কেন্নো
মানুষটা রাতদিন অতীতের গল্প বলত
বলতে বলতে অতীতগুলোকে কেন্নোর মত ধরে
বর্তমানের গাছের শাখায় ছেড়ে দিত
অতীত হামাগুড়ি দিয়ে এ ডাল, সে ডাল
এ পাতা, সে পাতা বেড়াতো
আজ তৃতীয়া
শুচি আগরওয়াল
বয়েস পঁয়তাল্লিশ
আড়াই মাসের গর্ভ সাবধানে বাঁহাতে ধরে
অত্যাধুনিক গাড়ির দরজা খুলে,
নীচে কাদা আছে কিনা দেখে
মাটিতে পা দিল
যার বুকে সাত সমুদ্রের জল
তবু তো শোক শুদ্ধ করে
রোদে পোড়া তপ্ত একটা রেললাইন
তখন উষ্ণ ফুৎকারে
পৃথিবীকে তালুতে রেখে গড়িয়ে নিচ্ছে মহাকাল
ঝিম ধরা দুপুরে চিলের ডাক
বড়ি দেওয়া কাপড় কুঁচকে যাচ্ছে ছাদে
মিথ্যা
সেদিন
মিথ্যা মানে জানতাম প্রেম
মিথ্যা মানে জানতাম সুখ
মিথ্যা মানে জানতাম নীড়ের স্বপ্ন
যতদিন মিথ্যা ছিল আমার ঘরের দুটো শালিক
এখন মিথ্যা মানে জানি অপমান
মিথ্যা মানে জানি যন্ত্রণা
মিথ্যা মানে জানি শূন্যতা
যখন মিথ্যা আমার ঘরের ঘুণপোকা
কয়টা?
সবুজ সবুজ সবুজ
যেখানে গিয়ে সবুজ থামল
সেখানে জাল
সেই জালেতে আটকে আছে কয়টা শালিক?
তিনটে শালিক তিনটে শালিক তিনটে শালিক
সবুজ সবুজ সবুজ
যেখানে গিয়ে নীলে মিশল
সেখানো ধোঁয়া
সেই ধোঁয়াতে মুখ লুকালো কয়টা মোরগ?
তিনটে মোরগ তিনটে মোরগ তিনটে মোরগ
ভয় তাকে নিয়েই
যে দরজা খুলে বাইরে পা রাখেনি কখনও
তাকে নিয়ে কি ভয়?
যে বাইরের ধুলো ঘরে নিয়ে যায়
ঘরের গন্ধ মাখা হাত বাইরের ফুলগাছে বুলায়
তাকে নিয়ে কি ভয়?
লাল সিগন্যাল
মধ্যরাতের প্ল্যাটফর্ম
শেষ ট্রেন কখন বেরিয়ে গেছে কেউ খেয়াল করেনি
শুধু ঝিম ধরা চোখে
সবুজ পতাকাটা কোনো রকমে দেখিয়ে
ঘরে গিয়ে কাঠের বেঞ্চে শুয়ে পড়েছে সনাতন হালদার
সামনের ডিসেম্বরে অবসর
ভালোবাসা না
ভালোবাসা না
বেঁচে থাকার মাসকাবারি নিতে এসেছি
তাকিও না
আমি তাকিয়ে নিয়েছি
ভালোবাসা না
সামান্য প্রাণের
বেঁচে থাকার বায়না মেটাতে এসেছি
আগুন
সময় ফুটল মনের মধ্যে
ঘুম ছাড়া চোখ ভোমরা
ঝড় ঠেকাচ্ছি ভাঙা শিকলেতে
নিলামেতে হৃদি পসরা
পরিযায়ী পাখি, মধুর ঠোকর
প্রাণে বিষাক্ত রঙ ফাগুন
যার ভুলের ঘরে বসতি পাতা
তারই চুম্বনে চিতা, আগুন
বড় রাস্তাটা
বড় রাস্তাটা আরো চওড়া হওয়ার কথা ছিল
তাই অনেক উচ্ছেদ হল, সংস্কার হল
তারপর বড় রাস্তাটা
কি করে, কি করে জানি