এক সমুদ্র অনন্ত
তুমি চেয়েছিলে-
তাই অসীম থেকে হলাম সসীম
নিরাকার থেকে হলাম সাকার
তুমি ফিরে গেলে-
সসীম থেকে হলে অসীম
সাকার থেকে হলে নিরাকার
তোমার আর আমার মাঝে এখন
এক সমুদ্র অনন্ত
তবু তা আন্তরিক হোক
ওগুলো কি ফুল?
প্লাস্টিকের?
ফেলে দাও
বরং আনো কিছু বুনোফুল
তবু তা প্রকৃতির হোক
ওটা কিসের কাগজ?
গানের খাতা?
সরিয়ে দাও
না হয় দু'লাইনই গাও
তবু তা প্রাণের হোক
এ কিসের মিছিল?
প্রভাতফেরী?
বন্ধো করো
না হয় নিভৃতে বসো তাঁর কাছে
একান্তে একটা প্রণামই জানাও
তবু তা আন্তরিক হোক
আমার মা
আজ কিছু কথা মায়ের ব্যাপারে বলতে ইচ্ছা করছে। খুব অদ্ভুত মানুষ। উড়িষ্যার কালাহান্ডির খড়িয়ার নামের এক গ্রামে মায়ের জন্ম। দাদু ছিলেন সরকারী হাসপাতালের ডাক্তার। খুব নামডাক ছিল তাঁর। দাদুরা ছিলেন প্রবাসী বাঙালী। খুব রোগীবৎসল চিকিৎসক। গ্রামের অচ্ছুত, অশিক্ষিত, সব স্তরের মানুষের খুব কাছের লোক ডাক্তার শিবপদ চ্যাটার্জী।
২৫শে বৈশাখ
নতুন
আমার দিকে তাকাও
দেখো আমি কালকের 'আমি' না।
আমিও আজ নতুন সকাল দেখেছি
তোমারই মত।
তোমার কালকের 'তুমি'
আমার কালকের 'আমি'
থাক না কালের গর্তে মিলিয়ে
জন্মের মত।
আমার হাতে হাত রাখো
দেখো আমার শরীরে আজ নতুন উত্তাপ
প্রেমকে কিছু শর্ত থেকে দিয়েছি মুক্তি
চিরকালের মত।
আবেশ
আমি কি খুব জোরের সাথে বলতে পেরেছি
"আমার এসব চাই না"।
পারিনি বোধহয়
তাই শ্যাওলাগুলো এত দুর্বল হলেও
আমায় পেয়ে বসেছে
পায়ের নখগুলো বেড়ে গিয়ে শিকড় হয়ে আটকে
আমি নীলাকাশে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়ি-
কিছুটা ক্লান্তিতে, কিছুটা অবিশ্বাসে
কখন শঙখচিল উড়ে গেছে খেয়াল করিনি
আমার মুখের উপর ওর ছায়া আঁকা হয়ে আছে জীবাশ্মের মত।
দু'চক্ষের বিষ!
তোমায় আমি ভালোবাসি?
কক্ষনো না!
অমন খুদে চোখ
অমন বোঁচা নাক
অমন খ্যানা গলা
অমন ছ্যাদা কান
ধুর ধুর ধুর!
তবু কেন রোজই আসি?
না হলে মূর্খ বোঝাব কি করে
তোমায় আমি কতটা বাজেবাসি!
কেন এত রাগ?
তা হবে না!
এমন পোড়া রূপ নিয়ে
এমন ঢঙের সাজ!
মন
সবাই বলল মনটাকে শক্ত করো। উনুনে আঁচ দিয়ে, তাতে ঘুঁটে, কাঠ কয়লা সব ঢাললাম। আঁচ গনগন করে উঠল। মনকে চড়ালাম। শক্ত হল। শক্ত হল, শুধু বাইরেটাই। ভিতরে একটুও আঁচ ঢুকল না।
বাইরেটা এত শক্ত এখন, যে বৃষ্টির ছিটে বাইরে আসে না, কিছু ভেঙে পড়ার আওয়াজ কান পাতলেও বাইরে থেকে শোনা যায় না, ঝড়ের দাপটও শুধু ভিতরেই আছাড় খেয়ে মরে।
খেয়ালের হাওয়া
মন কি খড়ের গাদা!
কেউ জ্বলন্ত কিছু ফেলল অমনি ধরে গেল?
মন কি কাদার তাল!
কেউ একটু জল ছুঁড়ল অমনি গলে গেল?
মন কি ঘরের ডাস্টবিন!
যেই খুলেছ, অমনি গন্ধে টেকা দায় হল?
মন কি জং ছুরি!
যেই না ছোঁয়া লাগল, টিটেনাশ নিতে হল?
আরে তা নয়
আরে তা নয়
মন খেয়ালের হাওয়া
যাই আসুক
তাকেই সে ভাই, ভাসিয়ে নিয়ে চলল।
ওরা
দীর্ঘশ্বাসগুলো ছাদের কার্নিশে
জানলার পাশে, উঠোনে, আমগাছে বসে।
আমি যতবার ওদের দৌড়ে গিয়ে তাড়াই-
হুশ..যা... যা... হুশ...
ততবার ওরা উড়ে গিয়ে, আবার ফিরে আসে,
আবার বসে আমার ঘরের
আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
কি চায় ওরা?
ওদের হাতে করে খাইয়েছি কি কবে?
জানি না।
তবে কেন ওরা আমার চোখের দিকে