Skip to main content

বিলাসী

 

---
কিছুটা হলেও টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিল বিলাসী। বয়স চল্লিশের আশেপাশে। বাড়ি মুকুন্দপুর। হরিনাভীতে স্বামীর ভিটে। মেয়েটাও তার সাথে কাজে বেরোতো। গীতা। উনিশে পড়েছিল এই মাঘের শেষে। বিলাসী চারটে বাড়ির ঠিকে ঝি-র কাজ করত। তার স্বামী মদন ভাগের চাষ করত। ছেলেটার বিয়ে দিয়েছে গত শ্রাবণে। নেতাই আর তার বৌ কামিনী। নেতাই চব্বিশে পড়েছে। আর কামিনীর বয়স ওই গীতার মতই হবে।

তীক্ষ্ণ উপস্থিতি

রোজ রোজ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থেকে ফিরে যেত
আজ ডাকলাম, বললাম কি চাও?
সে তাকিয়ে থাকল শুধু

অনেকদিন গেল
রোজ দেখি তাকে পুকুর পাড়ের রাস্তার পাশে
আমারই জানলার দিকে তাকিয়ে
কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কি চাও?

আরো অনেক বছর গেল
রোজ তাকে দেখি আমার সান্ধ্যভ্রমণের পথে দাঁড়িয়ে
আমারই দিকে চেয়ে
কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কি চাও?

বাঁকাচোরা

(লেখাটির সাথে আমার পরিচিত জীবিত/ মৃত/অনাগত কোনো মানুষের মিল নেই।)

জোঁক না, কেঁচো হই এসো

আমার সহযাত্রীদের কথা বলি। আমার পাশেই আছেন একজন আসামের প্রত্যন্ত গ্রামের মাঝবয়সী একজন ব্যক্তি। নীল টি-শার্ট আর খয়েরী রঙের প্যান্ট পরা। কাল দশটার থেকে মুখের অভিব্যক্তির খুব একটা পরিবর্তন দেখিনি। বসার ভঙ্গীও প্রায় একই রকম। পূর্ণ নির্বাক। 

নীল নীরবিন্দু


দীঘির ধারে ডাকলে, মৃদু হাসির ইশারায়
বললে, নামো
আমি বললাম ভয়ে, সাঁতার জানি না যে!
বললে, তবু নামো
নামলাম
যত নামলাম শরীর হতে লাগল হাল্কা
মাঝ দীঘিতে দাঁড়িয়ে তুমি
চোখে তোমার দৃঢ় প্রত্যয়ের জ্যোতি
স্নেহের কিরণে মাখা
বললে, চিৎ হয়ে ভাসো
দু'হাত মেলো ডানে বাঁয়ে
মেললাম
এখন নীলাকাশে চোখ
সারা শরীর দীঘির জলে মগ্ন

অ্যালপ্রাজোলাম

দাঁড়ান। ও কি! অত জোরে জোরে পা ফেলছেন কেন? এত জোরে জোরে কেউ শ্বাস নেয়? আরে অত তড়বড় করে কি বলে ফেলছেন কিছু খেয়াল আছে?
      বুঝেছি আপনার অসুবিধাটা কোথায়। সকাল থেকে একটাও অ্যালপ্রাজোলাম পড়েনি বুঝি?

ভারত আর ইন্ডিয়া

ব্যাঙ্গালোর থেকে ফেরার পথে এখন। স্লিপার ক্লাস। ছোটবেলায় বাবার রেলের চাকরীর কারণে যেখানেই বেড়াতে যেতে হত, AC 2/3 তে যেতে হত। খুব রাগ লাগত। কারণ একটাই, রাত্রে জানলা দিয়ে কিছু দেখা যেত না। মনে আছে, আমি বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কাটা হলেই দেখতাম সেদিনটা পূর্ণিমা কিনা। আরে তবু কিছু তো দেখা যাবে!

সময় সমুদ্র

মন একলা দাঁড়িয়ে সময়-সমুদ্রের সামনে
অনেক কিছু হারিয়েছে এ সমুদ্রে সে
ঢেউয়ের পরে ঢেউ আছড়ে ভেঙেছে তার ঘর
                           কেড়েছে তার সুখ
বুকের পাঁজরগুলোতে করেছে বড় বড় ফাঁক

কিছু কথা

আমার সব কথা অক্ষরের মত না, শব্দের মত না।
কিছু কথা কৃষ্ণচূড়া ফুলের মত
কিছু কথা বর্ষার পাতাঝরা জলের মত
কিছু কথা ফসল তোলা ক্ষেতের মত
কিছু কথা মাটিতে ঝরা, তবু না যেতে চাওয়া ফুলের মত
কিছু কথা টিন কাটা তীক্ষ্ণ আর্তনাদের মত
কিছু কথা শেষ ট্রেন চলে যাওয়া প্ল্যাটফর্মের মত

এরকম আরো অনেক অনেক কথা
যার শব্দ অভিধানে নেই, বলব কি করে?

পয়লা বৈশাখ


এই প্রথম পয়লা বৈশাখ কাটালাম বাংলার বাইরে। বাংলা গান ছাড়া। আমি এখনো জানি না এটা বাংলার কোন সাল পড়ল। কাজের জগতে যেহেতু তার দরকার নেই, তাই দিনের খাতাতেও তার হিসাব নেই। থাক, নাই বা জানলাম। 

আমার জীবনে বাংলা দেওয়াল পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার তিনটে দিনেই ইংরাজী ক্যালেন্ডারকে সরিয়ে দাঁড়ায়। পয়লা বৈশাখ, পঁচিশে বৈশাখ আর বাইশে শ্রাবণ। 

Subscribe to