কাঙালের মত
অগোছালোভাবে ফেলে যাওয়া তোমার গায়ের চাদরটা
উপুড় করে রাখা ইংরাজি উপন্যাসের চিহ্নিত পাতা
খাটের চাদরে এখনও তোমার তাড়াহুড়া করে উঠে যাওয়া
অবিন্যস্ত ভাঁজ
এরাও তুমি
তুমি জানো না
এইটুকুতেই মুঠো ভরে নিই
কাঙালের মত
দোলন
দোলনায় উঠলে কেউ মাটিতে পা পাই না
বারবার পিছনে ফিরে তাকাই,
যদি কেউ দুলিয়ে দিয়ে যায়
একজন দুলিয়ে দিয়ে গেলে
পরের জনের না আসার ভয়
প্রশ্রয়
দুর্বল ভঙ্গুর মন
তায় আলাদিনের দৈত্যের দাপট
ছিন্নভিন্ন মেঘ চিন্তারা
শিশির ভেজা সকালে
সস্তা সাদা কেডস পরে বলে
"চল বেড়িয়ে আসি, বেশিদূর যাব না"
অনবরত
অনবরত আগুনকে দু'ফালা করে রাস্তা কাটছি
অনবরত সমুদ্রের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলছি, তফাত যাও, আমি হাঁটব
অনবরত এক একটা মৃত্যুকে কোলে নিয়ে নিয়ে
চলার ভারসাম্য রাখার চেষ্টায় আছি
থামবে কি?
তানপুরাটার শব্দ থেমে গেল
একটা মৌমাছি গুনগুন করতে করতে
তানপুরার খোলের উপর বসল
তখন সব আলো নিভে গেছে
ঝাড়বাতিটা মাকড়সার মত দেওয়ালে ঝুলে
বোবার মত
বকেয়া
জীবনের কিছুটা বকেয়া
দুর্যোগের কাছে ছিল
জানতাম না।
জানলাম সেদিন
যেদিন ঝড় বকেয়া হিসাবের খাতা নিয়ে এলো
বলল, সই করো
নকল সই করলাম
ঝড় হেসে বলল,
"আবার আসব"
খড়কুটো
নীড়ের খড়কুটো
তা জোগাড় করতে
হিমালয় যেতে হয় না, সত্য
প্রশান্ত মহাসাগর কিম্বা থর মরভূমিতেও না, সত্য।
তবু, এত দরকারি, মূল্যবানের ভিড়ে
কয়েকটা খড়কুটো জোগাড় করাও
খুব সহজ কাজ কি গো?
যারা শুনতে পায়নি
‘ঈর্ষারা সুরক্ষিত হোক’
মন্দিরের দরজায় দাঁড়িয়ে
এমন একটা প্রার্থনা করার সময়
লোকটা হঠাৎ করে কেঁদে উঠেছিল
একটা দমকা হাওয়ায়
রোদে পোড়া ঝরে পড়া পাতাগুলো
ডাঁই করা রাস্তার ধারে
দশদিক থেকে বাতাস পোড়া পাতার গন্ধ নিয়ে খেলছে দামাল ছেলের মত
সূর্যাস্তের আয়োজন হচ্ছে পশ্চিম আকাশে
সিঁদুর রঙ লেপে
ওগো আদিকবি
কেউ কেউ তবে কাব্য বোঝে?
তোমার রচিত বিশ্বরাজ যে
কোন ভক্তের কি মোহ ঘোরে
আজ সে মাটির আসন খোঁজে?
বল্মিক যত বল্মিক আজ
ধুলোয় ধুলোয় ওড়ে
ওগো আদিকবি,
শানিত অস্ত্র, হুংকার কেন
পূজা স্তবমালা ঘিরে?