Skip to main content

জানি পলাশ এসেছে

জানি পলাশ এসেছে

জানি বসন্তের বাতাস বইছে অহরহ

কিন্তু বলো তো প্রেমিক
    এ বসন্তে কিসের দাহ বেশি?
       হৃদয়ের, না পকেটের? 

কে বেশি যাতনাময় 
   বসন্তের কোকিল? 
       নাকি সিলিণ্ডার আর পেট্রোল? 

"রোদনভরা এ বসন্ত, সখী কখনও আসেনি বুঝি আগে"....

কিছু যেন তার

যেন সব কিছু
   ভুলে যাওয়ারই কথা ছিল 
যেন তবু মনে পড়ে যাচ্ছিল 
যেন সব দেখাশোনা শেষ 
   কেউ তবু ফিরে ফিরে ডাকছিল
চলতে চলতে 
  সব অভিমান 
      ধুলোয় লুটিয়ে পড়ছিল
 যেন এই তো সবে শুরু
       সূর্য তবু পশ্চিম আকাশে ঢলছিল 

দূর থেকে

দূর থেকে মনে হয়
    ভীষণ কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আমরা

কাছে এসে দেখো
   এক একজনের মধ্যে 
         যোজন যোজন ফাঁক
   সেখানে বিস্তর অন্ধকার
     আশ্রয় দিয়েছে কিছু জোনাকিদের

  দূর থেকে মনে হয় যেন তারা

শুধু তোমার কথা মনে পড়ে

আমার পুরী যেতে ভালো লাগে না
   সারাদিন সমুদ্রের একটানা গর্জনে 
       আমার তোমার কথা মনে পড়ে 

আমার লাভা, লোলেগাঁও, দার্জিলিং, কালিম্পং যেতে ভালো লাগে না
    কুয়াশায় ঢাকা স্থির নিশ্চল পাহাড় দেখতে দেখতে
     আমার তোমার কথা মনে পড়ে 

অনবগুন্ঠিতা

হাতটা ঘামছে। বাজারের ব্যাগের জন্যেই ঘামছে। সারাটা শরীরও অল্প অল্প ঘেমে। মাঝে মাঝে মনে হয় জাহাজের মাস্তুল ধরে একাই দাঁড়িয়ে আছি আমি। জাহাজ পাড়ে ভিড়বার অপেক্ষায়, নইলে ডুবে যাওয়ার। জাহাজ যে কোনো পাড়েই ভিড়ুক না কেন আমার কিছুতেই কিছু এসে যায় না। সব পাড়ই সমান এখন আমার কাছে, কোনো পাড়েই কেউ নেই।

বল জয় হরি

সারাদিন ভাবিস আমি শুয়ে বসে থাকি
তোরাই যত কাজ করিস, আমি দিই ফাঁকি
কত কি যে ভাবি আমি 
                    রাতদিন শুয়ে
কত তত্ত্ব, কত কথা, 
                     মনে আসে ছেয়ে
মেঘ হয়ে সে কথারা করে গড়গড়
বৃষ্টি হয়ে মাথার মধ্যে নামে ঝরঝর

আমার ঈশ্বর

স্নান সেরে, শুচি বসনে, মন্দিরের শুদ্ধ পবিত্র আসনে বসে জপ করে যখন বাইরে এলাম, যখন নর্দমার পাশে পড়ে থাকা অচেতন মাতালের পাশে বসে থাকা অসহায় আকুল স্ত্রীর চোখের দিকে তাকালাম, তখন বুঝলাম, আসলে এতদিন আত্মশ্লাঘাকে ঈশ্বরের উপস্থিতি বলে জেনেছিলাম নিজের বুকের মধ্যে, ঈশ্বর তো ওই যে, নর্দমার পাশে বসে, সমস্ত অশুচি, অপমান মেখে ভালোবাসায়, অমনি শুচির আগল খসে পড়ল, সমস্ত বিশ্বজুড়ে এক সর্বগ্রাসী আলো বন্যার মত আছড়ে পড়ল, আমার সামনে কেউ নেই, শুধু তুমি, আমার আগলহীন ঈশ্বর, আমার শ্লাঘার ঈশ্বরকে ছাপিয়ে, আমায় কাঁদিয়ে, ভাসিয়ে, ছাপিয়ে, আমার সমস্তব্যাপী ঈশ্বর।  

দুই খানেতেই

- ঈশ্বরের নিবাস কোথায়, বিশ্বাসে না সংশয়ে?
- দুই খানেতেই
- শুভবুদ্ধি জাগে কই, ভালোবাসায় না ভয়ে?
- দুই খানেতেই
- ভালোবাসার বাস চেতনায় না অন্ধকারে?
- দুই খানেতেই
- আচ্ছা মুশকিল। একটা কিছু ঠিক করে তো বলো। সত্যটা তবে কই? 
- দুই খানেতেই

আমার সুন্দরবন ভ্রমণ

তো ট্রেনে তো বেজায় ভিড়। ওদিকে অমিতাভ স্যার গুরুগম্ভীর গলায় বারবার বলে চলেছেন দূরত্ব বজায় রাখার জন্য। কিন্তু দূরত্ব বজায় রাখা কি অমনি বললেই রাখা যায় স্যার? চলেছি সুন্দরবন।

    কেন যাচ্ছি? কারণ একটাই, এক বছর হল বেড়ানো হল না। মনে মরচে পড়েছে। বাচ্চাগুলো অস্থির হয়ে যাচ্ছে। বলি করোনা কি তাদের পৃথিবীটা সত্যিই চার দেওয়ালে বন্দী করে দেবে?

এটাই রীতি

পাখিরালয়ের ভেতরের দিকে এক গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা হচ্ছে। মাটির বাড়ি। সামনে কয়েকটা ছাগল চরে বেড়াচ্ছে। মানুষটার বয়েস আন্দাজ ষাটের উপর। একটা চেক চেক লুঙ্গি পরা, ফুলহাতা সোয়েটারের উপর একটা চাদর জড়ানো গায়ে। মাথায় উলের টুপি। হাতে বোনা মনে হল। সবগুলোর অবস্থাই জীর্ণ।

Subscribe to