রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে অভূতপূর্ব এক বাক্যালাপ শুনলুম। বিশাল বাড়ি, বড় পাঁচিল, সামনে অনেকটা খোলা জায়গা, সেখানেই একপাশে একটা খাটাল। কিছু গরু খাটালে ছাদের নীচে, কিছু গরু বাইরে উঠানেই চরে বেড়াচ্ছে। বিশাল লোহার গেট সামনে।

   একজন বেশ বয়স্ক মানুষ সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন।
...

আরে বাবা বলল আর তুই অমনি জঙ্গলে চলে যাবি? একবার ভেবে দেখবি না বাবা কোন দুর্বল মুহুর্তে কাকে কি কথা দিয়ে ফেলেছে, তার জন্য মাথা খারাপ করবি কেন? বলি এমন অন্ধভক্তি কি ভালো? না এমন সাবমিসিভ হওয়া ভালো? তার চাইতে পরিবার নিয়ে না হয় ভেন্ন হতিস, অন্য কোথাও ঘর বাঁধতিস, চাকরি-বাকরি করে ছেলেমেয়ে মানুষ করতিস।
...

- রাজা, উহাদের আপনার মঙ্গলহস্তে বিশ্বাস নাই।

- উহারা তবে নাস্তিক। ঈশ্বরের মঙ্গল ইচ্ছা রাজার মাধ্যমে সাধিত হয়। নহিলে ত্রিভুবনেশ্বরের সময় কোথা এই ক্ষুদ্রখণ্ডের গোলোযোগ লইয়া ব্যস্ত রহেন। তাই রাজার উপর বিশ্বাসের অভাব প্রকারান্তরে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাসের অভাব। অতএব উহারা নাস্তিক।
...

নীল ফ্রক। পায়ে একটা নীল জুতো। চুলে একটা নীল ফিতে বাঁধা। পার্কে বেঞ্চে বসে। বয়েস নয় বছর, চার মাস, তিনদিন। ফ্রকের গা ছুঁয়ে কাঠের বেঞ্চে শোয়ানো একটা নীল ছাতা।

   একজন বয়স্ক মানুষ ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে তার দিকে।
...

- তুই সকালে কোথায় খাস?

- বাইরে একটা দোকান আছে, দারুন বাটার টোস্ট করে, ওখানে খাই, সাথে র চা।

- আমায় এবার যখন বাড়ি নিয়ে যাবি, ওখানে চা আর বাটার টোস্ট খেয়ে বাড়ি যাব
...

তোমার কাছে সে বিদ্যুৎ
তুমি তাই অপেক্ষা করো চমকের

আমার সে আলো নিরন্তর
...

একজন মানুষ সারাটা জীবন নিরহংকারী হওয়ার চেষ্টা করে গেল।
এইভাবেই তার অহং সারাটা জীবন বেঁচে গেল।
...

কে যেন বলেছিল
সব কিছু গুছিয়ে রেখো
ডেকে নিয়ে যাব
সময় করে

তার আর আসা হল না
...

যে যেভাবে খুশি ভাবুক
যে যেভাবে খুশি জানুক

শুধু যে আমিই একা ঠিক
...

চায়ের দোকানের সামনে অল্প অল্প ভিড়। একটা বড় টিনের কৌটো নিয়ে রোগা একটা মানুষ টিউবলাইটের নীচে দাঁড়ালো। কিছু মানুষ আছে না, যারা কথা না বলে থাকতে পারে না, এ-ও সেই গোছের। আমি বেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে, তবু সে হেসে হেসে আমার দিকে তাকিয়েই বলতে শুরু করল, দুপুরে খুব খিদে পেল বুঝলেন... অত দুপুরে এই করুনার সময় কে আমার জন্য হোটেল খুলে ভাতের থালা নিয়ে বসে আছে বলুন? আমি এই থেকেই টপাটপ দুটো ইডলি তুলে খেয়ে নিলাম...
...