কিছু বোলো না
মুখের ওপর পড়ে থাকা চুলগুলো সরাও
তাকাও আমার দিকে
  হাতটা আলগা করো
      চুপ করে বোসো
         আমার আঙ্গুলে
 তোমার আঙ্গুল আলগোছে রেখে।
 সন্ধ্যার নিভৃত ঝর্ণার পাশে
      ঝিঁঝিঁ'র ডাক থাকুক গোপন উন্মুখ সুখে

দীর্ঘশ্বাসেরা তত দীর্ঘ নয়, যত দীর্ঘ তাদের ছায়ারা
কল্পনাদের চোখ ধাঁধিয়েছে উচ্চ আশার ধোঁয়ারা

যে হাতগুলো

মন্দিরের ভিত কাটল
দেওয়াল গাঁথল, ছাদ ঢালাই করল
বিগ্রহ বানালো, পূজার জোগাড় করল

নৈবেদ্য দিতে গিয়ে দেখি
সেই সব হাতই এক হয়ে
      আমার সে নিবেদন গ্রহণ করল

কিছু সময় থেমে থাকে
    থেমেই থাকে

কিছু কথা ফুরোয় না কিছুতেই
    বলার পরেও বলার তাগিদ
      নতুন কুঁড়ির মত জেগে ওঠে

কিছু মুহুর্ত মেলায় না কোনো সূর্যাস্তে
     প্রতিটা শ্বাসেই ফেরার চাবি থাকে

 (ছবিঃ দেবাশীষ বোস)

এক আমি গড়ছে ভাঙছে
   আরেক আমি দেখছে
দুই আমিকেই বিশ্ব আমি
   নীরব চোখে দেখছে

'বন্ধুত্ব' সবসময় একটা সরে সরে যাওয়া নাম। সম্পর্কের একটা নাম থাকে। তার একটা স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা থাকে। কোথাও বা একটা দায়ও থাকে। কিন্তু বন্ধুত্ব একটা স্থবিরতার নাম না। একটা ঘটমান চলমান অস্তিত্ব। 'বন্ধু' একটা সম্পর্ক হতেই পারে। কিন্তু বন্ধু নামক সম্পর্কে যে বন্ধুত্বটা টিকেই আছে তা কে জোর দিয়ে বলতে পারে?

রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিখ্যাত ‘সাধনা’ গ্রন্থের ভূমিকায় বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে নিজের ধর্মবোধ বলতে গিয়ে একটি জায়গায় বলছেন – 'উপনিষদ ও বুদ্ধের বাণী, শাশ্বত আত্মার বাণী, যা অসীমের পথে বিকাশের প্রেরণা। আমি নিজ জীবনে তা অনুসরণ করেছি, ও সেই বাণীই প্রচার করে এসেছি সারা জীবন...'

একটা ছোট প্রাণ
   চেতনার আদি জয়তোরণ
মাটির সব জড়ত্ব ভেঙে
        প্রাণের স্বপন উন্মোচন

(ছবিঃ দেবাশীষ বোস)

(একটা দ্বিতল বাড়ির বারান্দায় দুই বন্ধুর কথোপকথন। বয়েস আনুমানিক, পঁচিশ। একজন সংস্কৃতের ছাত্র, অপরজনের নামে রসায়ন, আদতে কিছুরই ছাত্র না।)

খুব ছোট একটা কথা
   থাক, বলব না।
খুব বড় কথাটা
    বলে ফেললেই হবে।

খুব ছোট একটা কথা
     থাক, বলব না।
বললেই, যদি হারিয়ে গেলে!