যখন হ্যাঁচকা টানে বুকটা আকুপাকু করে, তখন জানলার পাশে দাঁড়িয়ে সে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। কত কত মেঘ এলো গেলো। আকাশ অনাসক্ত। তার নীল রঙে না সাদা দাগ, না কালো। আকাশ কি মিথ্যুক! কি কপট!
যখন তার হাসি, চাহনি, কি হাতের স্পর্শ পাওয়ার জন্য উন্মাদ হয়, তখন সে বাথরুমে গিয়ে কলটা খুলে কান্না গিলতে চায়। জলের আওয়াজ তাকে বলে, বাষ্প হ। মেঘ হ। উড়ে যা। সময়কে ধরে রাখিস না শিকলের মত। হাত কাটবে। রক্তারক্তি হবে। জল বড় চতুর।
যখন শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে তার, মনে হয় একটা চুমু ছাড়া ফুসফুসে আর এক বিন্দু বাতাস আসতে পারবে না। সে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠে যায়। কার্নিশের কাছে এসে দাঁড়ায়। এতটা উঁচুতে সে। যেন লাফ দিলেই দিতে পারে। মৃত্যু শান্ত বেড়ালের মত তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। ডাকলেই যেন কোলে এসে বসবে। একটা চুমুর তৃষ্ণা এমন মৃত্যুর কাছাকাছি এনে দেয় তাকে। নিষ্ঠুর।
এরপর কখন জানি নিজে থেকে সে শান্ত হয়। যেমন সব চিতাই এক সময় আগুন থেকে ছাই হয়। নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে আবার বাইরে নিয়ে আসে। মৃত্যু, আকাশ, জলের আওয়াজ পিঁপড়ের সারির মত তার মাথা বুক হেঁটে বেড়ায়। সে অস্বস্তিকে বলে, যা! এখন না!
এ সবই সে চাইলেই থামাতে পারে। বা হয় তো পারে না। পারে, না পারে না? এই দ্বন্দ্বে তার দিন কাটে, রাত কাটে। সে নিজেকে বলে, আমি আর ফিরব না, আমি দূরে চলে যাব, বহুদূরে….
তার মন দূরত্বের দূর বাড়াতে বাড়াতে কখন দেখে আবার তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সে আকাশকে ডাকে, আয়। জলকে বলে, আয়। শান্তচোখ বেড়ালটাকে বলে, আয়। তার বুকে বাজে সুর…
মরণ রে, তুঁহু মম শ্যামসমান...
না "শ্যামসমান" না.... সাগর সমান.... শুধু নোনা জল আর নোনা বাতাস.... তাতে মিশে দিগন্তলীন নেশা.... তুমি।
(ছবি - নেট)