বসন্তের রঙ
জল্পনা
তুমি আসার পর
অভাব কিছু নেই
কিছু মিটিয়েছ তুমি
কিছু মিটিয়েছে তোমার ছায়া
আরো যদি কিছু থাকে অভাব?
মিথ্যা জল্পনা সে, মায়া
বাইরে এসো
কি কথা বলি?
দরজার ধারে আছি সকাল থেকে দাঁড়িয়ে
সবার আসা যাওয়া বসা ওঠা
দেখছি দু'চোখ ভরে
আরতির ঘণ্টা, দীপের আলো, ধূপের ধোঁয়ায়
সবের আবরণে তোমায় দেখছি
তুমি দেখেছ আমায়?
বক্সা ফোর্ট
সম্পর্ক
"তুমি কতদূরে গেছো?"
প্রজাপতিটা জিজ্ঞাসা করল রেললাইনকে। রেললাইনটার এ মাথা ও মাথা দেখা যায় না। এক জঙ্গলের থেকে বেরিয়ে সে আরেক জঙ্গলে গেছে মিশে। প্রজাপতি তার সাধ্যমত কতদূর উড়ে দেখে এসেছে তো। কিচ্ছু দেখা যায় না, কোথায় ওর শুরু, কোথায়ই বা ওর শেষ।
তবু
শিখা
নদীটা যতটা সম্ভব বুকটা চওড়া করে জেগে
সারাটা বুক দিয়ে জ্যোৎস্নায় ভিজবে বলে
চাঁদের সাথে একা
তার বুকে জল থাকুক
না থাকুক
সে পরোয়া করে না
পরোয়া করে না চাঁদও
প্রয়োজন
সাম্যবাদ কি পুঁজিবাদ না, অবশেষে প্রয়োজনবাদ। আদর্শ, নীতি ইত্যাদির যুগ কোথাও একটা শেষের দিকে। এখন দেখতে হয় আদর্শ বা নীতি কতটা উচ্চ বা মহান না, কতটা ফলপ্রসূ। কারণ, চাই সুখ। আমার প্রয়োজন সুখ। শীতকালে লেপ, রুম হিটার। গরমকালে এসি, কুলার। সকালের চা থেকে রাতের ঘুম – সব আমার প্রয়োজন, আমার সুখ। মাঝে যা আসে সবের মূল সূত্র – সুখের আস্বাদ অথবা ভবিষ্যতের সুখের প্রতিশ্রুতি। আমার স্বপ্ন, আমার ইনভেস্টমেন্ট। আমা
নেশা
তোমার নেশা - ভালোবাসার আগুন।
তুমি জ্বালানী খোঁজো এ বন, সে বন।
কাঠুরের মত বাগানে ঢোকো সন্তর্পণে
শিকারীর লালসায়
জ্বালানী কাঠের জন্য।
আমি ডালে ফোটা ফুল দিতে গেলাম।
নিলে না। ফুল মাটিতে পড়ল লুটিয়ে।
বললে, ডালটা দাও, শুকিয়ে।
আগুন জ্বালব।
পূর্ণ ও অংশ
একটা হাঙর সেদিন সমুদ্রের তলায় ভাসতে ভাসতে বলছিল, আমি সমুদ্র মানি না। আমি ডাঁয়ে বাঁয়ে উপরে নীচে সর্বত্র ঘুরে এসেছি ভায়া। সমুদ্র বলে কিছু নাই।
একটা মাছ সেদিন সমুদ্রের তলায় একটা মরা ঝিনুকের খোলে সমুদ্রের জলে সমুদ্রের জল রেখে বলছিল, এই আমার সমুদ্র। বাকি সবটা মিথ্যা!
একজন কিশোর সেদিন সমুদ্রের পাড়ে বসে একটা আধখানা ডাবের খোলায় সমুদ্রের জল ভরে খেলছিল।
বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ২০১৬
শেষ বগি
তৃষার্ত
রবীন্দ্রপ্রসঙ্গে সুগত বসু
গতকাল সুগত বসুর ভাষণে রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ আসল। বলা হল - সেভাবে দেখলে nationalism নামক গ্রন্থে তিনি যা বলেছেন তাতে নাকি বর্তমান অবস্থায় তাঁকেও anti-nationalist বলা চলত।
কেমোফ্লেজ
আমি কেমোফ্লেজ শিখব
তোমাতে মিশে থাকলেও
যাতে কেউ চিনতেই না পারে
বারবার ফেরে ভুল ঠিকানায়
ভুল দরজায় কড়া নেড়ে
সমীরণদা
হেঁটে বুঝলাম
তোমার সাথে দশ পা হেঁটে বুঝলাম
দশ পা'তেও জন্মাতে পারে
দশ হাজার পায়ের অভিজ্ঞতা
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
লক্ষ যোজন
লক্ষ যোজন পথ পেরিয়েও
পথ জানে না সে কোথায় এলো
জানে পথিক
সে কি হারাল আর কি পেল
বহুজন হিতায় বহুজন সুখায়
“তুমি ঠিক করে দেওয়ার কে?”
বাউল
মন বিষণ্ণ। মন পেলো না পারের খবর। আসা যাওয়া দেখছে সে জনমভর। প্রাণ আর জড়ের মধ্যে কোন চৈতন্যের বাস? কে বাসা করে মানুষের বুকে? কার ইঙ্গিতে বর্ষা বসন্ত নিয়ম করে আসে যায়? মন বোঝে তার গভীরে পাতাল সিঁড়ি, নামলে পরে নামতেই থাকে, নামতেই থাকে, নামতেই থাকে। চোখ কিসের সুখে আপনিই ভরে ওঠে, বুকের ভিতর দুধ ওথলানো, পাওয়া না-পাওয়ায় মেশা কান্না সুখ। কার মুখের আভাস ওই নীলাকাশে আবছা ভেসে ওঠে?
যাওয়া
চলিলাম কিছুদিন নেটলোক ত্যাগী
জঙ্গলে ফিরিব গিয়া হইয়ে বিবাগী
যদি বাঘে নাহি খায়
প্রাণ নিয়ে ফেরা যায়
কথা হবে পুনঃ তবে
নেটলোকে দেখা হবে
ভালো থেকো সুখে থেকো
প্রভুপদে মতি রেখো
আর যদি নাহি ফিরি
বলো সবে হরি হরি
প্রেতলোকে দেখা হবে
কত ছড়া গান হবে
ফেসবুক নাই পাই
হরিগুণ গান গাই
এবে তবে আসি ভাই
শুভেচ্ছা জানায়ে যাই
ঝরাপাতা
ফেরা
হায় রে বোধি হায় রে
("চমস্কী আর পামুক?
ওরাও শেষে নিন্দা দিলেন? এবার লড়াই থামুক!"
~ শ্রীজাত)
নোম চমস্কী করিল নিন্দা
করিল নিন্দা পামুক
বঙ্গকবি লাফায়ে কহিল
তবে তো লড়াই থামুক
হায় রে বোধি হায় রে
পরানুগত্য কি মহীয়সী
দেখিয়া প্রাণ জুড়ায় রে
ভোর হওয়ার আগে
আমার মাঝরাতেই ভোর হল
যেই তোমার কিছু কথা মনে এলো
JNU
অবশেষে চুপ থাকতে পারলাম না। JNU তে যা ঘটছে তার প্রতিবাদ- সমর্থন জটিলতা নিশ্চই আছে। সে ধোঁয়াশা কাটতে সময় লাগবে। লাগুক। আমি আশ্চর্য হলাম, হতবুদ্ধি হলাম অবশেষে দুটো ঘটনায়।
দীর্ঘশ্বাস
তোমার কাছে শান্তি চাব না
দু'দিক
অহংকারের একদিকটা গরম, আরেকদিকটা ছুঁচালো। তুমি একদিকে, আমি একদিকে। তুমি বিঁধছ, আমি পুড়ছি।
অথচ দুজনেই জানি, চাইলেই একে সরিয়ে দেওয়া যায়। দিই না। নিজেদের মুখোমুখি হতে ভয়। সাধারণত্বের বিনয়, মিথ্যা অসাধারণত্বের মুখোশ। সেই মুখোশেই ভরসা।
জানি না তো, আসলে সত্যিই অসাধারণ কে? তুমি না তো?
জীবনপথ
রাত্রি এসে যেথায় মেশে
চিঠি
চিঠি যখন আসে
সেকি পথের খবর আনে?
না তো না
না তো না
সে শুধু
তার সৃজকের কথাই আনে
একের কথা
ভেসে ভেসে
দেশে দেশে
আরেককে বলতে আসে
সে কি শুধুই কথা আনে?
না তো না
না তো না
কয়েক ছত্র তোমার জন্যে
ভ্রমের ভ্রম
১
---
বটুকবাবুর সাধ হল মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল খাবেন। যেই না সাধ হওয়া অমনি তিনি সব্জী বাজারে হাজির। লাউ, কুমড়ো, উচ্ছে, পটল কিনে, বাড়িতে পৌঁছিয়েই গিন্নীকে হাঁক ছেড়ে বললেন, খুব ভাল করে ঘ্যাঁট রাঁধো দিকিনি।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে
আজ প্রেমোৎসব উদযাপনের দিন। যে প্রেক্ষাপটেই হোক না কেন। এর বিরোধিতা করার কোনো কারণ আমার মনে আসে না। কেউ কেউ বলেন প্রেমের আবার উদযাপন দিবস হয় নাকি? সে তো সারা বছরের রোজদিনই। খুব ঠিক কথা। তা একদিন একটু বেশি করে উদযাপিত হলে ক্ষতি কি? রোজ খাই বলে কি আর নেমন্তন্ন বাড়ি যাই নে? নাকি রোজ বাড়ির ঠাকুরকে নকুলদানা দীপ ধূপ দিই বলে বড় দূর্গোৎসবে, কি অন্য ধর্মীয় উৎসবে যোগ দিই নে?
মিথ্যুক তুমি ঘুমাও
যখন আমি ওর সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলাম,
ভাবলাম ওর ভাষা তো বুঝি না, তবে?
আমার অনুবাদক চলল সাথে
ও হাসল
আমার অনুবাদক লাগল না
ওর চোখের কোণা ভিজল
আমার অনুবাদক লাগল না
ও ছুঁলো
আমার অনুবাদক লাগল না
আমি সেদিন থেকে
নদী পাহাড় সমুদ্রে অনুবাদক নিই না
পায়ে ঘাসের ছোঁয়া, ফুলের গন্ধ, পাখির ডাক, বিকালের রঙ, ভোরের হাওয়া
সব বুঝি
সমর্পণ
বিন্দু বিন্দু মনের গুঁড়ো ছড়াচ্ছে সারাটা দিন জুড়ে। জড়ো করতে গেলে খেলনার মত রূপ। যার মানে নেই। একটা গাছের শুকনো ডাল, দূর থেকে ভেসে আসা মানে না বোঝা কথা, বাতাসের হাল্কা গা ছুঁয়ে যাওয়া - এ সবারই কোনো ব্যাখা নেই।
প্রেম ঘুঁটে গরু
(সে দুইত দুধ তার পোষা গরুর। বিক্রী করে চলত জীবন যাপন। হঠাৎ যৌবন খেল গোত্তা এক খরিদ্দারের বাড়ির জানলায়। দুধের হিসাব হল জলের চেয়েও তরল। খাটাল হল বৃন্দাবন। তারপর? সেই কথাই তো লিখছি)
তোমার বাড়ির দেওয়ালে ভালোবাসার ঘুঁটে দেব
সারা দেওয়াল জুড়ে। এক রত্তি ফাঁক রাখব না, দেখে নিও।
এত ঘুঁটে নিয়ে কি করবে?
আমি শুধু
আমি শুধু
তোমার সাথে কয়েক পা হাঁটতে পারি
কাঁদতে পারি ভাঙা বুকে তোমার সাথে শত সমুদ্র
তোমার সুখের দিনে তোমার বাগানে
গ্রীষ্মের দুপুরে
গোলাপের চারা লাগাতে পারি
তুমি না চাইলেও।
তবু সে ঘুরছে
মা ভাল নেই। মা অসুস্থ।
তাই অসুস্থ তার সন্তান। সন্তানেরা।
লক্ষ কোটি কোটি অগুনতি সন্তানেরা।
তবু সে ঘুরছে। প্রদক্ষিণ করে চলেছে সূর্যকে।
অসুস্থ শরীরেও। সে ভালো নেই।
অপুষ্ট সন্তানদের বুকে করে সে ঘুরছে
আমাদের তার না হলেও চলত
তাকে না হলে চলবে না আমাদের
যদি শান্তি চাও
যদি শান্তি চাও, দোষ দেখো না – বহুশ্রুত মা সারদার উক্তি বা উপদেশ। কিন্তু... - একটা 'কিন্তু' তবু খচখচ করে। সেটা কি করে সম্ভব? তবে কি উনি মৃত্যুশয্যায় একটা গোলমেলে কথা বলে গেলেন? তা কি করে হয়?
এ কথাটা বহুবার ভেবেছি। ভুল না ধরলে শুধরাব কি করে? যার যেটা ভুল সেটা তাকে বলব না? সে তো আরো বিপথে যাবে? এরকম নানান তর্ক যুক্তি মাথার মধ্যে ঘোরে।
যতটা জল ভরা
জল তরঙ্গের আওয়াজ শুনেছ?
যতটা জল ভরা
তার ওপর হয় সুরের হেরফের
তোমার বুকে কতটা জল ভরা?
প্রতিশ্রুতি
ওঠো
জানলাটা খোলো। দরজাটা খোলো।
ওরা অনেকবার তোমার দরজায় টোকা দিয়ে গেছে।
কারা?
এক নদী জল
আর এক আকাশ তারা
মলাটটা ছেঁড়ো। ভূমিকাটা মোছো।
ওরা অনেকবার এ পাশ ও পাশ করে ঘুমিয়ে পড়েছে।
কারা?
এক পাহাড় স্বপ্ন
আর একমুঠো স্বচ্ছ কবিতারা
আড়ি
মৃত্যুকে কতবার বলেছি আড়ি
যা যা যা
নেব না তোকে খেলায়,
যাব না তোর বাড়ি
আড়ি আড়ি আড়ি
ব্রত
আমি ধ্রুবসত্য কি জানিনি
খুঁজিনিও কোনোদিন
আমার বুকের ভিতর থেকে
মিথ্যাকে স্বীকার করিনি কোনোদিন
যত রমনীয়, যত মনোহর
যত আরামের, যত কমনীয়
সে হোক
অসহ রাত, অসহ বিচ্ছেদ
অসহ বিভীষিকা, অসহ পথ
হয়েছে সহনীয় অবশেষে
অন্তঃবাসী
হৃদয় ঈশ্বরের চেয়েও রহস্যময়
তবু সেই হৃদয়েই ফিরে আসি
সেই একমাত্র যে ঈশ্বরের মতই শুদ্ধ
অনাদি অনন্ত অন্তঃবাসী
যাত্রা
প্রণাম
আশ্রয়
আমার আশ্রয় কাঁচা অথবা পাকা বাড়ি নয়
যে ভূমিকম্পে বা বন্যায় ধ্বংস হবে
আমার আশ্রয় অর্থ, মণি- মাণিক্য নয়
যে চোর ডাকাতে নিয়ে যাবে
আমার আশ্রয় পাণ্ডিত্যের শংসাপত্র নয়
যে তা হারালে আমার সর্বস্ব যাবে
আমার আশ্রয় আমার ওপর তোমার বিশ্বাস
বারবার ভেঙে পড়লেও
যা ফিরিয়ে দিয়েছে তোমার চোখ
নীলাভ ব্যাথা
নিরাবরণ
এ এক পৌরাণিক বসন্তের কথা। বিকাল থেকেই আজ বসন্তের দখিনা বাতাস বিভিন্ন ফুলের সৌরভ মদিরাপানে উন্মত্ত। প্রেমিক প্রেমিকার শরীর মনকে মদনাহত করে কামাগ্নিকে 'হু হু' করে জ্বালিয়ে পাগল করে তুলেছে। এতৎসত্ত্বেও ঋষিপুত্রের মন আজ ভীষণ অস্থির। আজও অপ্সরা আসবে। আজ তাদের মিলন শূণ্যমার্গে, ওই নীলাকাশের আঙিনায়। তবু সুদর্শন তরুণের মন কি এক চিন্তায় চঞ্চল।
ভিতর - বাইরে
শরীরটা আমার বাইরের জিনিস, আর চিন্তাটা আমার ভিতরের – এমন একটা ভাগ আমাদের বোধে স্বতঃই এসে থাকে। আমার হাঁটাচলা, কথাবলা ইত্যাদি নানান অঙ্গভঙ্গী আমার এই বাইরের জিনিসটার সাথে – আমার শরীর। ভিতরের আমি কখনো তার থেকে আলাদা আবার কখনো একযোগে। এই বাইরে ভিতরের মাঝে এমন একটা জায়গা আছে, যাকে বলা যেতে পারে NO MAN’S LAND.
অহংকার
খানিকটা বিধাতার সৃষ্টি
অপেক্ষা
আমি ফিরতে পারলাম না
সতর্ক
সমর্পণ
খুব ভয় হয়
প্রতিযোগিতা
কত মিটারের জানো?
আমি জানি না
জানব কি করে বলো
পুষ্প হৃদয়
আকুল
তুমি আসবে বলে
রাস্তার পাশে
নন্দিনী
কি অশান্ত হৃদয়কে বুকে করে বেড়িয়েছ এতদিন?
অবাধ্য জল ঘাটের কিনারায় মাথাকুটে মরে
পাড়ে উঠবে বলে
গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখেছি অজস্রবার
পা ভিজিয়েছি সেই অবাধ্য জলে
মাঝপথে
পৌঁছালাম কই?