Skip to main content

যন্ত্রণার তাগিদ

কথাটা শিবজ্ঞানে জীবসেবা না আত্মজ্ঞানে জীবসেবা? কোনটা বেশি কাছে আসে?

চাঁদ না মেঘ

 

মন্দিরের দরজায় তালা লাগিয়ে, মঠের দরজায় তালা লাগিয়ে সাধু নিজের ঘরে গিয়ে বসলেন। একাই বসে। কোনো ভক্ত সমাগম নেই। খাঁ খাঁ করছে মন্দির প্রাঙ্গণ। কি এক রোগ এলো!

মৃতদেহের সাক্ষী

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পড়বে,
মঙ্গলগ্রহে রকেট পাঠাতে চাওয়া একটা দেশ, বুলেট স্পিডে ট্রেন চালাতে চাওয়া একটা দেশ, ৫জির স্বপ্ন দেখা একটা দেশ, ডিজিটাল হতে চাওয়ার বাসনা রাখা একটা দেশ....

ধিন তাক তাক

তো অন্নপ্রাশন তো হল
তা বলে কি 
   স্যারিলাকের দিন গেল?
না হয় আমি ছোটো একটু
বিছানাতেই সারি হাগুমুতু
তা বলে ওরে আর কতদিন 
সুইগি জোমাটোর
   দে নাম্বার,
    ওসব না খেলে 
    দেহ বলহীন 
মুরগীর ঠ্যাং
  বিরিয়ানি কোপ্তা
       ফুচকা পান্তুয়া 
   রোজ কি বলেছি?
       হপ্তা হপ্তা।

শপিংমল আর ঘুণপোকা

একটা সহস্রতলা শপিংমল তৈরি করা হচ্ছিল। সবার কাজ ভাগ করে করে দেওয়া হচ্ছিল। অনেকে থাকবে বাইরে, তারা বাইরে থেকে শপিংমলের যোগানদার হবে। তাদের শপিংমলের উঁচু থেকে খাবার ছুঁড়ে দেওয়া হবে। আর বাদবাকিরা থাকবে ভিতরে। এক একজন এক এক তলায়। সামর্থ্য অনুযায়ী। সবাইকে একটাই জিনিস দিতে হবে, জীবন। আর জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে বাদবাকি যা

নাস্তিক চলন

ছাত্র হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন লিখে পাঠালো, স্যার নাস্তিক চলন কি?
প্রশ্ন দেখে ঘাবড়ালাম। নাস্তিক মানুষের চলন নানাবিধ। কেউ ঈশ্বরকে যুক্তিতে না পেয়ে নাস্তিক। কারোর ঈশ্বরের অস্তিত্বে অস্বস্তি, সে আরেক ধরণের নাস্তিক। আবার কেউ কেউ সিজন, লোকেশান, কমিউনিটি অনুযায়ী কখনও আস্তিক, কখনও নাস্তিক।

পার্ফেক্ট

তুমিও জানো আমি পার্ফেক্ট নই। আমিও জানি তুমি পারফেক্ট নও।

    তবু আমি ভয় পাই যদি তুমি পার্ফেক্ট হয়ে থাকো। তুমি ভয় পাও আমি যদি পার্ফেক্ট হয়ে থাকি।

    অগত্যা তর্ক করে আমি আমার ভয় আর তোমার ভান ভাঙাতে চাই।

প্যারালাল ওয়ার্ল্ড

অ্যাদ্দিন জানতুম প্যারালাল ওয়ার্ল্ড কথাটা একটা অতিজাগতিক তত্ত্ব হয় তো বা।

মেঘ আর ঠাকুমার গল্প

আচ্ছা, আমি কুসুম ঠাকুমার গল্প কি বলব? একটা দরমার বেড়া দেওয়া ঘর। ছাদ বলতে টালি। টালির কয়েকটা আবার ভাঙা। একটা জানলা মাঠের দিকে। একটা জানলা রাস্তার দিকে। ঘরের দক্ষিণ দিকে একটা খাট। খাটের উপর একটা পাতলা তোষক। একটা তেলচিটে মাথার বালিশ। খাটের পাশে একটা কুঁজো। তার মাথায় টুপির মত রাখা একটা স্টিলের গ্লাস। দেওয়ালে ঝুলছে চার বছরের আগের একটা ক্যালেন্ডার। কৃষ্ণের ছবি, ভুল বললাম, গোপালের মাখন খাওয়ার ছবি আছে বলে ঠাকুমা ফেলেনি। একটা আলনা উত্তর দিকে রাখা। কয়েকটা সাদা শাড়ি। গামছা। বিছানার চাদর দুটো। বাড়ির সামনে একটা ছোটো ঘর। ঠাকুমার ছাগলগুলো থাকে। দুটো বড় ছাগল। তিনটে বাচ্চা ছাগল। ঠাকুমা দু’বেলা ছাগল চরাতে মাঠে যায়। শাকপাতা যা পায় নিয়ে আসে। বেলায় একবাড়ি বাসন মাজে, কাপড় কাচে। এইতেই চলে যায়।

জীবন মরণের সীমানা ছাড়িয়ে

এপিকটেটাস খুব বড় একজন দার্শনিক ছিলেন। খুব কঠিন জীবন ছিল। এক ধনীর বাড়ি দাসত্ব করতেন। মালিকের খুব সুনজরে ছিলেন না। এত মার খেতেন, এত মার খেতেন যে অনেকে বলেন তিনি নাকি প্রায় পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন। ওনার সম্বন্ধে এই কথাটা শুনেই আমার আমাদের অষ্টাবক্র মুনির কথা মনে পড়ে। তারও দেহের আকার নাকি এমনই ছিল। সবাই তো রাম ঠাকুর বা রামপ্রসাদের মালিকের মত মালিক পান না, যারা গুণের কদর করে তাদের মান দিয়ে মুক্তি দেবেন, অগত্যা এপেক্টেটাসও পাননি।

মেনে নিতে হয়

হাতে রিমোট 

একটা টিপলে IPL
একটা টিপলে রিয়েলিটি শো
একটা টিপলে সিরিয়াল
একটা টিপলে সিনেমা

একটা টিপলে
মৃত্যু মিছিল
হাহাকার 

নাছোড়বান্দা 
    না নিভন্ত চুল্লী

মেটে, না হৃদয়?

এতটা কোনোদিন আসে না। আজ কি খেয়াল হল কে জানে? কিছু ভাবছিল কিনা নিজেও মনে করতে পারল না। আর মনে করেই বা কি হবে? ভাবনা তো ভাবনাই। নদীর মত। বয়েই যাচ্ছে। বয়েই যাচ্ছে। ওহ...

মন

মন কোথায় রাখব? স্বস্তি নেই মনে। দু বছর আগে যে জীবনটা মনে হত একঘেয়ে, তেমন কিছু কেন হচ্ছে না। আজ সেই জীবনটার চাইতে কাঙ্ক্ষিত আর কিছু নেই। সেই সাদামাটা জীবনটাই চাই। দরকার নেই কোনো বিশেষ অভিজ্ঞতার। দরকার নেই নিত্য জীবনের বাইরে কোনো অসাধারণ জীবনের। প্রাণ গলায় এসে ঠেকছে। রাতের ঘুম বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চেনা অচেনা সব মানুষের সঙ্গে যে এত কাছাকাছি রকমের বাঁধা আছি সেটা এত স্পষ্ট করে বুঝতে পারিনি আগে। এত এত মর্মান্তিক ছবি ছাপা হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলোর মুখোমুখি কিভাবে হব? শুধু আতঙ্ক তো নয়। অসহায়তায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জীবিকার জন্য কাজটুকু করেই হোয়াটস অ্যাপে, মেসেজে, ফোনে বসে পড়ছি চেনা অসুস্থ মানুষজনদের খোঁজ নিতে। আজ কেমন আছেন? কোনো মানুষ বাড়ি ফিরে গেছেন শুনে আনন্দে চোখে জল আসছে। তেমনই কেউ চলে গেছেন শুনে হেরে যাওয়া বিষণ্ণতায় আবার কুঁকড়ে যাচ্ছি।

দেশ ভগবানের ভরসায় চলছে

আজ হাইকোর্ট বলেছে বর্তমানে দেশ ভগবানের ভরসায় চলছে। অবশ্যই কোর্টের বিচারকদের দিব্যজ্ঞান হয়নি যে তারা এ কথা বলছেন। তারা এ কথা বলছেন চরম আক্ষেপের সঙ্গে, এ বলার অপেক্ষা রাখে না। 

    আসলে শুধু নেতার দোষ না। যেদিন অত বিশাল মূর্তি বসল, যেদিন অত কোটি টাকা দিয়ে মন্দিরের প্রকল্প হল, সেদিন আমরা একজোট হয়ে বলতে পারিনি, এই টাকাগুলো আগে আমাদের স্বাস্থ্যের খাতে খরচ হোক। গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো উন্নত হোক। সরকারি হাস্পাতালেগুলোতে চিকিৎসার সঠিক সরঞ্জাম আসুক। না, এগুলো

বই দিবস

আজ বই দিবস। আগের বছরও ছিল। সামনের বছরও হবে। আগের বছর অনেক মানুষ চলে গেছেন। এ বছরও অনেক অনেক মানুষ চলে যাচ্ছেন। অক্সিজেন, ইনজেকশন পাওয়া যাচ্ছে না। বইতে অক্সিজেন বানানোর পদ্ধতি লেখা আছে। বইতে ওষুধ বানানোর পদ্ধতিও লেখা আছে। এও পড়ানো হয়, demand and supply theory মানে কি। এ সব তত্ত্ব বইতে লেখা আছে। কিন্তু এখন কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। 

কতবার

দরজায় এসে দাঁড়াবে
আমি চিনতে পারব 

এইটুকু তো কথা
এইটুকু তো আশা

তবু তারই মধ্যে 

কতবার মৃত্যুর যাতায়াত 
উঠতে হল কতবার
কত ভুল মানুষের জন্য

ঘুম

যারা ভোট দিতে গেল
যারা ভোট দিয়ে ফিরল
যারা ভোট করালো
আর যারা পাহারা দিল

কর্তব্য করতে করতে
সবাই আশা করছিল
   সব কর্তব্য শেষ হলে
         একটা টানা ঘুম দেবে

তবু শুধু ছুটতে হবে বলে

আসলে এখন কোনো বিশেষ মৃত্যু নেই। এখন মৃত্যু মানে শুধুই শোক নয়। মৃত্যু মানে ক্ষোভ। আতঙ্ক। আস্থাহীনতা। কোথায় পা রাখবে মানুষ? মাটি বদলে যাচ্ছে। বাতাস বদলে যাচ্ছে। আকাশের রঙ বদলে গেছে। এত এত পুঞ্জীভূত অন্ধকার জমেছিল কেউ টের পাইনি আগে। এখন সেই অন্ধকার হাতড়ে হাতড়ে চেনা রাস্তায় ফেরার চেষ্টা করছি সবাই। তাই কি হয়?

দৌড়ে কি হবে?

পরেশ সামন্ত "ধুর শালা, নিকুচি করেছে ঘুম" বলে উঠে পড়ল বিছানা ছেড়ে। বিছানায় ছারপোকা থাকলে মানুষ এমনিই দার্শনিক হয় - এমন একটা গভীর উপলব্ধি নিয়ে, ঘর্মাক্ত কলেবরটাকে ঘেমে যাওয়া বিছানা থেকে তুলে আবার বলল, শালা। মানদা ঘুমাচ্ছে। ঘুমাক। মূঢ় জীব!

রাস্তা

সেদিন দেখলাম
অমন ব্যস্ত রাস্তায়
ঝরে পড়ে আছে কতশত রাধাচূড়া 

গতকালের ঝড়ে ঝরেছে নাকি

রাস্তা বলেনি ওদের,
   "সরে যাও তোমরা, আমার যে কত কাজ!" 

রাস্তা জানে
সময় হলে ওরা এমনিই যাবে মিলিয়ে, 
   ধুলোয়, ব্যস্ত অবহেলায় 

টগরেশ্বরী

বাড়ি ফিরে দাওয়ার উপর বউকে মরে পড়ে থাকতে দেখে আর বাড়িমুখো হয়নি চিকুন ভিখারি। এমনকি এই অবস্থায় বাড়ি ছেড়ে গেলে পুলিশে খোঁজ করতে পারে বলেও তার মনে হয়নি। স্রেফ মনে হয়েছে আর বাড়ি থেকে কি করবে, তাই রাস্তায় হাঁটা লাগিয়েছে। আঠারো বছরের দাম্পত্য জীবনে এক মুহূর্তে দাড়ি টেনে দিল।

রবীন্দ্রনাথ ও স্প্যানিশ ফ্লু

রবি ঠাকুরের সময় এসেছিল স্প্যানিশ ফ্লু, ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। ১৮ মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল শুধুমাত্র ভারতেই নাকি। রবীন্দ্রনাথ কিভাবে সামলেছিলেন? বিশ্বভারতী গড়ে উঠছে, হাজার একটা সমস্যা তো আছেই, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি। তার মধ্যে এই অতিমারী। 

একটা গল্প

আজ একটা গল্প মনে পড়ছে। আমি কলেজে শুনেছিলাম। 

একটা প্লেন ক্র‍্যাশ হয়েছে। প্রাইভেট প্লেন। দেশের কোনো এক মন্ত্রীর প্লেন ছিল। যদিও কেউ মারা যায়নি, কিন্তু সবাই কোমায়। সুস্থ বলতে একমাত্র একটা শিম্পাঞ্জি, সেও ওই প্লেনেই ছিল। 

মানুষ বাঁচে মনে

গতকালের কথা। দুপুর গড়িয়ে সদ্য বিকাল হয়েছে। এক বিশেষ দলের বেশ কিছু রাজনীতির মানুষ বাড়ি বাড়ি স্লিপ দিচ্ছেন। অবশ্যম্ভাবীভাবেই কারোর মুখে মাস্ক নেই। কারণ, "আমাদের এদিকে তেমন আসেনি"..."পকেটে আছে, এই খুললাম"..."গরম লাগে"...ইত্যাদি নানা ভ্যালিড কারণ তো আছেই। তাছাড়া কপালে থাকলে কে আটকাবে - এর থেকে বড় জীবন দর্শনই বা কি থাকতে পারে! 

আকাশ মাটি বৃষ্টি আর ভালোবাসা

মিত্তির মশায় আলি সাহেবের কবরের সামনে এসে প্রায় প্রতি রবিবার বিকেলে বসেন। দুজনেই ছেলেবেলার বন্ধু, প্রাণের বন্ধু ছিলেন। কর্মসূত্রেও সারাটা জীবন কাছাকাছিই থেকে গেলেন। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় আলি সাহেব চলে গেলেন মাত্র কয়েকদিন জ্বরে ভুগে। সবাই বলল, স্বাভাবিক সময়েই গেলেন। কিন্তু মিত্তির মশায়ের মন বলল, তাই কি? তবু মেনেই নিলেন, কারণ কথাটা সংসারের হিসাবে তো সত্যি।

প্রজ্ঞা

প্রশ্ন - পাণ্ডিত্য ও প্রজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য একটি করিয়া বাক্যে বুঝাইয়া লেখ। 

উত্তর - করোনা হইতে রক্ষা পাইতে ও অন্যকে রক্ষা করিতে মাস্ক পরিধান আবাশ্যক - ইহা জানার নাম পাণ্ডিত্য। 

সঠিক সময়ে, সঠিক মাস্ক, সঠিক উপায়ে ধারণ করিবার অভ্যাসকে বলে প্রজ্ঞা।

নিরাপদ মানুষ

যে মানুষ বলে, আমি কাউকে ভয় করি না।


আমি তাকে ভয় করি। 

যে মানুষ বলে, আমি অত্যন্ত কঠোর জীবনযাপন করি, এ আমার ধর্ম। 

আমি তাকেও ভয় করি, 
যে নিজের উপর কঠোর হওয়াকে গর্বের বলে জানে, সে অন্যের উপর নিষ্ঠুর হওয়াকে জানে দায়িত্ব বলে। 

যে মানুষ বলে, আমি স্পষ্টবক্তা, আমি কোনো কথা রেখেঢেকে বলি না।

আমরা এখানেই থাকি, আসিস

ধুধু মাঠ। একটা অশ্বত্থ গাছের নীচে হেলান দিয়ে বসে আছি। চারদিকে তাকানো যাচ্ছে না, এত রোদ। এগারোটা বারোটা হবে হয় তো। আজ বৈশাখ মাসের প্রথম দিন, হ্যাঁ, মানে নববর্ষ, ১৪২৮। বৈশাখ মানে তো, হে নূতন, দেখা দিক আর-বার... আর বুদ্ধ। বুদ্ধের জন্ম ঠিক বৈশাখে না হলেও, এই গরমকাল এলেই মনে হয় সেই বিকালে গোল চাঁদ - বুদ্ধপূর্ণিমার চাঁদ। 

কোনো উত্তর নেই

আমি ওরকম ভীষণ শূন্য দৃষ্টি, ওরকম প্রাণহীন হাসি আজ অবধি দেখিনি। সারা ঘর শুধু বই আর বই। খাটে, মেঝেতে, তাকে শুধু বই আর বই। নানা দেশের ম্যাগাজিন। সব অগোছালো।

ও কিছু বোঝে না

এই যে মাঝে মাঝেই বলতে শুনি, ও এসব বোঝে না, ওকে যা দাও ও খেয়ে নেবে, সে তোমার রান্নায় নুন হোক না হোক, সিদ্ধ হোক না হোক, মিষ্টি হোক না হোক... ও কিচ্ছু বলবে না, চুপ করে খেয়ে উঠে যাবে

না জানি কি করে


===
গোলাপটা সাবানজলে কেচে
রোদে শুকাতে দিয়েছে দেখলাম
কাচাকাচির পরে,
চড়া রোদের তাপে
উজ্জ্বলতায় ফেটে পড়ছে যেন
কৃত্রিম না হলে
এতটা নির্লজ্জ কেউ হতে পারে?

হংসবলাকা

দূরত্ব মাপো তুমি। আমিও মাপি। একটা নদীও যেন বাঁশডোবা জল পেল না। চরায় ঠেকে যাওয়ার ভয় দাঁড় বাইতে বাইতে ক্লান্ত মাঝি ঘুমিয়ে পড়ে। জ্যোৎস্নায় শরীর ভেসে যায়। জানতে পারে না। ঘুমের মধ্যেও ডোবা চরের আতঙ্ক।
জঙ্গলের মধ্যে দাঁড়িয়ে কে ও? যেন শতাব্দী আগে দাঁড়িয়ে ছিল এখানে। অবচেতন মনে পূর্বজন্মের হাজারও জিজ্ঞাসার ভিড়। জিজ্ঞাসা করলাম, আমায় চেনো? উত্তর দিল না। মিলিয়ে গেল। এখন জঙ্গলজুড়ে পাখির ডাক। ঘুমন্ত মাঝি। জ্যোৎস্নায় ভাসা নদী।

মানুষ কি সে!

মানুষ এখন কমতে কমতে সংখ্যা

মানুষ এখন ব্রেকিং নিউজে কয়েক মিনিট

মানুষ এখন বোতাম টেপা স্ফুলিঙ্গ 

মানুষ এখন ধ্রুবতারা চেনে বিভাজন রেখায়

মানুষ এখন কোলাহলে ঘেরা শুধুই কুয়াশা

মানুষ এখন আর যাই হোক
    সন্দেহ তার নিজেকে নিয়ে
           মানুষ কি সে!

অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড

একবার হল কি ওশোর যৌনতার উপরে লেখা একটা বই নিয়ে একজন বরিষ্ঠ জ্ঞানীগুণী মানুষ, খুব সম্ভবত মোরারজী দেশাই মন্তব্য করেন, খুব অশালীন বই ইত্যাদি ইত্যাদি। ওশোকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনার এই বিষয়ে কি বক্তব্য।

সত্যের জোর

সত্যের উপর ভালোবাসা নেই অথচ দেশের উপর, ধর্মের উপর, স্বজাতির উপর ভালোবাসা আছে যারা বলে, তারা আদতে মিথ্যাই বলে। সুচারু রূপে বলে। 

আবেগপ্রবণ

বাঙালি হুজুগে জাত। জন্মাবধি শুনে আসছি। আমার জন্মানোর বহুযুগ আগে যারা বাঙালি হয়ে জন্মেছিলেন তারাও একই কথা লিখে গেছেন। অর্থাৎ এই নিয়ে মতান্তর থাকার কথা নয়। 

    হুজুগের মাত্রাটা আরেকটু চড়িয়ে বললে, বাঙালি আবেগপ্রবণ জাত। এ কথাও বাঙালি সৃষ্টি করার সময় বিধাতা বিশেষ করে মাথায় রেখেছিলেন বলেই শুনেছি। 

আমিও আছি

যদি তুমি বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারো
   কারণ তুমি সুকৌশলে মিথ্যা বলতে পারো বলে

তবে জেনো, আমিও আছি
        যে তোমার কথা শুনি না

যদি তুমি বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারো
     তোমার পিছনে হাজার হাজার অন্ধ হুজুগে হাঁটে বলে

তবে জেনো, আমিও আছি
     যে তোমার পিছনে হাঁটি না

আপনার জন্য লজেন্স নিয়ে আসি

মাঝে মাঝে নিজের জন্য মায়া হয়। নিজের উপর তৃতীয় ব্যক্তির মত মায়া লাগে। মনে হয় নিজের গালে নিজে একটা চুমু খাই। নিজে যখন ঘুমাই তখন মনে হয় নিজের মাথার কাছে জেগে বসে থাকি। নিজের মাথায় নিজেই হাত বুলিয়ে দিই। আপনার এরকম হয়?

জানি না, ভেবে দেখিনি। হয়, হয় তো।

ঝুড়ি ও আমি

চেতনার আশেপাশে এত যে কিছু ঘটে চলে, সে সবের মধ্যে ছিপ ফেলে বসে আছে, একা 'আমি' এক। যা পায় তাই তুলে দেখে তার 'আমি' ঝুড়িতে রাখার মত কিনা। কিছু রাখে, বাকি অনেকটাই করে অপচয়। মাঝে মাঝে নিজেকেই প্রশ্ন করে, এত অপচয়? সত্যিই কি কাজে লাগানো যায় না ওগুলো? ওগুলো মানে কোনগুলো? হিসাব করতে পারে না। 

ঝড়

তখন বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যখানে, 
যখন ঝড় উঠল
যা কিছু স্পষ্ট 
   মুহূর্তে হল অস্পষ্ট 
ধুলো ধুলোয় ঢাকল 
      এমন আত্মবিশ্বাসে
          যেন ওরই এখন আসার কথা ছিল

  আমার এখানে থাকার কথা ছিল কি?

ক্যানভাসের নিস্তব্ধতা

হয় তো নিঃসঙ্গ ছিলে
নিস্তব্ধ ছিলে কি? 

যদি থাকতে 
জানতে তবে
একটা পাতা ঝরানোর জন্যও 
   কত আয়োজন লাগে,

একটা সবুজ ঘাসও হলুদ হয়ে যায় না রাতারাতি 

আসলে ক্যানভাসের নিস্তব্ধতাকে বুকে জড়িয়ে নাওনি কোনোদিন
        কোনো ছবিই সম্পূর্ণ হল না তাই

নিরভিমান রোদ

বিকেলের নিরভিমান রোদ
তোমার চোখে এসে বসেছিল
আমার এক মুহূর্তে মনে হল
ও যেন আমায় ঘরের ঠিকানা জানিয়ে গেল

ভয়টুকু তো বোঝো

আমার ভয়টুকু তো বোঝো

ওটুকুই সব

ভালোবাসা তো
   না-মানুষেও বোঝে

(Samiran-দা এভাবে ভাষাকে মূর্ত করে তুলতে অনায়াসে পারেন। প্রণাম দাদা।)

ভ্যাক্সিন পর্ব

আমি যখন ভ্যাক্সিন নিচ্ছি তখন জানলার বাইরে বসন্ত ফাইল হ্যাণ্ডওভার করছে গ্রীষ্মের কাছে। এরই মধ্যে করোনার দ্বিতীয় পর্বের দামামা বেজে গেছে। রবীন্দ্রনাথ গ্রীষ্মকে মৌনতাপস বলেছেন, মানে বৈশাখকে। আমাদেরও তপস্যার সময় এসেছে। গতকালই একটা তিরিশ বছরের ছেলে হাস্পাতালে বেড না পেয়ে মুম্বাইতে মারা গেছে, অবশেষে কয়েক ঘন্টার জন্য পেয়েছিল যদিও। আমাদের আরো সাবধান হতে হবে। এই যুদ্ধে যার যতট

কেউ বলবে না

"ন্যাকামি করবেন না"।

    মজার কথা হচ্ছে, কেউ কিন্তু উঠে গেলেন না। কেউ বললেন না, আপনি এই শব্দটার জন্য ক্ষমা না চাইলে অনুষ্ঠানটা আর একরত্তিও এগোবে না। একজন জিভ কেটে পাশে বসে হাসলেন। বাকিদের অভিব্যক্তি ক্যামেরায় ধরা পড়েনি।

সব গোল্লা

গ্রীষ্মকাল। প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। হাওড়ার সালকিয়ায় থাকি তখন। ঘিঞ্জি শহর। ছাদে সবাই শুয়েছি। গরমকালে তখন তেমনই শোয়া হত। অনেক রাত। আমার ঘুম আসছে না। পাশে সবাই ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে হাওয়া দিচ্ছে আর সামনের অশ্বত্থ গাছের পাতাগুলো হাততালি দেওয়ার মত আওয়াজ করে উঠছে। আকাশে চাঁদ। ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের দল ভেসে যাচ্ছে। অল্পক্ষণের জ

মামু

আমাকে সব চাইতে মজার বোকা বানিয়েছিল আমার ছোটো মামু। মানে কয়েকদিন আগে যার ভূতের সিনেমা পোস্ট করেছিলাম।

    আমি, সে আর আমার বোন পাশাপাশি শুয়েছি। আমরা এটা সেটা গল্প করছি, হঠাৎ ছোটো মামু, মানে অদ্রিজা বলল, মা ওই মিষ্টিটা অনেকদিন খাইনি আমরা।