ম্যারিনেটিং ফেজ
লক্ষ্মী
একটা পাখি ডেকেই যাচ্ছে। এইমাত্র মেঘ কেটে চাঁদ উঠল। আজ সারারাত লক্ষ্মী হেঁটে হেঁটে ঘুরবে। দেখবে কে কে জেগে আছে রাতে।
ট্রেন থেকে নামতেই পায়ের তলাটা টাটিয়ে উঠল। ধূপকাঠির প্যাকেটগুলো থেকে মিষ্টি গন্ধ বেরোচ্ছে। আজ ট্রেন অনেক লেট করল। নইলে এতক্ষণ লাগে?
নিস্তব্ধ পদচারণায়
শশী বাসনপত্র মেজে বাইরের দরজায় তালা লাগিয়ে বিছানায় গিয়ে শুলো। শুতেই পিঠটা টাটিয়ে উঠল। তবু জোর করে পিঠটা চৌকির কাঠের সঙ্গে চেপে রাখলে ব্যথাটা শান্ত হয়ে যায়। শশী অনেক ব্যথা শান্ত করে ফেলেছে এইভাবে, বুকের পাটাতনে চেপে ধরে থেকে। ছটফট করতে করতে ব্যথাটা কইমাছের মত মরে নেতিয়ে পড়ে। শশী ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ে। ও, কই মাছ বলতে গিয়ে মনে পড়ল। শশীর হাতের কই খেতে এই হোটেলে কত লোকের যে
অনপেক্ষ
দোলের উৎসব চলছে। মন্দিরে আজ প্রসাদ বিতরণ হবে। গোঁসাইও এসেছে মন্দিরে। মন্দির প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য। গোঁসাইয়ের চো পড়ল জবার উপর। ভিড়ের বাইরে কুসুমকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে।
শান্তিই পথ
মহানামব্রত ব্রহ্মচারী বলতেন, রিলিজিয়ন ইজ ফর জেন্টলম্যান। এ কথাটা ওঁর বক্তৃতায়, ভাষণে, লেখায় বারবার ঘুরে ফিরে আসত। রিলিজিয়ন ইজ ফর জেন্টলম্যান। বলতেন আগে ভদ্র হও, মার্জিত হও, সুসংস্কৃত হও, তারপর এসো ধর্মে। তবে ধর্মের মর্ম বুঝতে পারবে।
যুগান্তরের পাথরের মত
দইওয়ালা ফিরে যায়
ঠাকুর্দা ফিরে যায়
ছেলেরা ফিরে যায়
মোড়ল, প্রহরী ফিরে যায়
রাজার চিঠি এসে পড়ে থাকে
খাম বন্ধ হয়ে
সুধাও ফিরে যায়
অমল মোবাইলে ব্যস্ত
জানলার দিকে পিছন ফিরে
মাথা গুঁজে বসে
যুগান্তরের পাথরের মত
আমি কি একটা মানুষ!
- আমার কোথাও বেড়াতে যেতে ভালো লাগে না
- কি জ্বালা, লাগে না তো যাবেন না…
- ওভাবে বলছেন কেন? আপনারা এত জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার অ্যাড দেন, আমি একটাতেও যেতে পারি না, আমার একটা বিবেকবোধ নেই?…
- এতো ভারী মুশকিল হল... আমরা তো আপনাকে জোর করছি না রে বাবা…
শুভ বিজয়া
- দাদা, প্যাণ্ডেল কি খোলা হয়ে গেছে?
- না, কেন? লক্ষ্মীপুজোটা যাক তারপর তো।
- আচ্ছা।
- কেন?
- মাকে বাড়ি আনব। হুইল চেয়ারে আনব তো, ওইটুকু ফাঁক দিয়ে আনা যাবে না, তাই জিজ্ঞাসা করছিলাম।
সে সদা জাগ্রত
গুরু ধ্যানে বসে আছেন। একজন একজন করে শিষ্যরা এসে বসছে সামনে। আজ বিজয়া। ঘটে পুজো হয়। ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়ে গেছে। সন্ধ্যে হব হব।
গুরু চোখ খুললেন। বললেন, কল্যাণ হোক সকলের।