জগৎমে ঝুঠহি দেখি প্রীত
গোলাপের রঙে প্রলাপ
ছেলেটার ফুসফুস থেকে হাওয়া বেরিয়ে ভোকাল কর্ড কাঁপিয়ে কিছু শব্দ তৈরী করছে। সন্ধ্যের নির্জন রাস্তা। শব্দগুলো হাওয়ায় ভেসে ভেসে মেয়েটার কুন্তল সরিয়ে কানের ভিতরে দিয়ে পর্দা কাঁপিয়ে দিচ্ছে। মেয়েটার হাতে ছেলেটার এক হাত। হরমোনে স্নায়ুতে আলুথালু প্রেম। ঘাম মানে প্রেম। দ্রুত শ্বাস মানে প্রেম।
তুমি মানে
তুমি মানে
একফালি অপেক্ষায় এ ঘর ও ঘর করা
তুমি মানে
একঝলক সুখের বুকে হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়া
তুমি মানে
বেশ কয়েক ঘন্টা এক লহমায় ফুরিয়ে ফেলা
তুমি মানে
তুমি ফিরে গেলে, তোমাতে আমায় ঘেরার পালা
তুমি মানে
এক আকাশ শূন্যতাকে সুরে ঢাকার চেষ্টা
তুমি মানে
তোমার তুমিতে আমার আমির তেষ্টা
এক সন্ধ্যা দক্ষিণেশ্বর
দক্ষিণেশ্বরের নাটমন্দির। সন্ধ্যেবেলা। কালীকীর্ত্তন চলছে। গোল হয়ে বসে ভক্তবৃন্দ। কারোর চোখ বন্ধ, কারোর আধবোজা, কারোর খোলা। সংসারের বাইরে মনটাকে এনে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা যেন কোথায়। কত ক্ষোভ, কত জ্বালা, কত অসহায়তা, কত অভিমান - সব ভোলো। গাও মন গাও।
কেনার কথা মনে থাকে না
বয়স্কা ভদ্রমহিলা রোজ রাতে ফোনটা মাথার কাছে নিয়ে শোন। চার্জারটা হারিয়ে গেছে বহুদিন। কেনার কথা মনে থাকে না।
সত্যের গায়ে জমে না মেদ
যেখানে নাকি অনেক নীতি, উচ্চাদর্শ
মহাপুরুষের গুষ্ঠিবাস
তারও নীচে জমছে ক্লেদ
তাদের কাছে যাচ্ছে যারা সরল মনে
ঠকছে তারা
এসব দেখে দেখে জমছে খেদ
বালি
দু'হাতের থেকে সময়গুলো বালির মত ঝরে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। বালি? না বালি তো তবু দু-এক কণা আটকে থাকে হাতের ভাঁজে। হাওয়ার মত উড়ে উড়ে যাচ্ছে সময়।
নাস্তিক অন্তর্যামী
যত ভয় ভাবনা ব্যর্থতা অক্ষমতা
মনের এ কোণ, সে কোণ থেকে
সব ঝেঁটিয়ে -
ঝেঁটিয়ে ঝেঁটিয়ে কেঁদে কঁকিয়ে
এনে ফেলি সিংহাসনে রেখে
সামনে আমার ভগবান,
ইহকাল পরকাল
আছেন বরাভয় দিয়ে
রক্তবীজ বিশ্বাস
যে পিঠে ছুরি মারবে বলে
রোজ রাতে ছুরিতে শাণ দেয়
সে দিনের বেলায় মাঝে মাঝে
আমার গালে চুমু খেয়ে যায়
তার পিঠের চোখে রাখি চোখ
দেখি প্রাগৈতিহাসিক ইতিহাস
কালের প্রবাহে বইছে চোরাস্রোতে
তবু ভেসে আছে রক্তবীজ বিশ্বাস
কিছু মধু এখনো বুকে আছে
পায়ের তলায় মাটি ছিল না কোনোদিন
মাথা ভরা কল্পনাও ছিল না ভিড় করে
আমার চারদিকে, চারপাশে
শুধু ইচ্ছা ছিল কিছু
এখনো আছে