অভিসার
সমুদ্রস্নান সেরে সে তীরে বসেছিল। ভেজা কাপড় শুকিয়ে নিচ্ছিল ভাগাভাগি করে, কিছুটা রোদ, কিছুটা হাওয়া। তার চোখের মণিতে যে সাগরের ঢেউ আছাড় খাচ্ছিল, সে সাগরের সাথে তার বুকের সাগরের কোনো মিল নেই, আবার আছেও। তার মনের মধ্যের সমুদ্র বাইরের সমুদ্রের সাথে কথা বলছিল। ভিতরের সমুদ্র কথা করল শুরু।
-তোর এত ঢেউ? কে যোগায়?
-বাতাস, তোর জল এত স্থির কেন?
মুক্তির ভয়
তালাগুলো ভেঙে গেছে
চাবিগুলো গেছে রয়ে
নতুন তালা ফিরছি খুঁজে
বাজারে হন্যে হয়ে
হলই না হয় বাঁ হাত
আমায় দেবে বলে, সে এলো-
অনেকগুলো কাঁটা
এক পাত্র বিষ
আর এক দাবানল আগুন
নিয়ে
এই যে কালো মাটির বাসা
বারবার
বারবার উঠে দাঁড়াতেই তো চাইছি
মাটিতে পড়ে মাটিকেই ভর করে
অন্ধকারে পা ফেলছি,
আজ না, প্রতিদিন
এক পা, দু পা করে এগিয়ে এসেছি
তবু আজও ভয়
পরের পাটা পড়বে কোথায়?
স্মৃতি
স্মৃতির গর্তে গর্তে হাজার হাজার লাল কাঁকড়া
অলস সময়ের তীরে তীরে
আমার পায়ের শব্দে ঢুকে পড়ে
আবার বেরিয়ে আসে অলক্ষ্যে
আমার আড়চোখে চোখ রাখে
নির্ভয়া
শুনেছি একটা ইন্দ্রিয় বিকল হলে বাকি ইন্দ্রিয়গুলো নাকি খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
আচ্ছা মন বিকল হলে কি শরীর শক্তিশালী হয়ে ওঠে আরো বেশি? অনুভব বা বোধশক্তি কমে গেলে কি ভোগ শক্তি আরো তীব্র হয়ে ওঠে? মনে হয় তাই। তা না হলে একজন মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, নিজের মনুষ্যত্ত্বের মৃত্যু ঘটিয়ে, এত পাশবিক হওয়ার আত্ম-অনুমতি পায় কি করে আরেকজন মানুষ?
ঋণ
চোখের কোল কালো ছিল
কাজলে
চোখের কালো মণি
চোখের জলকে বলল,
ছুঁয়ে আয় ওকে
বেয়ে পড়ুক সে দু-গালে।
দু-গালেতে কালো জলের দাগ
মুখ হল সাজসজ্জাহীন
বুকের ব্যাথা চোখকে বলল
কিসে শুধাব গো এ ঋণ?
মিছিমিছি কথা
তোমার সাথে রোজ কথা বলি
এ কথা, সে কথা, কত কথা
প্রতিদিন তোমার কত কথাই শুনি
এ কথা, সে কথা, কত কথা
এ সব গুলোই মিছিমিছি
আসল কথাটা দু'জনেই যাই এড়িয়ে
সে কথায় ঢাকি, নানা কথার ঢাকা
এ কথা, সে কথা, কত কথা
বাণী
ঈশ্বরের কাছে ঈশ্বরকে না পেয়ে ফিরেছি অনেকবার
মানুষের মধ্যে পেয়েছি তাঁকে আচমকাই
মুগ্ধ হয়েছি, তৃপ্ত হয়েছি, হয়েছি পবিত্র