তিনটে মৃতদেহ
মাথায় ব্যাণ্ডেজ করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়ল ঠানদাদু। আশির উপর বয়েস। দোতলা বাড়ি। দিদা পাশের ঘরে শুয়ে। প্যারালাইজড।
উদিত চুপ করে বসে টুলে। বিছানার পাশে। এই ঘরের গন্ধ ভীষণ চেনা। ছোটোবেলা থেকে এ বাড়ি যাতায়াত। বুবুনদার কাছে অঙ্ক করতে আসত। বুবুনদা নেই। আত্মহত্যা করেছিল। ডিপ্রেশন।
উভমুখী
কারাগার কি শুধু শিকলের হয়? মন নিজে যখন নিজেই নিজের কারাগার হয়ে ওঠে? কিছুতেই নিজেকে ঠেলে নিজের বাইরে যাওয়া যায় না? তখন? সেও এক দুঃসহ কারাগার।
নতুন
ভালোবাসো
তবে সবটুকু মন দিয়ে নয়
কিছুটা থাক
নিজের জন্য
সে মনেও সে-ও আসুক
বন্ধু হয়ে
প্রেম হয়ে নয়
যদি তা পারো
ভালোবাসা কোনোদিন দমবন্ধ ঘর হবে না
খোলামেলা বাতাসে
পরিচয় হবে নিত্যনতুন
নতুন নামে
নতুন ডাক নিয়ে
কান্না ধন
গোঁসাই বলে চলল, ঠাকুরকে যে ঠিক ঠিক ডেকেছে, ঠাকুর তাকে কাঁদিয়েছেন।
চমকে উঠে বললাম, একি বলো গোঁসাই… এ তো ভয়ের কথা….
...
জিপিএস
মানুষের সব চাইতে বড় গুরু কে? তার শুভবুদ্ধি। শুভবুদ্ধি, ভালোবাসা, অনুকম্পা, কৃপা, উন্মুক্তমনা, সহজতা… এ সব সমার্থক শব্দ। শুভবুদ্ধি থাকলেই আত্মনিয়ন্ত্রণ আসবে। আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকলেই সুখ শান্তি আসবে। আত্মনিয়ন্ত্রণ মানে কোথায় থামতে হবে জানা। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মেরেছে মানে সে থামতে পারেনি। এই তো!
দাম
মানুষটাকে ঘরে রাখা গেল না
কারণ প্রায় উপার্জনহীন
অথর্ব, জীর্ণ শরীর
সরকারি হাস্পাতালও রাখতে চাইল না
কারণ বেখেয়ালি মানুষটা
হুস করে
একমাত্র সম্বল
প্রাণবায়ুটা ফেলল হারিয়ে
আগুন নিল
দাহ করার দাম নিয়ে,
আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব
দিল সে মূল্য
নীরবতায়
যেদিন তোমার ভাষায়
আমার ভাবনাকে পেলাম
সেদিন জেনেছিলাম
তুমি আমার আপন
যেদিন তোমার নীরবতায়
আমার নীরবতাকে পেলাম
সেদিন বুঝলাম
আমি তুমিই
দ্বন্দ্বানন্দ
দ্বন্দ্ব নিয়ে শান্তিতে আছো। একি হয়? এও কি হয়? দ্বন্দ্ব নিয়ে ঈশ্বরকে ডাকো। ঈশ্বর যদি শুনে ফেলেন! ধরো তুমি নির্দ্বন্দ্ব হলে, কি হবে? ধরো ধরো সত্যি সত্যিই শান্তি পেলে। পালিয়ে গিয়ে, আড়াল করে, ভুলে গিয়ে খুচরো শান্তি না গো না, সত্যিকারের শান্তি পেলে। কি হবে? বুঝতে পারছো কি সর্বনাশটাই হবে তোমার? দ্বন্দ্ব গেলে সব যাবে। তোমার মুঠো খুলে জমানো যা কিছু "আমি - আমার" গণ্ডী ছাড়িয়ে ভেসে যাবে। সব যাবে সব যাবে। স্বপ্নগুলো ছাইকাদা মেখে ধুলোয় কাদায় গড়াগড়ি খাবে। সব্বনাশ! সইতে পারবে! দ্বন্দ্বহীন জগত তোমার আগুপিছু ঘুরে বেড়াবে। বাইরে ভিতর, তোমার আমার, সব হারিয়ে ঘোল খাওয়াবে! কে গুরু! কে ঈশ্বর! কি শাস্ত্র! কি মত! কি পথ! সব গুলিয়ে ঘেঁটে যাবে। দলাদলি, স্বার্থসুখ, সব ঘেঁটে গিয়ে বেড়া খুলে গিয়ে মাঠ হয়ে যাবে! সব্বনাশ হবে! সব্বনাশ হবে!
...
তুঁহু মম
যখন তার হাসি, চাহনি, কি হাতের স্পর্শ পাওয়ার জন্য উন্মাদ হয়, তখন সে বাথরুমে গিয়ে কলটা খুলে কান্না গিলতে চায়। জলের আওয়াজ তাকে বলে, বাষ্প হ। মেঘ হ। উড়ে যা। সময়কে ধরে রাখিস না শিকলের মত। হাত কাটবে। রক্তারক্তি হবে। জল বড় চতুর।
...
তুমি জানতে
কারণ তুমি আগুন জ্বালতে গিয়েছিলে
তোমার হাতে কামড় পড়েছে
কারণ তুমি শিকল খুলতে গিয়েছিলে
...