মহাকাশ কারোর অপেক্ষা করে না
কেন আমার জন্য বসে থাকবে?
ইচ্ছা হলে ডানদিক, বাঁদিক
যেদিক খুশী যেতে পারো
সমুদ্র, পাহাড়, জঙ্গল, মরুভূমি
যেখানে খুশী যাও
কিম্ আশ্চর্যম!
পার্কে এক যুবক এক যুবতীর ঠোঁটে চুমু খেল।
তার কিছু দুরে নর্দমা থেকে এক মৃতপ্রায় মানুষকে কোলে তুলে নিলেন এক বিদেশী সন্ন্যাসীনী।
অভিধান বলল, প্রেম।
ক্লাসে এক ছাত্রের গায়ে আরেক ছাত্র দিল পেন ফুটিয়ে।
আর ওদিকে এক পারমাণবিক বোমে এক নিমেষে লক্ষ মানুষ পড়ল কালের গ্রাসে।
অভিধান বলল, হিংসা।
ধন্য অভিধান, আর তার শিষ্যেরা।
প্রতিশ্রুতি
কিছুক্ষণ আগে যেন আমি তোমারই কথা ভাবছিলাম
পরিচিত বিকালগুলো শুকনো বারান্দা বেয়ে গুটি গুটি করে
খালি পায়ে হেঁটে গেছে খানিক আগে
আমার অন্যমনস্কতায় উঁকি দিয়ে, ভিজে হাতের ছাপ রেখে।
সারা দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদের তাপে পোড়া বুনো ঝোপের গন্ধ
পড়ন্ত রোদের আলোয়, গরম বাতাসে স্মৃতির ঝাঁপিতে রাখছে হাত।
সামনের পাতাহীন শুকনো বাঁশগাছটার মাথায় দোয়েলটা আজও বসেছে
আদিম ব্যথা
তুমি চলে যাওয়ার পর
সন্ধ্যাতারা উঠল
তখনও অন্ধকার হয়ে আসেনি গাঢ় হয়ে
গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে সদ্য জমছে অন্ধকার
ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক বাড়ছে ধীরে ধীরে
হালকা বাতাস সারা ছাদ আমার সাথে সাথে ফিরছে
একফালি চাঁদ যুগান্তরের বিরহ নিয়ে একা।
কিচ্ছু হয় নি ক্ষতি
যখন সে গেলো
এমন ধুলো উড়লো,
ভাবলাম
বুঝি বা সব হারালাম
ধূলো ওড়ার পর
থিতিয়ে শান্ত হল
দেখি কিচ্ছু হয় নি ক্ষতি!
খানিক ধুলো নাকে চোখে গেল।
তেমন কিছু না
আমি বললাম, কিছু কি হয়েছে?
ও বলল, না, তেমন কিছু না।
(ওর চোখ বলল, হয়েছে)
আমি বললাম, আচ্ছা।
(আমার চোখ বলল, হয়তো বুঝলাম)
ও বলল, হাসলে যে?
(ওর চোখে ফুটল যন্ত্রণা)
আমি বললাম, না এমনি।
(আমার চোখে জড়ালো স্নেহ)
ও বলল, আচ্ছা।
পরিত্যক্ত
তোমাকে বাগানে বেড়াতে নিয়ে গেছি দুবেলা
তোমার দু-হাত ধরে, আমি নিজে।
ভুলে গেছ।
তোমার মনে আছে শুধু সে কদিনের কথাই
যে কদিন তোমার মন খারাপ ছিল,
তোমার খোলা বাতাসের দরকার ছিল
যে দিনগুলোতে সবচেয়ে বেশি
কিন্তু দেখো, আমার তোমাকে দরকার ছিল
রোজ, দুবেলাই-
বাগানে, খোলা বাতাসে
বাইরে
পূজা শেষ না হতেই উঠলাম
কে কাঁদে?
নৈবেদ্যর থালা হাতে বাইরে এসে দাঁড়াই
কে ডাকে?
প্রদীপের আলো ধরি তুলে
কে তুমি?
প্রভু বললেন, আমি।
আয়
খোল দরজা
টান মেরে খোল
ওরে ভিতরে আয়
আসবি না?
তবে আমায় বাইরে ডাক
ডাক, ডাক, ডাক
বুক চিরে ফিনকি দিয়ে প্রাণের ফোয়ারা
মাটি ভিজিয়ে যাচ্ছে
গাছ লাগাবি না?
আয় আয় আয়
বীজ বুনেছি রে
সব মৃত আশাগুলো
গুটিয়ে গুটিয়ে
শুকিয়ে শুকিয়ে
বীজের পর বীজ জমিয়েছি
তোর মুখের দিকে তাকিয়ে বসে
কোথায় তুই ঝোড়ো বাতাস?
মা জানো
মা জানো তোমার শাড়ীগুলোতে
এখন শুধুই ন্যাপথলিনের গন্ধ
তোমার চটিটা প্লাস্টিকে মোড়ানো,
একটুও কাদা লেগে নেই তাতে
তোমার শাঁখা-পলা গুলোয়
সিঁদুরের দাগ ফিকে হয়েছে অনেক