Skip to main content
 
 
        জগতের রহস্যের গভীরে পৌঁছেছিলেন তো নিশ্চই। বিজ্ঞানের বিখ্যাত তত্ত্বদর্শীদের সাথে একাসনে তার নাম ভবিষ্যতে উচ্চারিত হবে তাও সত্যি। 
        তবে সেইটা আমার কাছে তার জীবনের গভীরতম সত্যিই নয়। আমার কাছে গভীরতম সত্য, তিনি মানবাত্মার গভীরতম শক্তিকে জাগাতে পেরেছিলেন। শরীরের প্রতিবন্ধকতাকে প্রতিবন্ধী করেছিলেন। আত্মশক্তি যে দেহের শক্তির চাইতে বহুগুণ প্রবল, সেটা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন। জড়ের স্থূল নিষ্ঠুর অক্ষমতার প্রাচীর নিজের তীব্র ধীশক্তির আঘাতে চূর্ণ করেছিলেন। আগামী দিনে এই কথাটাই মনে রাখবে মানুষ বেশি, তার আহরিত বিজ্ঞানের জটিল তত্ত্ব সম্যক অনুধাবন না করলেও।
        তিনি নাস্তিক ছিলেন। তিনি স্রষ্টা ছিলেন। তিনি তত্ত্বদর্শী ছিলেন। তিনি যোদ্ধা ছিলেন। তিনি মানবতাবাদী ছিলেন। ভবিষ্যতের দুনিয়ায় এটাই মানুষের সার্থক পরিচয় হবে। নানাবিধ স্রষ্টার গালগল্পের অলীক বিশ্বাস থেকে বেরিয়ে নিজের আত্মশক্তির স্পর্ধা দেখাবে। মূর্খের মত কোনো যুক্তিহীন অসত্য প্রাচীন পবিত্র পুঁথির দোহাইয়ে রক্তপাত ঘটাবে না - এটাই কাম্য হবে। পৃথিবীটা মানসিক, জাগতিক দূষণে ক্রমশঃ বাসযোগ্যতা হারাতে বসেছে - তার সতর্কবাণী মনে রাখতে হবে। জল শুকোচ্ছে, উষ্ণতা বাড়ছে, ভেদাভেদ বাড়ছে - এগুলো কোনো অলীক স্বর্গস্থ বা ব্রহ্মগত ঈশ্বর করছে না। আমাদের অজ্ঞতা, লোভ আর স্বার্থপরতা করছে। প্রশ্ন আর ধর্মের সহাবস্থান হয় না। সময় এসেছে সাবধান হওয়ার। সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়াবার। সদ্য প্রয়াত এই মনীষীর উদ্দেশ্যে এর থেকে বড় শ্রদ্ধার্ঘ্য আর কিই বা হতে পারে? 
        শারীরিক প্রতিবন্ধকতার চাইতে লক্ষগুণে গভীর ভয়ংকর - বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা।