নিবেদিতাকে নিয়ে এ প্রহসনটা বরং থাক
অতলবাবু
ধরি মানুষটার নাম 'অতল'। মানুষটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে - সবটাই অভিনয়। ঘুম থেকে উঠে চায়ের দোকানে উনুনে আঁচ দেয় যে বাঁ হাতভাঙা বেঁটেখাটো লোকটা- সে থেকে শুরু করে, মাঝরাত্তিরে বাসটা গ্যারেজে রেখে ঝিমোতে ঝিমোতে ফেরা ড্রাইভার অবধি - সবাই অভিনয় করছে। বড়লোকদের আরো সুক্ষ্ম অভিনয়, লড়াই করে বাঁচা মানুষদের স্থুল। ছিরিছাঁদহীন।
বীমাবিপত্তি
আজ বলে না। নরহরিবাবুর দীর্ঘদিনের ইচ্ছা মা কালীর নামে একটা জীবনবিমা করেন। ডেট অব বার্থ নিয়ে একটু সমস্যা আছে, কিন্তু নরহরিবাবুর শালা সুড়ঙ্গ সিকদার সে ব্যবস্থাও করে ফেলেছেন। সুড়ঙ্গবাবু পেপারমিলে কাজ করেন। সাইডে হাত দেখার ব্যবসা থুড়ি সাধনা। খোদ কামাখ্যায় গিয়ে রপ্ত করেছেন, সুড়সুড়িবাবার কাছে। তিনিই তার বলাইচাঁদ নামটা এপিঠ-ওপিঠ করিয়ে সুড়ঙ্গ সিকদার করেছেন।
মা
শুভ দীপাবলি
সাজানো কথা আর মিথ্যা কথা এক না। প্রথমটায় খানিক শিল্পীসত্তার দরকার হয়, দ্বিতীয়টায় সে দরকার নেই।
যেমন সত্যভাষণে আর কটুভাষণে। প্রথমটায় বিবেচনাবোধ জরুরী। দ্বিতীয়টায় নয়।
ছবি
ঘনশ্যাম আর সুনয়না ঘরের মধ্যে ঢুকলেন। ঘুটঘুটে অন্ধকার চারদিক। আজ ভূতচতুর্দশী। কেউ চোদ্দ প্রদীপ জ্বালার নেই। সবাই বেড়াতে গেছে। ঘনশ্যাম খাটে বসলেন। সুনয়না নিজেদের ছবিটা খুঁজলেন এ দেওয়াল, সে দেওয়াল। নেই। অবশেষে বাথরুমের পাশের জুতোর র্যাকের নীচ থেকে ভাঙা ছবিটা বার করলেন। কত পুরোনো ছবি।
ভেস্টিবিউল
করোমণ্ডল এক্সপ্রেস
ট্রেনটা প্রচণ্ড বেগে ভারতের দক্ষিণাভিমুখে ছুটছে।
সত্তর পেরোনো মানুষটা
হাতে একটা ফ্লাক্স নিয়ে প্যান্ট্রিকারের দিকে এগোচ্ছেন
S6 থেকে ছ'টা বগি পেরোলে প্যান্ট্রিকার,
মানুষটা অশক্ত শরীরে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে
বিকল্প
কোথায় খুঁজছো খোলা আকাশ?
কিসের চাইছো বিকল্প?
মুঠো খুলে যদি টানটান হয় আঙুলগুলো
যদি ভেসে যায়-
মাথা ভরা সব প্রজল্প
যখন টবে জল দিলাম
যখন টবে জল দিলাম
তখন কিছুটা জল শুষল রোদে পোড়া তৃষ্ণার্ত টবের মাটি
কিছুটা জল শুষল মাটির রোদে পোড়া বুক
অবশেষে কিছুটা জল নিল শিকড়
ভালোবাসা সব সময়ই একান্নবর্তী
ফিরেও চায়নি
আজ অবধি কোনো পথ দিগন্ত ছুঁতে পারেনি
তবু দিগন্তের দিকে
যেতে যেতে,
যেতে যেতে
কোনোদিন পিছন ফিরেও চায়নি
[ছবিঃ সুমন]