আকাশে যে ঠাকুমা থাকে, সে রোজ রাতে লণ্ঠন হাতে বেরোয়। কেন বেরোবে না? সব তারা আছে কিনা গুনে দেখতে হবে না!
তাই সে লণ্ঠন হাতে তারা গুনতে বেরোয়। রোজ অল্প অল্প করে সে লণ্ঠনের তেল কমে আসে। তারপর হুস করে একদিন নিভে যায়। আবার অল্প অল্প করে তেল ভরে ঠাকুমা, লণ্ঠন আবার অল্প অল্প করে জ্বলে উঠতে উঠতে পুরো জ্বলে ওঠে।
গল্পটা এতটা শুনে মামু জিজ্ঞাসা করেছিল সেই ঠাকুমাটা দিনের বেলায় কোথায় থাকে?
মুশকিলে পড়লাম। রাতের সব তারাই আছে দিনের আলোর গভীরে - এতবড় দার্শনিক কথা তো সে বুঝবে না।
তাকে বলেছিলাম, বাহ রে, সে ঠাকুমা তখন সারা আকাশ পাখি চরায়। কাক, বক, চড়াই।
মামু আবার বলল, যখন মেঘ করে?
এবার কি বলি? হেরিয়া শ্যামলঘন নীল গগনে, সেই সজল কাজল আঁখি পড়িল মনে - এর কাব্য তো সে বুঝবে না।
বললাম, আরে মামু ওটাই তো ঠাকুমার বড় ন্যাতা। যা বুলিয়ে আকাশটা মোছে। আর ন্যাতা যখন নিংড়ায় তখন হুসহুস করে বৃষ্টি পড়ে।
মামু জিজ্ঞাসা করল না, তবে সাদা মেঘগুলো কি করে? তবে তো সোজা উত্তর ছিলই, নীলাকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা রে ভাই....
মামু এখন আর আকাশ নিয়ে অতশত ভাবে না। সময় কোথায়? তার মনের আকাশে এখন ঘুড়ি ওড়ার সময়। রঙিন ঘুড়ি। কত কাটবে। কত উড়বে। কত হারাবে। আমি এখন মামুকে বলি, ঘুড়িগুলোর যা হয় হোক মামু, দেখিস আকাশটা যেন না হারায়।