July 2014

"একটা বিস্কুট খেলে কি বা হয়?"
ভদ্রমহিলা বার তিন কথাটা আওড়ালেন।
বলেছিলাম,"বিস্কুটে কি ভয়?
একটা বিস্কুট খেলে কি বা হয়?"

না, ওনার বাড়ি বিস্কুটের অভাব নেই,
অভাব একটাই,
এই কথাটা বলার লোক নেই।
...

আমি কি হঠাৎ মরে যাব?
নাকি রোগে ভুগে?
অসময়ে, নাকি বৃদ্ধ হয়ে?
কেউই জানি না আগে থাকতে।
...

ছোট বেলায় অনেক অঙ্কই মেলাতে পারতাম না,
বকা খেতাম, লজ্জা করত।
...

বুকের মধ্যে সুখের নুড়ি জড়ো করতে লাগলাম
কখন তৈরি হল বাঁধ
আনন্দের স্রোত গেল থমকে
ভ্রুক্ষেপও করলাম না,
মত্ত হলাম আরো নুড়ি কুড়াতে।
...

বলি রে ভাই বলেই চলি, বলি যে বিচার আমার।
যার গলাতে ছোরা ধরো, কাটে সেই গলা তোমার।।

বাইরের নিষ্ঠুরতা দেখে আতঙ্কে শিউরে উঠে

বললাম, "হা ঈশ্বর দেখতে পাচ্ছ না!"

ভিতরে দেখলাম কি চরম সহ্য শক্তি মানুষের,
বললাম, "হা ঈশ্বর আর কত?"
...

ছেলেটা একটা বড় ব্যাগ নিয়ে কিছু বিক্রি করতে আসল।
খুব গরম। রোদে ঝলসে ওর সারা মুখ।
বললাম, "বোসো।"
রোগা শরীরে অপুষ্টির থাবা। বয়স চোদ্দ-পনের হবে।
...

বলা হয় আমাদের ধর্মে, দর্শনে ব্যবহারিক দিকটা তেমন গুরুত্ব পায়নি যতটা পেয়েছে তার ভাবের দিকটা। কথাটা কিছুটা সত্য তো বটেই। সে নিয়ে অনেক লেখা, আলোচনা ভাষণ আছে। সে থাক। বরং দুটি মূল ব্যবহারিক দিক নিয়ে আলোচনা করা যাক।
...

কি ভরসা এই দেহের রে, যে কোন সময়ে হবে নাশ।
সাধন আর কিছু নেই রে, স্মরণ করো প্রতি শ্বাস।।

এমনিতে ট্রেনে আমার ঘুম হয় না কোনকালেই। রাতের ট্রেন। পদাতিক এক্সপ্রেস। উপরের বার্থে শুয়ে। স্লিপার ক্লাস। মে মাস, ভীষণ গরম। জেগেই আছি। বিভিন্ন রকম শব্দ কানে কন্সার্ট তৈরি করে চলেছে। রাতের ট্রেনে সব সময়ই একটা অন্য জগতের রোমাঞ্চকর অনুভূতি হত আগে আমার। ইদানীং আর হচ্ছে না।
...

পাশ কাটিয়ে যেতেই পারো, যাও
তাচ্ছিল্যে আড়চোখে তাকাতেই পারো, তাকাও
হাসির সাথে শ্লেষ বিদ্ধও করতেই পারো, করো।
...

কত রঙ চোখে লেগে
কত কান্না বুকে জেগে
মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে
সারা গায়ে কাদা লেপে
...

এক রে মন, দুই না না
খোল রে চোখ, তাকা দেখ না।
...

দেখা হল
কথা হল।

চেনা হল
ভাব হল।

জমে গেল
...

যা ঘটছে চারিদিকে কেন ঘটছে?
আমি ভেন্টিলেশানের সামনে বসে,
তোকে নিয়ে যাব।
ডাক্তার বলেছে তোর মস্তিস্ক নাকি মৃত
শুধু হৃৎপিন্ড চলছে।
...

তুমি সারা মহাকাশ তোমার করে পেতেই পারো,
পেতেই পারো পৃথিবীর অন্তিম ধূলিকণার উপর আধিপত্য।
তবু তুমি ব্যর্থ,
যদি না পেলে এক ফালি হৃদয়ে একটুকরো বাসা।
...

বাঁচার জন্য পয়সা লাগে,
লাগেই তো।
তাই তো কবীর তাঁত বুনেছেন,
যীশু, চৈতন্য, বুদ্ধ ভিক্ষা করেছেন।
...

জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে,
বর্ষার দুপুর।
সামনের নারকেল গাছে একটা ঘুঘুপাখি এসে বসল।
পুরো ভিজে আছে।
...

আজ একটা হেস্তনেস্ত করব বলেই লেখা। শুরুতেই লিখতে ইচ্ছা করছে, "To whom it may concern" - লিখলাম না। তা বাপু সবাই পড়ো।
   আমার সাথে দেখা হলে - ফোনে, মেসেজে, ফেসবুকে মায় টুইটারে পর্যন্ত্য একই প্রশ্ন, "তা বিয়ে করো নি কেন? বয়স তো অনেক হল (তা মিছে বলব না, বেলা অনেক হয়েছে, মেঘের আড়ালে না, পুরোপুরি নীলাকাশে)। এবার করো বিয়েটা?"
...

গরীব মানুষটা গেল ডাক্তার দেখাতে।
ডাক্তার বললে, পেট কাটতে হবে।
সে ভয়ে ভয়ে রাজী হল সব সম্বল একত্র করে।
ডাক্তার পেট কেটে বলল, ক্যন্সার!
অপারেশান স্থগিত হল।
...

অনেক জঘন্য অন্যায় করতেও যে মানুষটার বুক কাঁপেনি
তাকেও কাঁদতে দেখলাম অসহায়, পাগলের মত,
নিজের সন্তানকে কাছে পাওয়ার জন্য,
দেখলাম দুর্বলতম মানুষটার পায়ে হাত দিয়ে
...

মাথার মধ্যে কি অদ্ভুত,
কি অদ্ভুত, কি অদ্ভুত!

কাদের বাসা কি কিম্ভুত,
কি কিম্ভুত, কি কিম্ভুত।

তাদের নাচে দিক-হারা
...

বয়স্ক লোকটা কোণের সিটে বসে মাড়ি
আর কয়েকটা দাঁত দিয়ে বাদাম চিবোচ্ছে।
ক্লান্ত অফিস যাত্রীর ভিড়ে ঠাসা আপ শান্তিপুর লোকাল।
চীৎকার, আলোচনা, ঝিমুনি, হাসি, উদাসীনতায় মিশে রোজকার ছবি।
...

"যারা আসবে তোমার কাছে তারা সমকামী"
ফোনে এটাই ছিল আন-অফিসিয়াল ফুটনোট।
তারা আসবে তাদের রিসার্চের বিষয়ে কথা বলতে।
তবু কিরকম অস্বস্তি। মন দ্বিধান্বিত - আসতে বলব?
...

কান্তাচার্য্য ঠান্ডা মাথার মানুষ। সবাই জানে। কিন্তু সেদিনের কান্ড দেখে সবার আক্কেল গুড়ুম। এত রাগতেও পারে কান্তা!

ঘটনাটা খুলেই বলি। কান্তাবাবুদের বাড়ির পাশেই থাকেন চক্কোতি বাবু। রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার। ছেলে মেয়ে নাতি নাতনি নিয়ে বিশাল সংসার।
...

(আদিকাল থেকে আজ অবধি সকল আলোর পথ প্রদর্শকদের চরণে আজ গুরু পূর্ণিমার পূণ্য তিথিতে আমার সশ্রদ্ধ নিবেদন)

মা কে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে ফিরছি কল্যানী থেকে। সন্ধ্যে হব হব করছে। রাস্তার আলো গুলো জ্বালা হয়ে গেছে। আমি আর মা গাড়ির পিছনের সিটে বসে। তিনি খুবই অসুস্থ।
...

মিথ্যা মিলের চেয়ে সত্যি অমিল ভাল,
তাতে পাশাপাশি হাঁটা যায় অন্তত
হাতে হাত না রেখেও।
মিথ্যা প্রসংশার চেয়ে সত্যি নিন্দে অনেক বেশি স্বস্তির
অন্তত ধোঁয়াশায় জ্বালা করে না চোখ।
...

সারাদিন শান্তি খুঁজে বেড়ালে
বনে গুহায় সৈকতে।
পেলে না।
বোসো। আর খুঁজো না।
ওটা খুঁজলেই হারায় মানুষ।
...

এখন ঘুমোলে আর ভাল স্বপ্ন দেখি না।
কার থেৎলানো মাথা
কার নগ্ন নিস্প্রাণ শরীর
কিছু বিকৃত মুখ, শব্দ ভীড় করে আসে মাথায়।
মাঝরাত্তিরে ঘুম ভেঙে যায়।
...

শুধু কথায় চিঁড়ে ভেজে না,
নাই ভিজল।
এক মাঘেতে শীত যায় না,
নাই বা গেল।
কানা মামাই নাকি ভাল,
না হয় হল।
...

সব হারালো?
বেশ হয়েছে।

সব ছড়ালো?
খুব হয়েছে।
...

যত জীব যথা তথা, তত শালিগ্রাম শিলা।
সাধু সাক্ষাৎ দেবতা, কি কাজ পূজে শিলা।।

বাঙালী জাত প্রতিবাদের ক্ষমতা হারিয়েছে। তাই কি? খিস্তি-হুমকি, ভজন-ভাষণ, নীলছবি-আঁতেল ছবি, খুন-ধর্ষণ সব হজম হয়ে যাচ্ছে নির্বিকার। কি এমন হজম শক্তি আয়ত্ত করেছে বাঙালী? না, কোনো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গীর কথা বলছি না। বলছি সামাজিক মানসিকতার দিক থেকে।
...

আলো অন্ধকারে অনেকটা হাঁটলাম।
জলে স্থলে অন্তরীক্ষেও ভাসলাম।

এভারেস্টে না চড়লেও বা ভারত মহাসাগরের মাটি না ছুঁলেও
সারা জীবন অনেক উঠলাম নামলাম।
...

মন জানে তো সব কিছু, জেনেও পাপ কাজ করে।
কিসের মঙ্গল তাতে, যদি দীপ হাতে কুয়োয় পড়ে।।

   তখন আমরা কাঁচরাপাড়ায় থাকি। রেলের কোয়াটার্সে। দূরে দূরে এক-একটা কোয়াটার্স, সেই ব্রিটিশ আমলে বানানো। কাঠের সিঁড়ি, ইয়া উঁচু ছাদ। সামনে ফাঁকা জমি, তারপর রাস্তা- ফার্স্ট এভিনিউ, সেকেন্ড এভিনিউ.. এরকম সব নাম।
   বিকাল বেলা। আমি দোতলার বারান্দায় বসে কিছু একটা পড়ছিলাম। ক্লাস ইলেভেনে পড়ি, গরমের ছুটি চলছে তখন।
...

কবীর এ জগৎ কিছুই না, এই তিতো এই মিঠা।
কাল যে সেজেছিল অলঙ্কারে, চিতাতে যায় আজ দেখা।।

কে বলেছিল, "ভালোবাসো"
তুমি বললে, "কাব্য"
কে বলল, "মারো"
তুমি বললে, "বাস্তব"

কে বলেছিল, "ক্ষমা করো"
তুমি বললে, "হয় না"
...

প্রভু তোমার অস্তিত্ব সব দেহ মাঝে লীন। যথা সবুজ মেহেদিতে লাল রঙ সমাসীন।।

মনে রেখো, তুমি রেসের ঘোড়া।
তোমার থামতে নেই।
যুদ্ধের নও, দূতের নও,
কোন শৌখিন মালিকেরও নও,
তুমি রেসের ঘোড়া।
...

যেভাবে তুমি সবার কাছে, সেভাবে কি নিজের কাছেও?
জানতে ইচ্ছা করে।
নাকি তোমার বুকের কোণায় লুকানো আছে খাঁচা,
আর তার ভিতরে আস্ত একটা বাঘ!
...

তোমার মত মুখ আমি অনেক দেখেছি ছোটবেলা থেকে,
রাস্তায়, মন্দিরের সামনে, জানলায়, কলের লাইনে - সব মনে নেই,
মুখটা মনে আছে।
...