Skip to main content

রোদ স্বপ্ন

সাধারণত এরকম স্বপ্ন দেখি না। কি জানি কেন দেখলুম। ফ্রয়েড বলবে, ওই যে তুমি শোয়ার আগে রমিলা দিদির মহাভারতের কথা পড়ছিলে তাই হয় তো হবে।
          সে হবে।
          কিন্তু স্বপ্নটা হল, আমি দেখলাম, ভীষ্ম, মানে আমাদের মহাভারতের ভীষ্ম গো, স্টেশানের পাশে যে কচুরীর দোকানটা আছে না, সেই দোকানের বেঞ্চে বসে, কচুরী খাচ্ছেন, বেঞ্চে পাশেই এক গ্লাস দুধ চা রাখা।
...

আসল 'আমি'

মাঝে মাঝে ভীষণ ইমোশনাল হওয়াও
প্র্যাক্টিকাল হওয়া

খুব রাবিশ, স্টুপিড, সেন্টিমেন্টাল কথাগুলোও
ভীষণ প্র্যাক্টিকাল কখনও কখনও
...

আব্বুলিশ!

মন খারাপের চোখের দিকে তাকাতে নেই
মন খারাপ কোলে উঠে বসে 
        লোম ফোলানো বেড়ালের মত
                   বলে, আদর করো
...

বাচ্চা হচ্ছে না কেন?

এই তোদের এতদিন হল বাচ্চা হচ্ছে না কেন রে? দেখ ওদের তো তোদের পরে বিয়ে হল, তা-ই হয়ে গেল, তোদের?

            প্রশ্নটা স্বাভাবিক। কারণ আমাদের সমাজে সীমারেখার বোধটা খুব অস্পষ্ট। কোন প্রশ্ন করতে হয় আর কোন প্রশ্ন করাটা অস্বাভাবিক, সেটার বোধ আমাদের খুব একটা স্পষ্ট নয়। আমার কি জানার অধিকার নেই? নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু কৌতুহলের অধিকার নেই।
...

বিশ্বাস মানেই সুখ

সুখ একটা বিশ্বাস। বিশ্বাস করলে আছে, না করলে নেই। তুমি সুখ খুঁজবে কোথায়? এই পাড়, ওই পাড়, হালে, বৈঠায়, স্রোতে... আসলে সুখ নেই কোত্থাও। সুখ মানে বিশ্বাস।

          লটারির টিকিটগুলো সাজিয়ে, মা তারা, লোকনাথ বাবার ছবিতে ধূপ দিয়ে যে লোকটা চেয়ার পেতে বসল, সে সুখ বিক্রি করবে এখন। যে কাটবে, সে বিশ্বাস করবে, হয়তো এবার ভাগ্য ফিরবে। এই বিশ্বাসেই তার সুখ। টাকা পেলেই যে সুখী হবে, সে এখনও নিশ্চিত জানে না তো। তবু সে কিনবে। সে বেচবে সেও জানে না তার টেবিলে কার ভাগ্যের সংখ্যা রাখা। তার বিশ্বাস কেউ না কেউ পাবে। নইলে এর তার চোখের দিকে তাকাতে এলেম লাগত।
...

ছবি

টোটোর পিছনে নিরুদ্দিষ্ট ব্যক্তির ছবি। মোবাইল নাম্বারটা লাল দাগ দিয়ে কাটা।
চালককে জিজ্ঞাসা করলাম, কার ছবি?
...

অবসেসান

রমাকান্তর আজকের বক্তৃতার বিষয়, "মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ"।

কিন্তু গাড়িতে যেতে যেতে মনটা ভীষণ খচখচ করছে রমাকান্তর। কেন জানি মনে হচ্ছে বাইরের দরজার তালাটা একবার টেনে দেখলে হত। তালাটার একটু গোলমাল আছে। চাবি ঘুরে যায়, কিন্তু তালাটা গলা ঝুলিয়ে কাত হয়ে খুলে যায়। এতক্ষণে কি খুলে গেছে তবে? কেউ ঢুকেছে? যে ঢুকেছে সে চোর না মানুষ?
...

দরদ থাকলে

মিষ্টি কথা ডানা মেলে ডালে গিয়ে বসল।
          সূর্যের আলো এসে পড়ে বলল, এক্ষুণি শুষে নেব তোকে, তুই শেষ হবি আমার হাতে, আমি সত্য।
           মিষ্টি কথা বলল, আমায় শুষে নিতে পারো, আমার যে মাধুর্য প্রাণে জাগিয়ে এলুম, তাকে শুষে নেবে কিসে? শিশিরের গায়ে যে মুক্তো জাগাও, সেও তো মিথ্যা তবে!
...

Katyar Kaljat Ghusali

কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিলো গো.... ঠিক তা না... হৃদয় চিরে প্রবেশ করলে...
     এটা সিনেমটার নাম শুধু না, সিনেমাটা নিয়ে বলতে গিয়েও আমার একই অনুভব। সত্যিই হৃদয় ভেদ করে প্রবেশ করল। বহুদিন পর মনে হল শুদ্ধ জলে স্নান করিয়ে গেল অন্তর্লোক কেউ। 
     সিনেমার মধ্যবিন্দু - সংগীত। উচ্চাঙ্গসংগীত। আর একটি দর্শন, তা হল শিল্পীর সব চাইতে বড় শত্রু হল তার অহংকার, যা তার শিল্পকে নষ্ট করে দেয়। 
...

বাদী উপাখ্যান

একজন বলল, আয়না সত্য। আরেকজন বলল আয়নায় ভাসা যা কিছুর সবের ছায়া তারাই সত্য। নইলে তোমার আয়না কেবল কাঁচ। প্রতিবিম্ব দেখলেই যে না আয়না!
          আরেকজন এসে বলল, আয়না সত্য, প্রতিবিম্ব সত্য, দুই-ই সত্য, তবে যে আয়না আর প্রতিবিম্ব দুই-ই দেখছে সে মূল সত্য। 
          তিন দলের লোক হল। একজন হল আয়নাবাদী। একজন হল প্রতিবিম্ববাদী। একজন হল দ্রষ্টাবাদী। 
...

এত জল, এত জল

এত বৃষ্টি বহুকাল হয়নি। সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে যেন।

    পাহাড়ের কোলে ছোটো মন্দির। একটু দূরে নদী। নদী পেরিয়ে গেলেই গাঁ। পুরোহিতের গাঁ। 
    পুরোহিত প্রদীপটা নেভানোর আগে, ভালো করে আবার গোবিন্দের দিকে তাকালো। স্থির, কালো চোখ। পাথর গেঁথে এমন চোখ বানানো যায়! 
    পুরোহিত প্রদীপটা তুলে গোবিন্দের চোখের মণির দিকে তাকালো। উত্তর নেই। গোবিন্দ স্থির তাকিয়ে। অপলক। 
...

তোমার নাম 'অসুবিধা'

আমি তোমার নাম দিলাম 'অসুবিধা'। আমার কলেজের দিন শেষ। আমি চিনছি জীবন। তুমি তখন সেকেন্ড ইয়ার। আমাদের এক কমোন বন্ধু নিয়ে এলো তোমায় একদিন। জৈব রসায়নের একটা জটিল বিষয়ে তুমি আটকে। আমিই নাকি পারব তোমায় দিতে সমাধান। দিলামও। তুমি তাকিয়ে থাকলে। আমার প্রথম অনুভব হল আমার অসুবিধা হচ্ছে। তুমি তাকালে আমার অসুবিধা হচ্ছে। এ অসুবিধা সুবিধার চেয়ে সহজ, কিন্তু সুবিধার চেয়ে তীক্ষ্ণ।
          এরপর অবধারিত ভাবেই আবার যোগাযোগ হল। বুঝতে দেরি হল না তুমি আমার অসুবিধার কথা বুঝে গেছ।
...

যা কিছু লুকালে

যা কিছু লুকালে আড়ালে
যে মন তা জানে
সে মনকে লুকাবে কোথায়? 

জয় মা

নতুন বউকে নিয়ে মায়ের মন্দিরে ঢুকল নতুন বর। নতুন বউ হাঁটু মুড়ে বসে মাকে অনেকক্ষণ ধরে প্রণাম করল। বর আড়চোখে ভুরু কুঁচকে দেখতে দেখতে ভাবল, এত ভক্তি! বাহ্।
             ফুলশয্যার রাত। বউকে বর গদগদ স্বরে জিজ্ঞাসা করল, হ্যাঁ গো, জানো তো, মা ভীষণ জাগ্রত আমাদের! পটলাদার ছেলে হচ্ছিল না। খালি মেয়ে, খালি মেয়ে। শেষে মায়ের কৃপায় ছেলে হল। নাম রেখেছে কালীচরণ। সেকেলে নাম। কিন্তু ভীষণ আধুনিক ওরা।
             বউ বলল, সে তো বুঝতেই পারছি।
...

শান্ত শিব

ট্রেনে পিছনের একটা পা কাটা কুকুরটা রেললাইনের পাশের নির্জন শিব মন্দিরের চাতালে শুয়েছিল সন্ধ্যেবেলা।
          ভক্ত এলো। এসেই এক লাথি মেরে বলল, ভাগ শালা!
          কুকুরটা কাঁপা কাঁপা শরীরটা নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে, ঘুমের মধ্যে আচমকা ধাক্কাটা সামলিয়ে, ধীরে ধীরে নেমে গেল।
...

প্রাণহীন মানুষ

অনেক রাত। ট্রেনটা দাঁড়িয়ে গেল। পাশেই একটা মালগাড়ি দাঁড়িয়ে। ইঞ্জিনটা পড়ল সামনে। একা চালক। দুজন নেই কেন? সাধারণত দুজন থাকেই? নেই। চারদিক অন্ধকার ঘুটঘুটে। কোনো বাড়ি ঘরদোর নেই। আলো নেই। এক আকাশ তারা। নীচে দাঁড়িয়ে সর্পিল রেললাইনে চালক একা।
          ট্রেন ছাড়ল আমাদের। মালগাড়ির এক একটা প্রাণহীন বগি পর পর দাঁড়িয়ে। আমরা পেরিয়ে যাচ্ছি। পেরিয়ে গেলাম দেখতে দেখতে। জানলায় মাথা রেখে যতক্ষণ দেখা যায় দেখলাম। মালগাড়িটা দাঁড়িয়েই।
...

ডেসিবেলি ভক্তি

স্বামীজি বলেছিলেন, ধর্মের সার চিত্তশুদ্ধি।
          এর উদাহরণ স্বামীজি হয় তো নিজেও আজীবন দেখেছেন কিনা সন্দেহ হয়। বাঙালির ধর্মের সার হল শব্দ উৎপাদন। ঢাক, ঢোল, কাঁসা, শাঁখ, খঞ্জনি, মন্ত্র, হুলুধ্বনি, আধুনিক জগতে মাইক।
          শব্দ না হলে দুর্গা, কালী, কার্তিক, জগদ্ধাত্রী, বিশ্বকর্মা যেই হোন কেন তিনি তুষ্ট হন না, এমন কথা নিশ্চয়ই কোথাও লেখা থাকবে। এত শাস্ত্র এক জীবনে পড়ে শেষ করা তো যায় না, তাই হয় তো হবে আমার পড়া হয়নি। থেকে থেকেই কোথাও নানাবিধ শব্দ উৎপন্ন হলেই বুঝি কোথাও দেবতার আগমন হয়েছে।
...

ঝক্কি

অনেক রাত। বাঁধা পাঁঠাটার ঝিমুনি এসে গিয়েছিল। হঠাৎ পাশ থেকে কে যেন ঠেলা মেরে বলল, অ্যাই...
          পাঁঠাটা ঘোলা ঘোলা চোখে তাকিয়ে বলল, আমায় বলছেন?
          কুকুরটা পাশে বসে বলল, কাল তবে জবাই?
          পাঁঠাটা আবার চোখ বুজে বলল, মনে তো হচ্ছে। 
...

ত্রিযামা ও জগদ্ধাত্রী

"আমি এখন তোমায় অল্প অল্প বুঝতে পারছি"

            "তাই হয়, আমারও বিয়ের বেশ কয়েক বছর পর মনে হত তোর দিদাকে অল্প অল্প করে বুঝতে শুরু করলাম। এখন আরো বেশি বেশি মনে হয়। তোর দিদার সারাদিনের টুকিটাকি ঘটনা, এই যেমন ধর রান্নাঘরে রান্না করতে করতে বাসনগুলো মেজে ফেলা, উনুনে আঁচ দিয়ে সামনে বসে উদাস তাকিয়ে থাকা, অঞ্জলি দিতে গিয়ে চোখে জল আসা, আমাদের বকার ঝাঁঝে কিছু অপ্রিয় সত্যি বলে ফেলা, আবার সেগুলো ঢাকার চেষ্টা করা…. কত কি…."
...

রাতের পড়ুয়া

সব জিনিসের একটা সীমা থাকে তো। গোপাল সামন্ত রোজ কলকাতা ঠেঙিয়ে অফিস করে এসে চাট্টি ডালভাত খেয়ে রাতে শোবে, অমনি রাত একটা বাজলেই পড়ার ঘরে টুক করে টেবিল টানার শব্দ। মানে উনি এলেন। তারপর ঘস ঘস করে বইয়ের পাতা উল্টানোর শব্দ। মানে উনি পড়ছেন। আলো জ্বালতে লাগে না। এমনিই অন্ধকারে পাতার পর পাতা পড়ে যান। গোপাল সামন্তের মাথাটা গরম হয়ে যায়। মাঝে মাঝে আবার খুক খুক করে হাসে। 'বিন্দুর ছেলে' পড়ে তো ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে কান্নার শব্দও পেয়েছে গোপাল সামন্ত বিছানায় কোলবালিশে ঠ্যাঙ তুলে শুয়ে শুয়ে।
...

এক নটীর গল্প

কোনো এক দেশে এক নটী ছিল। তার অভিনয়ে ধার কতটা ছিল বলা শক্ত, কিন্তু জিভে ছিল প্রবল ধার। সে সত্য মিথ্যা, বাস্তব অবাস্তবের পরোয়া কর‍ত না, সে খালি বলত রাজার মঙ্গলেই আমার মঙ্গল। এমন রাজভক্ত নটী দেশে কেন, বিদেশেও দুর্লভ। রাজা তাকে তাই অনেক অনেক পুরষ্কারে ভূষিতও করেছিলেন। সে সব পুরষ্কার নিজের বসার ঘরে সাজিয়ে রাখত। আর কেউ দেখা করতে গেলেই বলত, এ আমার সত্যবচনের পুরষ্কার। স্বীকৃতি। কেউ যদি বলত, সত্য কি? সে বলত, রাজার ভালোতেই আমার ভালো দেখা। এই পরম সত্য। কেউ যদি জিজ্ঞাসা করত, রাজার ভালো যদি প্রজার ভালোর বিপরীতে যায়? সে বলত এ তত্ত্বই মিথ্যা। রাজার ভালোতেই প্রজার ভালো। নিন্দুকে তাকে বলত অন্ধ। নটী নিন্দুকদের বলত দেশদ্রোহী।
...

নানক

নানককে নিয়ে অনেক গল্প। একটা গল্প আছে বাচ্চা নানক ঘরে বসে দেখছেন অনেক লোক, অনেক উপাচার নিয়ে চলেছে রাস্তা দিয়ে। নানক দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোথায় যাচ্ছ গো?
          তারা বলল, বৃষ্টি হচ্ছে না তো অনেকদিন। আমরা চাষ করতে পারছি না। তাই আমরা ঈশ্বরের আরাধনায় যাচ্ছি বৃষ্টির জন্য।
          নানক শুনে বললেন, বেশ, তোমরা দাঁড়াও, আমিও যাব।
...

সে আসবে তো? 

যে দলিত মেয়েটা ছাই হয়ে গেল,
ধর্ষণের পর
ভুল বললাম
যে দলিত মেয়েগুলো হারিয়ে গেল, ধর্ষণের পর
...

মৃত্যু যার নাগাল পায় না

মুদির দোকানটা আমার স্কুলে যাওয়ার রাস্তায় পড়ত
বয়ামে অনেক কিছু থাকত
     আমার চোখে পড়ত শুধু চানাচুর
দোকানের কাকু যে
        সে সবাইকে চিনত
                নামে নামে চিনত
...

সুহৃদ

গোঁসাই বলল, দরদীকে খোঁজো, নইলে সব ফাঁকি। ফাঁকিতে কি জীবন চলে?
          একজন বলল, দরদী পাই কই?
          গোঁসাই বলল, দরদ দিয়ে তাকা, দরদ দিয়ে শোন, দরদ দিয়ে ছোঁ। দেখ দরদের ঝুনঝুনি বাজছে জগতে।
          সে বলল, পেলাম তো শুধু আঘাত গোঁসাই…. দরদ কই?
...

কাজের মানুষ

প্রাণের মানুষ আর কাজের মানুষ। কাজের মানুষ দরকারের মানুষ। সে দরকার যতই কিনা গুরুত্বপূর্ণ হোক, তার একটা মেয়াদ আছে। কিন্তু যে প্রাণের মানুষ সে যতই কিনা অকাজের হোক, গোলমেলে হোক, যন্ত্রণাদায়ক হোক না কেন, তার মেয়াদ আর ফুরোবার নয়। অনেক মায়েরা যেমন ভীষণ জ্বালাতনকারী সন্তানকে 'পেটের শত্রু' উপাধিতে ভূষিত করেন, এও তেমন।
          এই যেমন ধর্ম দিয়েই শুরু করা যাক। এই যে এত এত অবতার, গুরু, মন্দির ইত্যাদিকে অনেকে আমরা প্রাণের সঙ্গে জুড়িয়ে রাখি, নাস্তিকেরা আবার যেমন নানা রাজনৈতিক দার্শনিক, নেতাদের ফটোতে মালা দিয়ে প্রায়ই ভালোবাসা জানান, এতে দোষের কিছু আছে?
...

রত্নামাসি

রত্নামাসির যা ছিল অন্তর জুড়েই ছিল। রত্নামাসির দুটো ছোটোঘর জোড়া সংসার, স্বামী, দুটো বাচ্চা ছেলে, একটা খাট, একটা আলমারি, গ্যাসওভেন, একটা ড্রেসিংটেবিল, দুটো সাইকেল, একটা লেডিস, একটা জেন্টস - সব রত্নামাসির অন্তর জুড়েই ছিল। দুটো কি তিনটে বাড়ি কাজ করত রত্নামাসি। হাসিমুখ, বারবার পরা শাড়ি, মাটি ছুঁয়ে যাওয়া ঢালু হয়ে আসা চটি, একটা কালো ছাতা, কি একটা তেলের গন্ধ - এই তো রত্না মাসি।
          শীতেরবেলা গেছি কয়েকবার। খোঁজ নিতে - কাজে এলে না কেন?
...

পারবো

কাউকে চিনতে পারেন?

না

এটা কে? এই.. বড়.. এই ছোটো ছেলে... চিনতে পারেন?

না....

বাঁচতে ইচ্ছা হয়?
...

পরিবর্তন

    দোকানে তালা লাগিয়ে, তালাটা একবারও টেনে দেখার ইচ্ছা যখন হল না, তখন আর বাড়ি না গিয়ে বড় রাস্তার মোড়ে, উজ্জ্বল হলুদ আলোটার নীচে বসে, কুকুরগুলোকে ডাকলেন। 
          কুকুরগুলো পরিচিতের মত ঘিরে বসল যখন, উনি ব্যাগ থেকে দুটো বিস্কুটের প্যাকেট খুলে, বিস্কুটগুলো ছড়িয়ে, কারোর কারোর গায়ে হাত বুলিয়ে বললেন, খা। 
...

কন্ট্রোল কাউকে দিও না

আমার কিশোর বন্ধুরা, এ লেখা বিশেষ করে তোমাদের জন্য। আমি পর পর কয়েকটা আত্মহত্যার খবর পেয়ে একটু বিচলিত, তাই কিছু কথা একটু আলোচনা করতে চাই। দেখো, নেশা শব্দটা তোমরা শুনেছ। আমি এই নেশা নিয়েই কয়েকটা কম আলোচিত দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। 
          দেখো, তোমরা শুনেছ যে মানুষ সিগারেট, মদ, গাঁজা এরকম নানা নেশা করে। তোমরা জানো এগুলো বাইরে থেকে মানুষ কিনে বা জোগাড় করে নিজের নেশার ইচ্ছাকে তৃপ্ত করে। এখন একটু ভেবে দেখো তো, নেশা আর অভ্যাসের মধ্যে ঠিক পার্থক্যটা কি? নেশার জিনিসটা আমার উপরে তার কন্ট্রোলিং পাওয়ার পেয়ে বসে। এটাই হল সব চাইতে খারাপ দিক নেশার। বাকি শরীরের উপর কি প্রতিক্রিয়া সেই নিয়ে আমার এখানে আলোচনা করার দরকার নেই। আমার কথা হল যে সেটা তোমার উপর তার কন্ট্রোলিং পাওয়ারটা পেয়ে বসে। তুমি সম্পূর্ণ তার কন্ট্রোলে চলে যাও। 
...

রাধা-গোবিন্দ

রাধা বলল, হ্যাঁ গো, এ যে পুজো সম্পূর্ণ না করেই গেল চলে!
          গোবিন্দ বলল, ওই যে দেখো, একটা পাখির শাবক পড়েছে মাটিতে। নীড় ছেড়ে। বেড়ালে খাবে যে ওকে। তাই সে দৌড়ালো পুজো ছেড়ে।
          রাধা বলল, তুমি সে পাখিকে পড়তে দিলে কেন?
....

ভুল হয় না জোনাকিদের

মা আড়চোখে দেখছে মাঝে মাঝে। বারণ করছে না। ধীরে ধীরে বুঝে যাবে। জোনাকিরা ধরা দেয় না। তামাকের উগ্র গন্ধ সহ্য করা অভ্যাস এখন। যে নাক আগে যোজন দূরের হাসনুহানার অস্তিত্বে সাড়া দিত।
          বাচ্চাটা কোলের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। তার ছেঁড়া প্যান্টের উপর বসে একটা জোনাকি এখনও দব দব করে জ্বলছে।
....

একাকীত্ব নেই তো

একটা কুকুর কিম্বা বেড়াল পুষতে পারো তো, তবে তো একা লাগে না। 
কিন্তু যে আমায় ভালোবাসতে বা আমার অনুগত হতে বাধ্য, তার ভালোবাসা বা আনুগত্য পেতে যে আমার লজ্জা বোধ করে। যে আমায় প্রত্যাখ্যান করার স্বাধীনতা পায় না, যার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমার আনুগত্য স্বীকার করা ছাড়া তেমন কোনো প্রশস্ত পথ নেই, তাকে ঘাড়ে, পিঠে বয়ে কি করব? সে বরং আমায় সত্যিই একা করবে। স্বয়ং ঈশ্বর যখন আমায় তাঁকে স্বীকার করা বা অস্বীকার করার স্বাধীনতা দিয়েছেন, তখন কাউকে কোনো কিছুতেই বাধ্য করতে আমার রুচিতে বাধে।
....

কত্তাবাবা ও ছাগল

টুপ করে ঢিলটা ডুবে গেল। ছাগলটা লাফ দিয়ে বলল, আরেব্বাস! কত্তা আপনার কি টিপ! এক টিপে ফড়িংটাকে ঘা দিলেন!
          কত্তা বলল, আগে এক টিপে বাঘ মারতাম রে। তখন তো তুই জন্মাসইনি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা ঘোড়া, সিংহ এই সব নিয়ে হাঁটত। ছাগল কি কেউ নিত রে!
          ছাগলটা উদাস হয়ে বলল, তাও...
....

এই মানুষে সেই মানুষ আছে

- মশায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখছেন? 
- না, হাওড়ার ব্রীজের উপর বামাখ্যাপা চড়ে বসে মা মা করছেন, তাই দেকচি... যত্তোসব… 
- আহা, চটেন কেন? চা কি ঠাণ্ডা হয়ে গেছে? 
- কেন? 
...

চিহিরো

চিহিরো গেল জয়পুরে
জিভের ফোঁড়া নিয়ে
ডাক্তার দিল ফোঁড়া কেটে
লেজার কাঁচি দিয়ে

  হেঁটে হেঁটেই ওটিতে ঢুকল
সব্বাই দেখে অবাক
এত সাহস চিহিরো পালের
সবাই বলে, কেয়া বাত! 
...

নিজের চিত্তের প্রসাদ

এমন একটা লেখা লিখুন যাতে কেউ বুঝতে না পারে। মানুষ সহজে বুঝলে সহজে ভুলে যায়। সহজে পেলে মান কম দেয়। সহজ না, জটিল কিছু লিখুন।
          এইবার? এই যে এতবড় জটিল পৃথিবী, এত এত প্যাঁচাল, এত এত ঝুটঝামেলা, এই কি শেষ? না তো। এক মেলা লোক। হাজার রকম আলো, হাজার রকম মানুষ, হাজার রকম আমোদ, সমস্যা, ব্যবসা, উদ্দেশ্য। এ সবের শেষে কি থাকে? ভাঙা মেলা। তারপর শূন্য মেলা।
          যে ট্রেন হিল্লিদিল্লি ঘুরে এত এত রাস্তা পেরিয়ে যাত্রা শেষ করল, তাকেও কারশেডে গিয়ে বিশ্রাম করতে হয়।
...

ভালোবাসা মানে

ভালোবাসা মানে বুঝতে গেলে
রাতের অন্ধকারে এসে দাঁড়াও
হাস্পাতালের সামনে
দেখো
ভালোবাসা মানে উদভ্রান্ত চোখ
....

শুকনো নদী

শুকনো নদী। রাতের তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, আর কতদিন?

কেউ উত্তর দিল না।

ভোরবেলা এলো মেঘ। বৃষ্টি শুরু হল মুষলধারে। নদী ভাসল জলে।

রাতে তারাদের ছায়া পড়েছে উচ্ছল নদীর বুকে। তারা ফিসফিস করে নদীর কানে কানে বলল, আমরা তোমার মোহনা অবধি দেখতে পাই, জানো, তোমার রহস্য বলে কিছু নেই!

নদী বলল, মোহনায় পৌঁছানোর সুখ পাও কি?

একদিন জিতে যাবে

সারারাত আকাশই পারে না সব তারা চাঁদ এক জায়গায় রাখতে, এদিকে ওদিক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নেয়। আর তুমিই নাকি সব গুছিয়ে এক জায়গায় রাখবে। যতসব পাগলের মত কথা।

দুজনে

বাচ্চাটা দুটো তুবড়ি, আর চারটে ফুলঝুরি জ্বালানোর পর মায়ের মুখের দিকে তাকালো। বুঝল আর নেই। মা তাকে নিয়ে ছাদে উঠল। কত কত বাড়িতে টুনি লাইট লাগানো। সামনের পুকুরটা জ্বলজ্বল

কাকটা

কাকটা গঙ্গার পাড়ে কিছু একটা খুঁটে খেতে চাইছে। বারবার কাদায় পা আটকে যাচ্ছে। কি সেয়ানা দেখো, এক দুবার খুঁটে খেতে না খেতেই দু তিনবার লাফিয়ে নিচ্ছে, যাতে কাদায় পা না জমে যায়। পা যদি একবার কাদায় জমে যায়, তবে ডানায় যত শক্তিই থাকুক, পা দুটোকে যে কিছুতেই টেনে তুলতে পারবে না। মাটিতে পায়ের ধাক্কা দিয়ে, ডানায় হ্যাঁচকা টান মেরেই না আকাশে ওড়া!
             কি চালাক দেখো, সে কাদার মধ্যে কি একটা খুঁটে খেতে খেতে চারদিকে বারবার তাকিয়ে নিচ্ছে। যেন কেউ এসে চেপে না ধরে তাকে, ছোবল না দিয়ে যায়, ঢিল না মারে।
....

কাজরি

বৃষ্টি এলো হঠাৎ। বেমানান লাগল না। যেন আসারই ছিল। ছোটো স্টেশান। ঘাস উঠেছে নেড়া হয়ে সদ্য চুল গজানো মাথার মত এখানে সেখানে অল্পস্বল্প। মুখোমুখি দুটো প্ল্যাটফর্ম ভিজছে। দিগন্ত ছোঁয়া সবুজ মাঠ উৎফুল্ল হয়ে আকাশকে ডাকছে বুকের উপর, এসো।
          ট্রেনের জানলার উপর হাত রেখে জাহ্নবীও বলেছে, এসো তবে, ভালো থেকো, সাবধানে যেও।
...

শ্যামাপোকার আব্বুলিশ

মানুষটা শ্যামাপোকা খুঁজতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে লাগল। ফোন করলে ধরল না। লোক পাঠালে ধরা দিল না। এ পাড়া, সে পাড়া ঘুরে কোথাও শ্যামাপোকা না পেয়ে লোকটা একটা রাস্তার মোড়ে বসে পড়ল, হাঁটুতে মাথাটা গুঁজে। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে সাড়া দিল না।
          তার ছোটোবেলার সব শ্যামাপোকারা ভিড় করে তার সারা শরীর মন ছেয়ে গেল। বাবা, মা, ভাই, বোন সবার গায়ে শ্যামাপোকা। সবাই নতুন জামা পরেছে। না, সবাই তো না, বাবা আর মায়ের নতুন জামা, শাড়ি নেই। তারা তখন গরীব।
...

কচুরি আর ছোলার ডাল খাচ্ছিল

রামকৃষ্ণদেব মাকে চাক্ষুষ হাঁটতে, চলতে দেখতেন এসব তো আমরা জানিই। কিন্তু আরো কত কথা অজানাই থেকে যায়। সে সব কথা আমরা না লিখলে কে লিখবে?
          ছবিতে যিনি আছেন, মানে আরাধ্যা পাল, তিনি সকালবেলা ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। ফিরে আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। কথায় কথায় আমি জিজ্ঞাসা করলাম যে সকালবেলা কালী ঠাকুর কি করছিল? ওরকম দাঁড়িয়েই ছিল?
          সে সঙ্গে সঙ্গে একটুও না ভেবে বলল, না না
,,,

শূন্য খোল ঝিনুকের মত

আমিও কি মিথ্যা মিথ্যা
একটা সত্যের খোঁজ করছি না?
আলগা বুকের পাঁজরে
        আর কান্না ধরবে না জেনেও?
....

পাঁঠাবিলাস

গুটিগুটি পায়ে গিয়ে আবার হাজির ঠাকুরমশায়ের কাছে। তিনি আড়চোখে দেখে কথা বললেন না। জবার মালাগুলো আলাদা করছেন। পুজো শুরু হতে বেশি দেরি নেই। এই হম্বিতম্বি গ্রামে এইটাই সব চাইতে বড় কালীপুজো। লোক হয় মেলা। দু'দিন খাওয়ানো হয়। একদিন খিচুড়ি। পরেরদিন লুচি। কিন্তু নিরামিষ। এই কালীকে অনেকে ওইজন্যে নিরামিষ কালী বলে। বলি বন্ধ প্রায় বছর পঁচিশেক হল। গ্রামের জমিদার হরিকান্ত একবার স্বপ্ন দেখেছিলেন মা চলে যাচ্ছেন হেঁটে হেঁটে, পিছনে সার দিয়ে পাঁঠার দল। হরিকান্ত কেঁদে মায়ের পায়ে পড়ে বলেছিল, মা তুই কই যাস?
          মা বলেছিলেন, কাশী। দেশ কি তুই পাঁঠাহীন করবি হরিকান্ত?
...

 তবে উপায়?

লক্ষ্মী আর কালী। পূর্ণিমা আর অমাবস্যা। একজন শ্রী, সৌন্দর্য, সুষমা, শান্ত, স্থিতিস্বরূপা। একজন উগ্র, ভয়ংকরী, বীভৎসতা, ধংসস্বরূপা। 
          'তাও' দর্শনে সাদাকালোর এক মিশ্রণে জগতকে দেখতে বলে। এও তাই। যদি বলো জগত শুধুই শ্রীময়, তবে অর্ধসত্য। যদি বলো জগত কেবলই বীভৎস, সেও অর্ধসত্য।
...

ওদের জন্য

অবশেষে নিবারণ যখন স্কুলের মাস্টারির চাকরিটা নিল, তখন পড়িমরি ঠাকুমা আর সহ্য করতে না পেরে শয্যা নিলেন।
    কারণটা ভেঙে বলি। নিবারণ ঘোষেদের ওঝা বংশ। শোনা যায় নিবারণদের কোনো এক পিতৃপুরুষ, চোল বংশের পুরোহিত ছিলেন। তার কানে কিছু সমস্যা ছিল। দীক্ষার সময় ঠিক মন্ত্র শুনতে পাননি। কিন্তু পরম নিষ্ঠা নিয়ে জপের জন্য শিবকে না পেলেও ভূতসিদ্ধ হয়েছিলেন। সেই থেকে নিবারণদের ভাগ্য ফিরে যায়। কি করে তারা ঘোষ হল আর এই বাংলায় এলো সেও এক ভৌতিক কাণ্ড। সে নিয়ে কারোর স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই, কিন্তু শোনা যায় যে কোনো এক পূর্বনারী (পূর্বপুরুষ যদি হয় পূর্বনারী হতেই বা দোষ কি!) নাকি এক ব্রহ্মদৈত্যের সঙ্গে এ দেশে এসে ঘর বেঁধেছিলেন। সেই থেকেই তারা এই হুড়ুমকুণ্ড গ্রামে এসে আছেন। তারকেশ্বর থেকে বেশি দূরে নয় এ গ্রাম। 
....

মান আর হুঁশ

 “ — মল্লিক, আমার খেতে বেলা হয় বলে, রাঁধবার বামুন ঠিক করে দিছল। একমাস একটাকা দিছল। তখন লজ্জা হল। ডেকে পাঠালেই ছুটতে হত। — আপনি যাই, সে এক।…. এই অবস্থা যাই হলো, রকম-সকম দেখে অমনি মাকে বললাম — মা, ওইখানেই মোড় ফিরিয়ে দাও! — সুধামুখীর রান্না — আর না, আর না — খেয়ে পায় কান্না!”
          এ কথাটা এক স্বাধীনচেতা মানুষের। যে ভালোবাসার দান নেয়। যে ন্যায্য উপার্জন নেয়, কিন্তু নিজের সুবিধার জন্য কারোর কাছে নিজেকে বিকিয়ে দিতে রাজী নয়। 
....

ফিরে আসা

গভীর রাতে দরজায় টোকা।

            বাবা, আমি এসেছি, তুমি কি ক্ষমা করবে আমায়?
          বাবা দরজা খুলে দাঁড়ালো।
          ছেলে মাথা নীচু করে পা ছুঁলো বাবার। বাবা বলল, শুধু আমি না, আমার চোদ্দো পুরুষ অপেক্ষা করছে তুই ফিরে আসবি বলে। ঘরে এসে দেখ।
...

ইচ্ছা

ইচ্ছে ! –ইচ্ছে !
সেই তো ভাঙছে, সেই তো গড়ছে,
সেই তো দিচ্ছে নিচ্ছে।।
সেই তো আঘাত করছে তলায়, সেই তো বাঁধন ছিঁড়ে পালায়–
বাঁধন পরতে সেই তো আবার ফিরছে।।

~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
....

চোদ্দোশাক

ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে নিজের কথাগুলো সব পর পর বলে যাওয়া স্বভাব। মাথাটা উঁচু করে আকাশের দিকে তাকিয়ে অনর্গল এক দেড় ঘন্টা কথা বলে, নাক চোখ মুছে উনি ঘরে এসে বসেন। এ রোজকার স্বভাব। যত না আত্মীয়স্বজন মাটির উপর দাঁড়িয়ে, তার চাইতে অনেক বেশি আকাশে। একজন দূর সম্পর্কের ভাগ্নী ছাড়া কেউ নেই আজ সত্যি বলতে।
          আজ সকালে ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশে থাকা ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছেন, আকাশের দিকে তাকিয়ে, হঠাৎ চোখ গেল সামনের ফ্ল্যাটের ঝুলবারান্দায়, এক কিশোর টুনি লাগাচ্ছে। কি নাম? জানেন না। কারোরই নাম জানেন না। ইলেকট্রিসিটি বোর্ড থেকে রিট্যায়ার করার পর থেকে কাউকে চিনতে ইচ্ছা করে না। কারোর নাম জানতে ইচ্ছা করে না।
...