Skip to main content

নতুন

ভালোবাসো 
তবে সবটুকু মন দিয়ে নয়


কিছুটা থাক
    নিজের জন্য


সে মনেও সে-ও আসুক
বন্ধু হয়ে
    প্রেম হয়ে নয় 


যদি তা পারো
ভালোবাসা কোনোদিন দমবন্ধ ঘর হবে না
খোলামেলা বাতাসে
    পরিচয় হবে নিত্যনতুন 
            নতুন নামে
                   নতুন ডাক নিয়ে

কান্না ধন

গোঁসাই বলল, দেখ, মহাপ্রভু পেয়েছিলেন ডেকে, রামকৃষ্ণদেব পেয়েছেন কেঁদে। উনি তাই বলতেন না, কাঁদতে পারো? লোকে মাগ ছেলের জন্যে ঘটি ঘটি কাঁদছে। ঈশ্বরের জন্য, ভগবানের জন্য আর কে কাঁদছে বলো? 

     গোঁসাই বলে চলল, ঠাকুরকে যে ঠিক ঠিক ডেকেছে, ঠাকুর তাকে কাঁদিয়েছেন। 

     চমকে উঠে বললাম, একি বলো গোঁসাই… এ তো ভয়ের কথা….
...

জিপিএস 

মানুষের সব চাইতে বড় গুরু কে? তার শুভবুদ্ধি। শুভবুদ্ধি, ভালোবাসা, অনুকম্পা, কৃপা, উন্মুক্তমনা, সহজতা… এ সব সমার্থক শব্দ। শুভবুদ্ধি থাকলেই আত্মনিয়ন্ত্রণ আসবে। আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকলেই সুখ শান্তি আসবে। আত্মনিয়ন্ত্রণ মানে কোথায় থামতে হবে জানা। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মেরেছে মানে সে থামতে পারেনি। এই তো! 

দাম

মানুষটাকে ঘরে রাখা গেল না
কারণ প্রায় উপার্জনহীন
অথর্ব, জীর্ণ শরীর

সরকারি হাস্পাতালও রাখতে চাইল না
কারণ বেখেয়ালি মানুষটা
হুস করে 
  একমাত্র সম্বল
    প্রাণবায়ুটা ফেলল হারিয়ে 

আগুন নিল
দাহ করার দাম নিয়ে,
আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব 
    দিল সে মূল্য

নীরবতায়

যেদিন তোমার ভাষায়
   আমার ভাবনাকে পেলাম

সেদিন জেনেছিলাম 
   তুমি আমার আপন 

যেদিন তোমার নীরবতায়
   আমার নীরবতাকে পেলাম

সেদিন বুঝলাম 
    আমি তুমিই

দ্বন্দ্বানন্দ

তুমি বলো ধর্ম তোমায় শান্তি দেয়। তোমার বাইরে ভিতরে এত বিরোধ, এত দ্বন্দ্ব। তোমার ধর্ম তোমায় এত যে দ্বন্দ্ব বুঝতে দেয়? নাকি সব দ্বন্দ্ব-বিরোধে প্রলেপ দেয়? 

     দ্বন্দ্ব নিয়ে শান্তিতে আছো। একি হয়? এও কি হয়? দ্বন্দ্ব নিয়ে ঈশ্বরকে ডাকো। ঈশ্বর যদি শুনে ফেলেন! ধরো তুমি নির্দ্বন্দ্ব হলে, কি হবে? ধরো ধরো সত্যি সত্যিই শান্তি পেলে। পালিয়ে গিয়ে, আড়াল করে, ভুলে গিয়ে খুচরো শান্তি না গো না, সত্যিকারের শান্তি পেলে। কি হবে? বুঝতে পারছো কি সর্বনাশটাই হবে তোমার? দ্বন্দ্ব গেলে সব যাবে। তোমার মুঠো খুলে জমানো যা কিছু "আমি - আমার" গণ্ডী ছাড়িয়ে ভেসে যাবে। সব যাবে সব যাবে। স্বপ্নগুলো ছাইকাদা মেখে ধুলোয় কাদায় গড়াগড়ি খাবে। সব্বনাশ! সইতে পারবে! দ্বন্দ্বহীন জগত তোমার আগুপিছু ঘুরে বেড়াবে। বাইরে ভিতর, তোমার আমার, সব হারিয়ে ঘোল খাওয়াবে! কে গুরু! কে ঈশ্বর! কি শাস্ত্র! কি মত! কি পথ! সব গুলিয়ে ঘেঁটে যাবে। দলাদলি, স্বার্থসুখ, সব ঘেঁটে গিয়ে বেড়া খুলে গিয়ে মাঠ হয়ে যাবে! সব্বনাশ হবে! সব্বনাশ হবে! 
...

তুঁহু মম

যখন হ্যাঁচকা টানে বুকটা আকুপাকু করে, তখন জানলার পাশে দাঁড়িয়ে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। কত কত মেঘ এলো গেলো। আকাশ অনাসক্ত। তার নীল রঙে না সাদা দাগ, না কালো। আকাশ কি মিথ্যুক! কি কপট!

     যখন তার হাসি, চাহনি, কি হাতের স্পর্শ পাওয়ার জন্য উন্মাদ হয়, তখন সে বাথরুমে গিয়ে কলটা খুলে কান্না গিলতে চায়। জলের আওয়াজ তাকে বলে, বাষ্প হ। মেঘ হ। উড়ে যা। সময়কে ধরে রাখিস না শিকলের মত। হাত কাটবে। রক্তারক্তি হবে। জল বড় চতুর।
...

তুমি জানতে

তোমার হাত পুড়েছে
কারণ তুমি আগুন জ্বালতে গিয়েছিলে

তোমার হাতে কামড় পড়েছে
কারণ তুমি শিকল খুলতে গিয়েছিলে
... 

রথ

স্থির রোদ। গাছের ছায়া লুটোপুটি খাচ্ছে মাটিতে। রোদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা। মাটি কোল পেতে বসে। 

     মাটি জানে খানিকবাদে রোদ থাকবে না, ছায়া থাকবে না। গাছটাও একদিন থাকবে না। সে থেকে যাবে। 

     গোঁসাই বসে গাছের তলায়। চাঁদের আলোয় ছায়ারা খেলছে। গোঁসাই এ ছায়া রোদের আলোতেও দেখেছে। চাঁদের আলোয় মায়া বেশি। সত্যে আর কল্পনায় মেশানো যে! রোদের আলো বড্ড স্পষ্ট। জ্ঞানের অহংকারের মত। জ্ঞানের চেয়ে জ্ঞানী বাজে বেশি। চাঁদের আলো অনুভবীর। সে অনুভবী জ্ঞানী রসের খবর জানে না শুধু, সে জ্ঞানী রসিকও। রসের সমঝদার!
...

গ্লানি

কামনাকে জাগাতে পারো
আমার ভালোবাসাকে বাঁ হাতে দূরে সরিয়ে রেখে

শীতল রাত
যেন ক্লান্ত পথিক তুমি
আগুন জ্বেলেছ
নিজেকে তপ্ত করে নেবে বলে 

তোমার উন্মাদ সুখযাপন দেখছি
নিজের শরীর থেকে কয়েক যোজন দূরে দাঁড়িয়ে 
কি অসীম নিঃসঙ্গতায়
কি অসহায়তায়
নিজের ভালোবাসাকে
চক্রব্যূহে রেখে 

Subscribe to