল, খড়দা...
পুরোহিত বলল, তা তুমি নিজে রেঁধে আনলেই পারতে..
পুরোহিত বলল, তোমার বাড়ি কোথায়?
বুড়ি বলল, খড়দা...
পুরোহিত বলল, তা তুমি নিজে রেঁধে আনলেই পারতে..
তবে দাঁড়ালোটা কি?
সৌরভ ভট্টাচার্য
2 December 2021
তবে দাঁড়ালোটা কি? ওমিক্রনে ভয় পাওয়ার যোগ্যতা আমার আছে কি নেই?
সেখানের ডাক্তারেরা বলছেন, ভয় পাবেন না, আপাতত রোগের প্রকোপ তেমন কিছু না। হু বলছে, প্যানিক করবেন না, সাবধানে থাকবেন, এই বলেই তেদ্রোস কাকা আবার চশমাটা উপরে ঠেলে গম্ভীর মুখে বলল, সামনে পৃথিবীর খুব দুর্দিন। হে হে, সে বলতে কি আর তেদ্রোসকে লাগে? কথা হচ্ছে ব্যাটা কেমন জানি একটা ইনফরমেশান আতঙ্কবাদী হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা বলে তার যেন দুটো মানে হয়, এ যেন রায়গুণাকর ভরতচন্দ্রের কবিতা। "কোন গুণ নাই তার কপালে আগুন"। দুটো মানে হয় না? আমাদের বাংলার স্যারেরা ধরে ধরে বুঝিয়েছিলেন তো। কাব্য চর্চা থাক। ভাইরাস চর্চায় আসা যাক।
তো মোদ্দা কথাটা হল আপাতত যা জানা গেছে, তা হল ---
সেখানের ডাক্তারেরা বলছেন, ভয় পাবেন না, আপাতত রোগের প্রকোপ তেমন কিছু না। হু বলছে, প্যানিক করবেন না, সাবধানে থাকবেন, এই বলেই তেদ্রোস কাকা আবার চশমাটা উপরে ঠেলে গম্ভীর মুখে বলল, সামনে পৃথিবীর খুব দুর্দিন। হে হে, সে বলতে কি আর তেদ্রোসকে লাগে? কথা হচ্ছে ব্যাটা কেমন জানি একটা ইনফরমেশান আতঙ্কবাদী হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা বলে তার যেন দুটো মানে হয়, এ যেন রায়গুণাকর ভরতচন্দ্রের কবিতা। "কোন গুণ নাই তার কপালে আগুন"। দুটো মানে হয় না? আমাদের বাংলার স্যারেরা ধরে ধরে বুঝিয়েছিলেন তো। কাব্য চর্চা থাক। ভাইরাস চর্চায় আসা যাক।
তো মোদ্দা কথাটা হল আপাতত যা জানা গেছে, তা হল ---
তপস্বীনী কন্যা
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 December 2021
সংসারে সবাই তো আর অতশত কপাল করে জন্মায় না যে একটু ফুর্তি করে, গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াবে। না, মানে, পড়াশোনার গল্প মানেই তো সেই এক বিদ্যাসাগর মশায় স্ট্রিটলাইটের তলায় পড়েছিলেন, টিকি বেঁধে শুতেন এই সব কথা খালি। সে সব পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পুরোনো কালের কথা। কিন্তু এই যে একজন মানুষ, যার কিনা খোদ মাসির বিয়ে, সে কিনা হাতে মেহেন্দি লাগাতে লাগাতে পড়াশোনা করছে, সেও আবার অনলাইনে, মানে আরকি পড়াশোনা করতে করতে মেহেন্দি লাগাচ্ছে, এমনটা কে কবে দেখেছে? পায়ে আলতা, হাতে মেহেন্দি, সামনে মোবাইল স্ট্যাণ্ডে মোবাইল, মোবাইলের স্ক্রীনে দিদিমণি, চারদিকে আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশীর হইচই, এর মধ্যে কিনা মেয়েটা পড়েই যাচ্ছে, পড়েই যাচ্ছে, পড়েই যাচ্ছে
জাগতে রহো
সৌরভ ভট্টাচার্য
1 December 2021
গন্তব্যে যেতে হবে। নদী উত্তাল। তায় রাতের অন্ধকার। নৌকায় ছয়জন যাত্রী।
ইনস্টিংক্ট বলল, আমার স্থির বিশ্বাস দক্ষিণ দিকে আর চোদ্দোবার দাঁড়া টানলেই পৌঁছিয়ে যাব। আমার গাট ফিলিংস।
ইন্টেলিজেন্স বলল, চুপ কর আহাম্মক, তোর এই গাট ফিলিংস এর ঠেলায় কতবার ডুবতে ডুবতে বেঁচেছি আমরা। আমার হিসাব বলছে দক্ষিণ দিকে আরো মাইল তিনেক গিয়ে একটা বাঁক আসবে, যা পড়েছিলাম, তারপর হয় তো পশ্চিমের শাখাটা ধরে এগোতে হবে।
ইনস্টিংক্ট বলল, আমার স্থির বিশ্বাস দক্ষিণ দিকে আর চোদ্দোবার দাঁড়া টানলেই পৌঁছিয়ে যাব। আমার গাট ফিলিংস।
ইন্টেলিজেন্স বলল, চুপ কর আহাম্মক, তোর এই গাট ফিলিংস এর ঠেলায় কতবার ডুবতে ডুবতে বেঁচেছি আমরা। আমার হিসাব বলছে দক্ষিণ দিকে আরো মাইল তিনেক গিয়ে একটা বাঁক আসবে, যা পড়েছিলাম, তারপর হয় তো পশ্চিমের শাখাটা ধরে এগোতে হবে।