Skip to main content

বিজয়িনী

বাগানে নানান ফুলগাছ। হঠাৎ করে কোথা থেকে একটা ক্যাকটাস গাছ জন্মালো। অন্য গাছেদের ভুরু কোঁচকাল, নাক উঁচু হল। বেশ কিছুদিন কাটল। সব গাছে ফুল ফুটল। গোলাপ, রজনীগন্ধা, জুঁই, জবা আরো কত কি। শুধু ক্যাকটাস থাকল ফুলহীন। অন্য ফুলগাছেরা ক্যাকটাসের দিকে তাচ্ছিল্যভরে তাকালো। বলল, শুধুই কাঁটা? আহা বাছা থাকো কি করে! ক্যাকটাস হাসল শুধু।

উপলব্ধি

প্রশ্ন কোরো না
আমি উত্তর জানি না

আমার হাতে অনেক রেখা
কোনো জ্যোতিষীর হাতে হাত রেখে
উত্তর পায় নি ওরা

আমার মাথার মধ্যে জিজ্ঞাসাগুলো
এলোমেলো তারার মত সাজানো
আমি অন্ধকারে ডুবে আছি

তবু ভোরের আকাশের দিকে
চেয়ে থাকতে থাকতে মনে হয়
আমার প্রশ্নগুলোর দরকার নেই
উপলব্ধির কোনো প্রশ্ন থাকে না
প্রশ্ন থাকে না ছুঁতে পারা তারার

কাসন্দী


-শুধু ঠকলাম
-কে ঠকালো
-তার চাইতে জানতে চাও কে ঠকালো না
-বেশ। তাতে কি হয়েছে? খুব ক্ষতি হয়ে গেছে কি?
-তা হয় নি! আমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না এখন
-কি মনে হয়?
-মনে হয় মুখোশ সব
-ছিঁড়ে ফেললেই হয়!
-একটা আলপটকা কথা বললেই হয়! কে ছিঁড়বে? আর কত ছিঁড়বে?
-তা হলে উপায়?

যদি সেটা মাতৃভাষা হয়

একটা ভাষাই এ জন্মে জন্মান্তর ঘটাতে পারে
যদি সেটা মাতৃভাষা হয়

একটা ভাষাই মায়ের আঁচল
বিশ্ব আঙিনায় আনতে পারে
যদি সেটা মাতৃভাষা হয়

একটা ভাষাই আমার সাথে আমার বুকে নামতে পারে
যদি সেটা মাতৃভাষা হয়

একটা ভাষাই চিন্তামণির সব জ্যোতিতে রাঙতে পারে
যদি সেটা মাতৃভাষা হয়

তীর্থযাত্রা


দেহের সাথে আত্মা গেল তীর্থে
দুজনেই ফিরল
আত্মা ফিরল সারা গায়ে মেখে লাল আবীর
শরীর ফিরল মেখে ধূলো
শরীর বলল, ভাই এটা কেমন হল?
তুমি পেলে রঙ, আর আমি মাখলাম ধূলো!
আত্মা বলল, তুমি গিয়েছিলে পেতে
আমি গিয়েছিলাম দিতে
যে চায়, সে পায় ধূলো
যে দেয়, সে রঙীন হয় প্রেমে

প্রভু

পুকুরের চার ঘাট বাঁধালে
ওয়াটার পানি অ্যাকুয়া জলে
বললে ওরে বিভেদ কোথায়?
বেড়াগুলো সব ভাঙ দেখি আয়
তাঁর ইতি কেউ করতে পারে?
সব মতই যায় তাঁরই দ্বারে
'আমার' বলে যেই ঢেকেছিস
জগৎ আঁধার সেই করেছিস
'তুমি' 'তোমার' বলতে শেখ
দু'হাত তুলে নাচতে শেখ
অহং ম'লে ঘুচে জঞ্জাল
পুঁথি শাস্ত্র ঘোর মায়াজাল
ওসব ছেড়ে ডাকতে শেখ

আপন বলতে

মন ডুবে যা শব্দতলে
বাক্য সেথায় ডুবতে নারে
মিলবে সে মুখ, অনন্তসুখ
জ্বলছে রে তোর হৃদ-মাঝারে

তারে বেঁধে আনবি পাড়ের কাছে?
কোনোকালেই হবে না তা
জগৎ বাঁধা তাঁর দুয়ারে
তোর ভ্রমের শেষে শিখি পাখা

ডুব দে রে মন, পাড়ে সে নেই
কথার ফাঁদে হারাস নে খেই
অহং অন্তে পারবি জানতে
আপন বলতে সেই শুধু সে-ই

কালবৈশাখী

একলা একটুকরো হাওয়া আমার শোয়ার ঘরে
আমার দিকে তাকিয়ে বলল, চেনো আমায়?
আমি স্মৃতির জানলা খুলে, যতদূর চোখ যায় চাইলাম, চিনলাম না

বললাম, কে তুমি?
সে বলল, তোমার দীর্ঘশ্বাস

সুন্দর


আমার একটা অভিযোগ
     তুমি বড্ড বেশি সুন্দর
আমার একটা স্বীকারোক্তি
     আমি বড্ড বেশি লোভী
আমার একটা সিদ্ধান্ত
     আমি বঁড়শি হাতে না নেবো 
আমার একটা উপলব্ধি
     তুমিই আমার প্রাণের কবি

মনের মধ্যে একটা ঘর বানাও

মনের মধ্যে একটা ঘর বানাও। শুধু নিজের জন্য। সে ঘরের চাবি কারোর হাতে দিও না। কারোরই হাতে না, সে যেই হোক। ঘরটা নিজের মত সাজাও।

সে ঘরে দেখা পেতে পারো হঠাৎ কোনো একদিন অচেনা অতিথির। যুগান্তরের নিমন্ত্রণ যেন তার তোমার সেই ঘরে। কি মন্ত্রবলে খুলে ফেলেছে সে তোমার গোপন ঘরের দরজা। সেই তোমার প্রাণের সখা, তোমার বঁধূ। তাকে বরণ করে নিও।

Subscribe to