বাড়ি ফিরে দাওয়ার উপর বউকে মরে পড়ে থাকতে দেখে আর বাড়িমুখো হয়নি চিকুন ভিখারি। এমনকি এই অবস্থায় বাড়ি ছেড়ে গেলে পুলিশে খোঁজ করতে পারে বলেও তার মনে হয়নি। স্রেফ মনে হয়েছে আর বাড়ি থেকে কি করবে, তাই রাস্তায় হাঁটা লাগিয়েছে। আঠারো বছরের দাম্পত্য জীবনে এক মুহূর্তে দাড়ি টেনে দিল।

রবি ঠাকুরের সময় এসেছিল স্প্যানিশ ফ্লু, ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। ১৮ মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল শুধুমাত্র ভারতেই নাকি। রবীন্দ্রনাথ কিভাবে সামলেছিলেন? বিশ্বভারতী গড়ে উঠছে, হাজার একটা সমস্যা তো আছেই, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি। তার মধ্যে এই অতিমারী। 

আজ একটা গল্প মনে পড়ছে। আমি কলেজে শুনেছিলাম। 

একটা প্লেন ক্র‍্যাশ হয়েছে। প্রাইভেট প্লেন। দেশের কোনো এক মন্ত্রীর প্লেন ছিল। যদিও কেউ মারা যায়নি, কিন্তু সবাই কোমায়। সুস্থ বলতে একমাত্র একটা শিম্পাঞ্জি, সেও ওই প্লেনেই ছিল। 

গতকালের কথা। দুপুর গড়িয়ে সদ্য বিকাল হয়েছে। এক বিশেষ দলের বেশ কিছু রাজনীতির মানুষ বাড়ি বাড়ি স্লিপ দিচ্ছেন। অবশ্যম্ভাবীভাবেই কারোর মুখে মাস্ক নেই। কারণ, "আমাদের এদিকে তেমন আসেনি"..."পকেটে আছে, এই খুললাম"..."গরম লাগে"...ইত্যাদি নানা ভ্যালিড কারণ তো আছেই। তাছাড়া কপালে থাকলে কে আটকাবে - এর থেকে বড় জীবন দর্শনই বা কি থাকতে পারে! 

মিত্তির মশায় আলি সাহেবের কবরের সামনে এসে প্রায় প্রতি রবিবার বিকেলে বসেন। দুজনেই ছেলেবেলার বন্ধু, প্রাণের বন্ধু ছিলেন। কর্মসূত্রেও সারাটা জীবন কাছাকাছিই থেকে গেলেন। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় আলি সাহেব চলে গেলেন মাত্র কয়েকদিন জ্বরে ভুগে। সবাই বলল, স্বাভাবিক সময়েই গেলেন। কিন্তু মিত্তির মশায়ের মন বলল, তাই কি? তবু মেনেই নিলেন, কারণ কথাটা সংসারের হিসাবে তো সত্যি।

প্রশ্ন - পাণ্ডিত্য ও প্রজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য একটি করিয়া বাক্যে বুঝাইয়া লেখ। 

উত্তর - করোনা হইতে রক্ষা পাইতে ও অন্যকে রক্ষা করিতে মাস্ক পরিধান আবাশ্যক - ইহা জানার নাম পাণ্ডিত্য। 

সঠিক সময়ে, সঠিক মাস্ক, সঠিক উপায়ে ধারণ করিবার অভ্যাসকে বলে প্রজ্ঞা।

যে মানুষ বলে, আমি কাউকে ভয় করি না।

আমি তাকে ভয় করি। 

যে মানুষ বলে, আমি অত্যন্ত কঠোর জীবনযাপন করি, এ আমার ধর্ম। 

আমি তাকেও ভয় করি, 
যে নিজের উপর কঠোর হওয়াকে গর্বের বলে জানে, সে অন্যের উপর নিষ্ঠুর হওয়াকে জানে দায়িত্ব বলে। 

যে মানুষ বলে, আমি স্পষ্টবক্তা, আমি কোনো কথা রেখেঢেকে বলি না।

ধুধু মাঠ। একটা অশ্বত্থ গাছের নীচে হেলান দিয়ে বসে আছি। চারদিকে তাকানো যাচ্ছে না, এত রোদ। এগারোটা বারোটা হবে হয় তো। আজ বৈশাখ মাসের প্রথম দিন, হ্যাঁ, মানে নববর্ষ, ১৪২৮। বৈশাখ মানে তো, হে নূতন, দেখা দিক আর-বার... আর বুদ্ধ। বুদ্ধের জন্ম ঠিক বৈশাখে না হলেও, এই গরমকাল এলেই মনে হয় সেই বিকালে গোল চাঁদ - বুদ্ধপূর্ণিমার চাঁদ। 

আমি ওরকম ভীষণ শূন্য দৃষ্টি, ওরকম প্রাণহীন হাসি আজ অবধি দেখিনি। সারা ঘর শুধু বই আর বই। খাটে, মেঝেতে, তাকে শুধু বই আর বই। নানা দেশের ম্যাগাজিন। সব অগোছালো।

এই যে মাঝে মাঝেই বলতে শুনি, ও এসব বোঝে না, ওকে যা দাও ও খেয়ে নেবে, সে তোমার রান্নায় নুন হোক না হোক, সিদ্ধ হোক না হোক, মিষ্টি হোক না হোক... ও কিচ্ছু বলবে না, চুপ করে খেয়ে উঠে যাবে