তোমার আঙিনায় আছি বসে,
আমার ক্ষুদ্র তনুতে তোমার কিরণ
কি আদরে ভালোবেসে!
 

(ছবিঃ প্রীতম পাল)

এক প্যাকেট বাদাম। চিবোচ্ছেন, ভাবছেন। ভাবছেন, চিবোচ্ছেন। ভাবনাটা বেশ পুডিং-এর মত জমে আসছে। বেশ একটা বুড়ির চুলের মত মিহি সুখ আপনাকে আচ্ছন্ন প্রায় করে ফেলেছে... এমন সময় অকস্মাৎ আপনার মুখে এসে পড়ল - পচা বাদাম! 

গেল না পাকা আম মাটিতে থেঁতলে পড়ার মত, আপনার সুখ!

একটা গাছ, তার-

শিকড়কে বিশ্বাস করে না
পাতাকে বিশ্বাস করে না

তার চারপাশের-

মাটিকে বিশ্বাস করে না
জলকে বিশ্বাস করে না
বাতাসকে বিশ্বাস করে না

সে আকাশের দিকে তাকিয়ে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে
হতাশ্বাস ফেলে
বিষাদের জাল ফেলে

তোমার আঁচলের খুঁটে কটা শব্দ বাঁধা থাকত, গোপনে।
ওদের কি করলে?
কুটনো কুটতে গিয়ে, কেটে ফেলছো?
শাক ধোয়া জলের সাথে ভাসিয়ে দিয়েছো নর্দমায়?
না বোধহয়।
তোমার চুলের কাঁটার সাথে কিছু শব্দ আটকে আছে, এখনো।
ওরা তোমার দু-একটা পাকাচুল নিয়ে খেলে,
তুমি চাইলে ওরা তোমায় খোলা আকাশে নিয়ে যেতে পারত
গ্যাস বেলুন দেখেছিলে না, ময়দানে?

তোমার সাথে আমার 
না মেলে পূবে, না পশ্চিমে
না মেলে ডাঁয়ে, না বাঁয়ে
তবু কিসের এত টান ?

যে এক চাহনিতেই, কলিজায়
চোরাস্রোতে আসে বান?!

পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে
    ফুলদানীতে সাজালে রোজ
ভাবলে প্রজাপতি আসবে 
    তোমার শোয়ার ঘর রঙীন করে

হল না।

তুমি জানতে না
পাপড়ির সাথে বৃন্তের কি সম্পর্ক
বৃন্তের সাথে কি কথা বলে শিকড়

জীবনটা খানিকটা জলের দাগ কেটে খেলার মত। তুমি মনের আনন্দে একটা জলের দাগ কাটলে, কল্কা আঁকলে। সেটা কিছুক্ষণ থেকে গেল। আরেকটা কিছু আঁকতে লাগলে, ইতিমধ্যে আগেরটা মিলাতে শুরু করল। তুমি বিদায় নিলে, জলের সব দাগও চিরকালের জন্য মিলিয়ে গেল।

যদি মনন, চেতনার হাত ছেড়ে ছোটে? 
যদি অনুকম্পার কণ্ঠ, প্রকাশ ভঙ্গীর অলঙ্করণে পড়ে চাপা?
যদি স্থির জলাশয়ের স্বচ্ছ তলদেশ দেখাটা হয় অতিসরলীকরণ,
দেখতে হয় তাকে - গুলিয়ে, নেড়ে, ঘেঁটে..তারপর আন্দাজে তলদেশে ছুঁয়ে?
যদি বলতে চাওয়ার তাগিদের চেয়ে, বলতে চাওয়ার ভঙ্গীতে করতে হয় মুগ্ধ?

বাড়ির উপর যে ছাদ, সেখানে আমার প্রতিদিনের ছুটি, প্রতিদিনের মুক্তি। সে শুধু তার উপর অসীম নীল আকাশ আছে বলে। যদি আকাশ না থাকত, সেটা তবে হত - দোতলা, তিনতলা, চারতলা...খুব জোর চিলেকোঠা..তাতে আরাম থাকত হয়তো, ছুটি থাকত না, মুক্তি থাকত না।

কত ভদ্রতা দাঁড়িয়ে আছে 
        দর্জির সাথে দর করে,
কত চরিত্র দাঁড়িয়ে আছে
             (দরজা জানলার) 
        ছিটকিনিতে ভর করে
  
চোখে তো পড়ে কত কিছুই
ভাগ্যে অনেক কিছুই যায় এড়িয়ে