Skip to main content

জাগ্রত

“আমার জীবন থেকে সব ভালোবাসা সরিয়ে নাও।”

    জৈন সাধক ভাস্কর এই কথাটা তিনবার উচ্চারণ করল। অনেক উঁচু পাহাড়ের মাথায় এই মন্দির। চারদিক জঙ্গল। দিনের উজ্জ্বল আলোয় স্নিগ্ধ শান্ত দশদিক।

আস্কারা

চক্কোতি মশায় ভীষণ অভিমানী। খিদে পেলে মুখে বলতে পারেন না। নিজে রিকশা ডাকলে, আরেকজন ডেকে দিলে ছেড়ে দেন। এক হাতা বেশি ভাত লাগলে চাইতে পারেন না। কিন্তু মনে মনে ভাবেন, একবারও বলল না আমার আরেকটু ভাত লাগবে কিনা! 

সেন্টিমেন্ট

দেখুন, আমরা আপনাকে প্যানিক করার কারণ দেব। কিন্তু আপনি প্যানিক করতে পারবেন না। আমরা আপনাকে ঘৃণা, রাগ, বিদ্বেষ - এগুলোর খবর জানাব। আপনি স্থিতপ্রজ্ঞের মত থাকবেন। যদি না পারেন, আপনি কি করে কি করে স্থিতপ্রজ্ঞ থাকবেন সেও নানা টিপসের মাধ্যমে জানাব। আপনি শুধু আমাদের কিনুন। আমাদের দেখুন। 

মামু

আকাশে যে ঠাকুমা থাকে, সে রোজ রাতে লণ্ঠন হাতে বেরোয়। কেন বেরোবে না? সব তারা আছে কিনা গুনে দেখতে হবে না! 

কেন বারবার সমুদ্র?

সজ্ঞানে তো জানি পাহাড় আর জঙ্গল ভালোবাসি। বিশেষ করে জঙ্গল। কিন্তু স্বপ্নে যেখানে সেখানে সমুদ্র কেন দেখি? পাশের বাড়ির পিছনেই যেন বালুতট, তারপর সমুদ্র। উঠানের পেয়েরা গাছটার গোড়া ছুঁচ্ছে এসে সমুদ্রের ঢেউ। ঘুমের মধ্যে নোনা বাতাস। নিরবচ্ছিন্ন গর্জন। কেন বারবার সমুদ্র?

ভ্রষ্ট তোতা কাহিনী

রাজা পাখিটিকে আনাইলেন। সঙ্গে কোতোয়াল আসিল, পাইক আসিল, ঘোড়সওয়ার আসিল। রাজা পাখিটিকে টিপিলেন, সে বলিল, জয় রাজামহারাজের জয়। তাহার পেটের মধ্যে পুঁথির কাগজগুলি পরমোল্লাসে নাচিয়া নাচিয়া বলিল, আমি সব জানি, সব জানি মহারাজ। আপনার কৃপা রাজা। আপনিই সব।

    রাজা কহিলেন, আর গান গাহিবে?

জীবন

এতবার জীবন আমার থেকে বিমুখ হতে চাইল

এতবার আমি চাইলাম বিমুখ হতে জীবন থেকে 

তবু ভীষণ ঝড়ে
জানলার পাল্লা দিতে দিতে দেখেছি
প্রদীপের শিখা সামলাতে ব্যস্ত সে-ও

অসতো মা সদ্গময়

সত্য বহুমাত্রিক। জৈন তীর্থঙ্কর বললেন, সত্য অন্ধদের হস্তী স্পর্শনের মতন। কেউ লেজ ধরে বলবে, সরু। কেউ পা ধরে বলবে থামের মত। কেউ পেট ধরে বলবে, মোটা। এই উদাহরণটি পরে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন। 

কাদায় পা ডুবিয়ে

    স্বপ্ন দেখেন?

    দেখি। 

    কি দেখেন?

    এই ধরুন গলায় দড়ি দিচ্ছি। সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গেছি বাঘে খেয়ে নিচ্ছে। সমুদ্রে নুলিয়া আমায় ডুবিয়ে দিচ্ছে। গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে মারা যাচ্ছি। চব্বিশতলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিচ্ছি। 

    ভয় পান?

ভিক্ষাপাত্র

মন প্রসন্ন হল না। জগন্নাথ মন্দির থেকে বেরিয়ে বড়দাণ্ডতে পা দিয়েছেন, এক ভিখারির ভিক্ষাপাত্রে লাগল পা। ছিটকে গেল পাত্র। মাথা হল আগুন। "তোমরা বসার জায়গা পাওনা আর, ছোটোলোকের দল…"।

    প্রধান পুরোহিতকে রাস্তা ছেড়ে দিল সবাই। 

ডিপ্লোম্যাসি

- তা দেখুন, আমাদের মধ্যে একটা কসমোপলিটান, সেক্যুলার ব্যপার আছে।

- মানে কি?

- কসমোপলিটান মানে আমরা নিজেদের বিশ্বনাগরিক মনে করি। পৃথিবীর যেখানে যা কিছু ঘটে আমরা প্রতিবাদ করি। সে প্যালেস্টাইন হোক, ভিয়েতনাম হোক, আমরা সারাটা বিশ্ব আমাদের দেশ মনে করি।

ক্রান্তদর্শী মানুষ

ভাবুন দেখি, একজন মানুষ, বেশ সেজেগুজে, একটা চেয়ার নিয়ে দরজার কাছে বসল। তারপর রাস্তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বলে যেতে লাগল,

ম্যারিনেটিং ফেজ

রেপ অনেক বড় একটা কথা। কিন্তু প্রতিদিন অল্পস্বল্প যে অ্যাবিউজমেন্টগুলো ঘটে চলে তার দিকে তাকালে একটা কমোন ঘটনা পাওয়া যায়।

    আমি যতগুলো ঘটনা শুনলাম আজ অবধি, খুব কাছের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় পরিচিত, শিক্ষক ইত্যাদির থেকে, আমার মনে হয় আমি একটা টার্ম বলতে পারি, ম্যারিনেটিং ফেজ।

লক্ষ্মী

একটা পাখি ডেকেই যাচ্ছে। এইমাত্র মেঘ কেটে চাঁদ উঠল। আজ সারারাত লক্ষ্মী হেঁটে হেঁটে ঘুরবে। দেখবে কে কে জেগে আছে রাতে।

    ট্রেন থেকে নামতেই পায়ের তলাটা টাটিয়ে উঠল। ধূপকাঠির প্যাকেটগুলো থেকে মিষ্টি গন্ধ বেরোচ্ছে। আজ ট্রেন অনেক লেট করল। নইলে এতক্ষণ লাগে?

নিস্তব্ধ পদচারণায়

শশী বাসনপত্র মেজে বাইরের দরজায় তালা লাগিয়ে বিছানায় গিয়ে শুলো। শুতেই পিঠটা টাটিয়ে উঠল। তবু জোর করে পিঠটা চৌকির কাঠের সঙ্গে চেপে রাখলে ব্যথাটা শান্ত হয়ে যায়। শশী অনেক ব্যথা শান্ত করে ফেলেছে এইভাবে, বুকের পাটাতনে চেপে ধরে থেকে। ছটফট করতে করতে ব্যথাটা কইমাছের মত মরে নেতিয়ে পড়ে। শশী ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ে। ও, কই মাছ বলতে গিয়ে মনে পড়ল। শশীর হাতের কই খেতে এই হোটেলে কত লোকের যে

অনপেক্ষ

দোলের উৎসব চলছে। মন্দিরে আজ প্রসাদ বিতরণ হবে। গোঁসাইও এসেছে মন্দিরে। মন্দির প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য। গোঁসাইয়ের চো পড়ল জবার উপর। ভিড়ের বাইরে কুসুমকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে।

শান্তিই পথ

মহানামব্রত ব্রহ্মচারী বলতেন, রিলিজিয়ন ইজ ফর জেন্টলম্যান। এ কথাটা ওঁর বক্তৃতায়, ভাষণে, লেখায় বারবার ঘুরে ফিরে আসত। রিলিজিয়ন ইজ ফর জেন্টলম্যান। বলতেন আগে ভদ্র হও, মার্জিত হও, সুসংস্কৃত হও, তারপর এসো ধর্মে। তবে ধর্মের মর্ম বুঝতে পারবে।

যুগান্তরের পাথরের মত

দইওয়ালা ফিরে যায়
ঠাকুর্দা ফিরে যায়
ছেলেরা ফিরে যায়
মোড়ল, প্রহরী ফিরে যায়
রাজার চিঠি এসে পড়ে থাকে
   খাম বন্ধ হয়ে
সুধাও ফিরে যায়

অমল মোবাইলে ব্যস্ত
জানলার দিকে পিছন ফিরে 
     মাথা গুঁজে বসে
          যুগান্তরের পাথরের মত

আমি কি একটা মানুষ!

- আমার কোথাও বেড়াতে যেতে ভালো লাগে না

- কি জ্বালা, লাগে না তো যাবেন না…

- ওভাবে বলছেন কেন? আপনারা এত জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার অ্যাড দেন, আমি একটাতেও যেতে পারি না, আমার একটা বিবেকবোধ নেই?…

- এতো ভারী মুশকিল হল... আমরা তো আপনাকে জোর করছি না রে বাবা…

শুভ বিজয়া

- দাদা, প্যাণ্ডেল কি খোলা হয়ে গেছে?

- না, কেন? লক্ষ্মীপুজোটা যাক তারপর তো।

- আচ্ছা।

- কেন?

- মাকে বাড়ি আনব। হুইল চেয়ারে আনব তো, ওইটুকু ফাঁক দিয়ে আনা যাবে না, তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।

সে সদা জাগ্রত

গুরু ধ্যানে বসে আছেন। একজন একজন করে শিষ্যরা এসে বসছে সামনে। আজ বিজয়া। ঘটে পুজো হয়। ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়ে গেছে। সন্ধ্যে হব হব।

    গুরু চোখ খুললেন। বললেন, কল্যাণ হোক সকলের।

তুমিই সেই পরমসুন্দরী

কথা হল এমন একটা জায়গায় গিয়ে তো দাঁড়ানোই যায় যেখানে মাস্কহীন হতে মনে বেশি সংশয় জাগবে না। এমনিতে আমার দুর্গাপুজো মানেই ঘরের কোণে নতুন বই নিয়ে সেঁধিয়ে যাওয়া। ছোটো ছিলাম যখন ছিল নানা পূজাবার্ষিকী, এখন হল নানা অন্য ধরণের বই।

বুকুর দুর্গাপুজো

এই বুকু, বুকু….


    বুকু তো ঘুমিয়ে কাদা। ইঁদুরটা এসে কানের কাছে আবার ডাকল, এই বুকু... বুকু…

    বুকু উঠে বসল ধড়মড় করে। খাটের উপর রাস্তা থেকে টুনি লাইটের আলো এসে পড়েছে। সারা রাস্তা জুড়ে লাইটিং হয়েছে তো!

ভ্রম রে ভ্রমিত মন

যত্ন করে মাদুরটা পেতে বলল, বসো। মাদুরটা পাততে পাততে লতার নিজেরই মনে হল শেষ কবে এত যত্ন করে কিছু করেছে? যত্ন করতে ভুলে যাওয়া মানুষ হারিয়ে যায় হঠাৎ। লতা যেমন যাচ্ছিল।

    লতার শ্বশুরবাড়ির বাজির ব্যবসা। বাড়ির সামনেই দোকান। লতা বসে, অভিজিৎ বসে, শাশুড়ী বসে। লতা কিছু সেলাইয়ের কাজ করে। সে তেমন বড়সড় কিছু নয়।

এবার আমার উমা এলে

কাঁপা হাতে চশমাটা খুলে মুছে নিলেন। তারপর কাঁপা কাঁপা হাতে চশমাটা আবার পরে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। সপ্তমীর সকাল। ভিড় নেই তেমন মণ্ডপে।

    একটা অল্প বয়সী ছেলে এসে বলল, দাদু এই যে চেয়ারটা, বসো। পড়ে যাবে তো। ভোগ খেয়ে যেও।

 স্বচ্ছ নদীর মত

যদি গোটা পৃথিবীটা একবার নিঃশব্দে ঘুরে আসতে পারতাম

কোথাও নিজের কোনো অবশিষ্টাংশ না রেখে

যদি সব কথা শুনে যেতে পারতাম,
  সাক্ষী থাকতাম যা ঘটে যায়, সব কিছুর

কোথাও নিজের কোনো মানদণ্ড না বসিয়ে

যদি ফেরার সময়ে,
    সে সময়ে হোক
        কি অসময়ে

কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য

তুমি ডাকোনি

আমি নিজেই এসেছিলাম

ক্রমশ নিজেকে
তোমার অভ্যাস করে ফেললাম

আমারও অভ্যাস তৈরি হল
তোমার উপেক্ষা ছাপিয়ে 
ভালোবাসার অপেক্ষায় থাকার

তুমি বলোনি
আমি নিজেই ফিরে এলাম

তুমি বললে
আমি অকৃতজ্ঞ

অন্য পূজো

ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী --- এই পাঁচটা দিন নিয়েই বাঙালীর রাজকীয় উন্মাদনা, বাঙালীর শারেদাৎসব। দেবী দূর্গার আবাহন, পূজো আর বিসর্জনের মধ্যেই বাঙালীর সাবেকী আর বারোয়ারি আনন্দ, খানাপিনা, ফুর্তি আর আমোদ আহ্লাদ। কিন্তু এই পূজো কি শুধুই আনন্দের? না তো!

তাড়িয়ে দিলেও

বুড়ি কলে মুখ ধুয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল, বোঁচকাটা বগলদাবা করে। পুরোহিত আটকালো। বলল, বুড়ি এই যে তুমি মন্দিরে রোজ দুপুরে আসো, ভোগ খাও, চলে যাও...

    বুড়ি তাকে থামিয়ে বলল, কেন? আমি তো দশটাকা দিয়ে কুপোন কাটি। অবশ্য রোজ কাটতে হয় না। এক একদিন এমনি এমনিও ভোগ দেয়.... কিন্তু কেন জিজ্ঞাসা করছেন?

হে মহাজীবন

হে মহাজীবন

আমার ঈশ্বর, বিজ্ঞান, উন্নত সভ্যতা

সব নিয়ে নাও

শুধু বলে যাও
      মানুষ তবু কেন শান্তি চায় না? 

সাহিত্যিকেরা আত্মীয় হন

যিনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন আমি তাকে চিনতাম না। কোনোদিন নাম শুনিনি। তার জন্য আমার কোনো লজ্জাও নেই। কারণ সাহিত্য আমার কাছে সাধারণ জ্ঞান না। তৃষ্ণার জল। আমার মন শান্ত হয়েছে, ভালো হয়ে গেছে, শক্তি পেয়েছে, খুশী হয়েছে এমন অনেক অনেক লেখা পড়ে যারা কেউ নোবেল পাননি।

কেউ যদি কথা না বলে

কেউ যদি কথা না বলে
তবে দীর্ঘশ্বাসের নিম্নচাপ জমে

হঠাৎ একদিন
      ওঠে ঝড়

অন্ধরা দেখতে শুরু করে
পঙ্গুরা হাঁটতে শুরু করে
বোবারা স্বরবর্ণে শ্বাস ভরে
  ঠেলা দেয় ব্যঞ্জনবর্ণে 

কালের চাকা ঘোরে

কেউ যদি কথা না বলে
তবে কাল সাগরে নিম্নচাপ জমে

আর্জি

রাজারাম বসে দরবারে। হঠাৎ খবর এলো একদল মানুষ এসেছে মর্ত্যলোক থেকে। রাজারাম ডেকে পাঠালেন। নতুন প্রাসা

    নতুন রঙের গন্ধে ম ম করছে চারিদিক। দামী দামী পাথর এসেছে দেশ বিদেশ থেকে।

মানুষের মনের কত লক্ষ জন্মদিন হয়?

স্টেশানে সি অফ করতে গিয়ে লোকটা বুঝল, আসলে সে তাকে বোঝেইনি কোনোদিন। অচেনা লোককে কেউ সি অফ করে?

    ট্রেনটা চলে যাওয়ার পর এক প্যাকেট চিপ্স আর একটা কোলড্রিংক্সের বোতল নিয়ে ফাঁকা প্লাটফর্মে বসে পড়ল। পরের ট্রেন আসার আগে তো নতুন কোনো যাত্রী নেই।

ভুল্টুর তর্পণ

মানে একটা মানুষ একটু শান্তিতে তর্পণও করতে পারবে না? ভুল্টু জোয়ারের জলে পা ডুবিয়ে হাতে কুশ, গঙ্গার জল আর তিল নিয়ে সবে পুরুত মশায়ের নকল করে প্রথম শব্দটা উচ্চারণ করেছে কি করেনি, অমনি মাথায় গাঁট্টা... বলে, এই ব্যাটা আমাদের গোত্র ভুল বলছিস কেন?

তাই রে, তাই রে, তাই রে না

কি গাড়ি? 
কেমন জোর?
চাপা দিল? চালিয়ে দিল?
আরে বাহ, আরে বাহ
কি কলিজা, কি কলিজা
পিষে দিল? 
এক্কেবারে হাড়গোড় সব গুঁড়িয়ে দিল?
আরে বাহ, আরে বাহ

চাকায় নাকি রক্ত লেগে?
রাস্তা নাকি রক্তে ভিজে?

হয়ে ওঠা

মানুষের সঙ্কীর্ণতার বিশ্বে কোথাও কোনোদিন পাকাপাকি জায়গা হয় না, এটা মানুষ বুঝতে কতদিন সময় নেয় কে জানে। এটা বুঝে গেলেই যে কত ঝক্কি, কত চালাকি আপনি খসে পড়ে, সে যদি আগে জানতে পারে তবে সংসারে রাতদিন সে নিজের পায়ে নিজে এভাবে কুড়ুল মেরে চলতে পারে না।

রাগলে পরে

হঠাৎ তিনি এমন গেলেন ক্ষেপে
যদিও ক্ষেপার কারণ ছিল মস্ত
যেন পাগলা হাতি ঢুকেছে জঙ্গলে
গাছপালা সব হয়ে আছে তটস্থ 

রাগলে বাড়ে রক্তচাপ মেলা
অ্যাড্রিনালিন হরমোন বলে, হুররে
বুদ্ধিবিবেক হঠাৎ লোডশেডিং
চিত্ত বলে, ওরে কে কোথা আছিস রে!

সার্ভিস চার্জ

ভুল্টু ঈশ্বরের কাছে বেগো প্রার্থনা করল, ডাকাডাকি করল, খাওয়াদাওয়া ছাড়ল, কান্নাকাটি করল, মায় চিল্লেমেল্লিও করল। তো ঘোর কলি হতেও ঈশ্বর দেখা দিলেন।

    ভুল্টু বলল, এতদিন ধরে ডাকছি, আপনার কোনো পাত্তাই নেই, এদিকে লাইফটা হেল হয়ে যাচ্ছে... ছেলেমেয়েগুলো অমানুষ, চাকরিতে শান্তি নেই, আপনি কিছু একটা করুন….

প্রাণের সলিলে জীবনের ছায়া

(তখন বৌদ্ধদের একে একে পরাজিত করে ফেলছেন কুমারিল ভট্ট। রচিত হচ্ছে ভারতীয় আস্তিক দর্শনের এক নতুন অধ্যায় - পূর্ব মীমাংসা। কিন্তু সে নিয়ে শুরু হলেও এ গল্প শুধুই গল্প। মানুষের হৃদয়ের কি কোনো দর্শন হয়? তার কি কোনো ব্যাখ্যা, ইতিহাস হয়? সে চিরকাল আদিম, অকৃত্রিম। এ গল্প শুধু সেই সময়টুকুতেই জন্মেছে, প্রেক্ষাপট হিসাবে। বাকি তো মানুষের গল্প, দর্শনের ভাষায় নয়, মানবী ভাষায়।)

অহিংসা

ভালোবাসায় অহিংসা মানে
ঈর্ষা না করে 
ভয় না পেয়ে
একটু মনে রাখা 
ভালোবাসা হারিয়ে যায় না,
ভালোবাসার মানুষটা হাত ছেড়ে গেলেও, 
দ্বিধাহীন হৃদয় নিয়ে তবু বলতে পারা - 
ভালো হোক 

একটা ফাণ্ডামেন্টাল প্রশ্ন

আচ্ছা, যিনি যে কোনো বিষয়ে প্রাথমিক প্রশ্ন করেন, তাঁকে কি আমরা ফাণ্ডামেন্টালিস্ট বলতে পারি না? এই যে 'হ য ব র ল' -তে উকিল বলছেন, মোকদ্দমাটা যখন মানহানির, এবং মান মানে কচু, কচুর মূল খাদ্য অংশ যেহেতু মূল, তাই বিষয়ের মূল অবধি যাওয়া উচিৎ, তখন সেই উকিল কি ফাণ্ডামেন্টালিস্ট নন?

অনুভবের স্রোত আর চিন্তার জাল

ভাষা ব্যষ্টির অভিজ্ঞতাকে সমষ্টির সামনে নিয়ে আসে।

    মত ও অভিজ্ঞতা দুটো আলাদা শব্দ। মত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাজাত। যেমন রসগোল্লা মিষ্টি। এ সমষ্টিগত অভিজ্ঞতা। কিন্তু রসগোল্লা সব চাইতে ভালো মিষ্টি --- এ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। মত। "আমার মনে হয়" --- এই কথাটা বেঁচে আছে, ভাষা আছে বলেই। নইলে আমার কি মনে হয়, তাকে পৃথকভাবে জানার বা জানানোর উপায় ছিল না।