Skip to main content

কানে না, প্রাণে

গোঁসাই বলল, হৃদিযন্ত্র ধুলায় রেখেছো, হাটের মাঝে। যে পারে এসে তারে দেয় টোকা, দেয় টান। ওঠে শব্দ। সুর কই? রাতদিন যে যন্ত্র নিয়ে তত্ত্ব করো, সে যন্ত্র বাজবে কবে হে? 

     বললাম, সুর শিখিয়ে দাও। বাজাই। 

কুয়ো

ছোটোবেলায় একটা স্বভাব ছিল দু পায়ের বুড়ো আঙুলে ভর দিয়ে কুয়োর মধ্যে ঝুঁকে দেখা। কুয়োটা নিয়ে আমার মনে যে কি রহস্য ছিল সে বলার নয়। মাথা ঝোঁকালেই জলে আমার মাথার ছায়া। একটা ঢিল ফেলে দিলেই মাথা দুলে উঠল। মাথার পিছনে কখনও নীল আকাশ, কখনও সাদা-কালো মেঘের আকাশ। রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবতাম, কুয়োর নীচটা কত অবধি গেছে?

নীলকন্ঠ যখন নটরাজ হয়

বরং জনগণকেই বলো নীলকণ্ঠ
কৈলাসে নয়
বরং তাকিয়ে দেখো
আশেপাশে 
দুর্নীতিতে, ভ্রষ্টাচারে
 ক্রুশবিদ্ধ হতে হতে
    যে ছেলেটা মেয়েটা
       তবু রাস্তায় নামছে
         ছুটছে,
         স্বপ্নগুলোকে

ঘাসফুল

স্মৃতি। 
সব রাস্তায় হেঁটো না।
কয়েকটা রাস্তা নির্ভার হয়ে হাঁটি,
  সব ঘাসে বাসি ফুল রেখে যেও না
    কিছু ঘাসে তাজা ঘাসফুল নিয়ে বাঁচি!

নিরুদ্দেশ

গোবিন্দের এই নিয়ে তিনটে রাত ঘুম হল না। ক্ষেতে যায়। গরুকে জাব দেয়। সন্ধ্যেবেলা তাস খেলতে বসে চণ্ডীমণ্ডপে। সব ঠিক আছে। কিন্তু মেয়েটাকে নিয়ে চিন্তা। বাঁ হাতের কব্জীর উপর এমন একটা ফুলো উঠছে। টিউমার। এই মাস গেলে বিয়ে। শাঁখা গলবে? কি যে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। 

অদেয় ভালোবাসা

দু’জন মানুষ ঠিক করল, তারা ঘর বাঁধবে। যারা নিজেদের ঘরে তো জন্মেছিল, কিন্তু ঘর তাদের নিজেদের ভাবেনি। ছেলেটাকে তার বাড়ির লোক বলেছিল, দূর হ! মেয়েটাকে তার বাড়ির লোকে বলেছিল, দুচ্ছাই!

অভিমান

পুড়তে রাজী আছি
যদি ছাই হয়ে গেলে আর ফিরে না তাকাও

শূন্য হয়েও যেতে পারি অনায়াসে
যদি আর কোনোদিন ডাক না পাঠাও

 

(ছবি Aniket Ghosh)

বিছানার চাদর

".. মৃত্যুর জন্য তো পথ" ~ রবীন্দ্রনাথ

 

     এমনকি বিছানার চাদরেও তোমার না থাকার গন্ধ লেগেছিল, তুমি কি মেখে এসেছিলে? 

শিকার

সে বাগানের গেটেই অপেক্ষা করছিল। তার জন্য। শুধু তার জন্য। 

     অটো থেকে নামার সময় তার বুকটা ধক করে উঠল। কেউ এভাবে অপেক্ষা করেনি তার জন্য। সে যে ফুল ভালোবাসে, এ কথাই বা ক'টা মানুষ জানে? কেউ ডাকেনি বাগান দেখতে কোনোদিন। সে নিজে থেকে গেছে। অযাচিতের মত। অনাকাঙ্ক্ষিতের মত। আজ কেউ তাকে ডেকেছে। 

এই তো... এই তো..

গাছ থেকে নেমেই বদনের যেটা খেতে ইচ্ছা করল, সেটা হল সুজি। মা করত। গুড়ের সুজি। লাল। মাখা মাখা। 

     প্রচণ্ড গরম। গাছে উঠেছিল কেন মনে পড়ছে না। একটাও আম নেই। খানিক কাঠ পিঁপড়ের কামড় জুটেছে। খিদে পেয়েছে প্রচণ্ড। খাবে কি? 

Subscribe to