অনর্থক
অনর্থক মাটি খুঁড়ো না
মাটি খুঁড়লেই জল আসে না
জলের জন্য তৃষ্ণা থাকা চাই
অনর্থক ঘর বেঁধো না
দেওয়াল তুললেই ঘর বাঁধা হয় না
ঘরের জন্য ভিত থাকা চাই
অনর্থক স্বপ্ন দেখো না
ঘুমের রাজ্যে সবকিছুই স্বপ্ন হয় না
স্বপ্নের জন্য ঘুম বাজি রাখা চাই
বসন্ত উৎসব
সবুজের বুকে লালের বর্ণমালা
রঙে ভিজে গেল তৃষ্ণার্তদুটো চোখ
তোমার সাধনা দেখার মধ্যে-
অদেখাকে খুঁজে ফেরা
না হয় ছুঁয়েই তোমায়
আমার চোখের নতুন জন্ম হোক
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
ভাঙা খেলায়
ছলছল চোখ
কিছুটা আগুনের তাপে
কিছুটা আগুনের ধোঁয়ায়
বুক ভাঙা শোক
কিছুটা অপূর্ণ প্রেমে
কিছুটা ভাঙা পাত্রের মায়ায়
এক মুঠো সান্ত্বনা
কিছুটা সামনের মেঠো পথে
কিছুটা ছুঁয়ে আসা বৃত্তের সীমানায়
আচমকা
হঠাৎ করেই কি ছেদ পড়ল?
হ্যাঁচকা টান লাগল বুকের পাঁজরে?
আলোর পর্দা সরিয়ে
অন্ধকার কড়া নেড়ে গেল দরজায়?
এমনি হয়
যে দিকের আকাশে আশঙ্কা করেছিলে সিঁদুরে মেঘ,
সে মেঘ জমে থাকে অন্য আকাশে অলক্ষ্যে
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
প্রার্থনা
যতগুলো শ্বাস নিলাম বুক ভরে
ফিরিয়ে দিয়েছি কিছু কি তার?
জমিয়ে রাখিনি কি বুকের খাঁচায়
কিছু তার লুকিয়ে এখানে ওখানে?
যতগুলো মুহুর্ত পেলাম
ফিরিয়ে দিয়েছি কি সব তার?
লুকিয়ে রাখিনি কি কিছু তার
বুকের কোঁচড়ে অলস শ্যাওলা জড়িয়ে?
রাজনন্দিনী
কে ভুল বলল?
আমি?
উঁহু, কক্ষণো না, কদাপি না
তুমি তুমি তুমি
মিথ্যার ঢেঁকি
ফলে কি আর গাছে?
কি প্রমাণ?
আছে আছে আছে
সেদিন তুমি যাচ্ছ পাহাড়পথে
চারদিক নাকি সবুজ সবুজ সবুজ
শীতের ছিল সকাল সেটা
কুয়াশা নাকি অবুঝ অবুঝ অবুঝ
জল বালির বুকে
জল বালির বুকে
কিছু আঁকিবুঁকি কাটল
যে ছবিগুলো জলের বুকে ছিল
বালি তার বুক পেতে দিল
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
ভুল
তোমায় প্রথমবার কোথায় দেখলাম? বলব না। তোমায় দেখলাম। তুমি দেখলে না। কারণ তখনও তুমি, তোমার তুমি নও। তখনও তুমি নির্ভুল তুমি। আমার তখন ডানে বামে ভুল, উঠতে বসতে ভুল, ঘুমে জেগে থাকায় ভুল। সেই ভুলেই আমি প্রথম তোমায় চিনলাম।
সারাটা রাত
সারাটা রাত
তুমি এলে না, ঘুমও এলো না
মন তোমার ঘরের দাওয়ায়
দাবার গুটি সাজিয়ে বসল
নিজের সাথেই নিজের কতবার
চেকমেট হল
একটা রাতের স্টেশান
গভীর রাত। দূরপাল্লার ট্রেন। স্লিপার কোচের নীচের বার্থে সিট। ঘুম ভেঙে গেল। জানি না কত রাত। ঘড়ি দেখতে ইচ্ছা করল না। থাক। রাত তো রাত। কত রাত জেনে তো দরকার নেই।