দৃষ্টিভঙ্গী
যদিও আমরা কথায় কথায় খাজুরাহো, কোনার্কের মূর্তির দিকে আঙুল তুলে বলি, দ্যাখোদিকি আমরা কত উদার, কি নিষ্কাম দৃষ্টিভাবনা আমাদের, তবু মিন্ত্রার ভাগ্যে তা জুটল না। কদিন আগেই গয়নার বিজ্ঞাপন নিয়েও একই ঘটনা ঘটেছিল।
পোর্টিং
যখন ফোন নাম্বার পোর্টিং করার ব্যাপারটা জানলাম, আবার বেশ মজা লাগল। আমার একটা এয়ারটেল নাম্বার ছিল, মানে যেটা আমার বর্তমান ফোন নাম্বার আর কি। তো আমার কি খেয়াল হল, মনে হল এয়ারটেলে কেন থাকব, যাই এয়ারসেলে, বেশ সস্তা। দিলুম পোর্টিং এর আবেদন করে। এয়ারটেল থেকে ফোন করল, কেন ছাড়ছেন, এতদিনের পুরোনো কাস্টমার আপনি। বললুম, "আপনাদের এখানে থেকে আমি কাজ করতে পারছি না, না ফোন ঠিক আসছে,
মহামানবের সাগরতীরে
কেউ ভারতকে পেতে চায়। কাউকে ভারতে পায়।
যে ভারতকে পেতে চায়, সে কড় গোনে, দাগ কাটে, এদিক ওদিক ভিন্ন ভিন্ন রং খোঁজে, চোখ রাঙায়, দল পাকায়, দল ভাঙে।
আসলে তো শেষ হয় না
অল্পক্ষণ পরেই সব শেষ হয়ে যাবার কথা। বুলেট শরীরকে বলল, থামিয়ে দিলাম। আগুন শরীরকে বলল, পুড়িয়ে দিলাম।
সব শেষ হল। আগুন নিভে গেল। বুলেটের জন্ম সার্থক। আগুনের তাপ সার্থক।
সহানুভব শিক্ষা
১) “স্যার বেশি মাস্টারবেট করলে আর বাচ্চা হয় না?"
২) “দিনে ক'বার মাস্টারবেট করা যায়?”
৩) “স্যার আমার মনে হয় আমার একটা টেস্টিস বড়, একটা ছোটো।”
৪) “স্যার কত ফোঁটা রক্ত জমে যেন এক বিন্দু বীর্য তৈরি হয়?”
এই মুক্তি
আমার খুব কাছের এক বন্ধু তার জগন্নাথ দর্শনের গল্প বলছিল। আমি না হয় তার ভারসানেই লিখিঃ
জানতে পারে না
নার্সিংহোমের বিলের
ম্যারাথন রেস
কোনো রকমে থামিয়ে,
সরকারি হাসপাতালে শিফট করা হয়েছিল,
তারপর বার্নিংঘাটে
ওয়ালেট থেকে
ওই ক’টা মাত্র টাকা বার করার সময়
কি এমন পার্থক্য বলো?
তুমি অলীক বিশ্বাসে
অলীক স্বপ্নের জালে
আত্মমগ্ন জড়
আমি নিরাশ বিষন্নতায়
ধূ ধূ মরীচিকায়
আত্মকেন্দ্রিক অসাড়
কি এমন পার্থক্য বলো?
প্রহসন
১
===
প্রজাতন্ত্র প্রজাতন্ত্র
বলো তুমি কার?
যাদের পাছায় নরম গদি?
নাকি যারা ধুলোয় একাকার?
প্রজাতন্ত্র প্রজাতন্ত্র ডাকে মায়
প্রজাতন্ত্র লুটে কারা খায়?
গুলি লাঠিতে দাঁড় বায়
প্রজাতন্ত্র তুই ঘরে আয়
কৃষক গেল অধিকার চাইতে
শাসক ঘরের কূলে
প্রাণ নিয়ে গেল নিষ্ঠুর শাসক
ভরসা নিয়ে গেল তুলে
Mio amore
My words
Never come across my feelings
Mio amore
I am eternal silence
In my heart
Like an undiscovered cave
Mio amore
Your remembrance
Is melting candle of my life
Wait until dark
Mio amore
Then the world will speak about me
Mio amore
টিনের কৌটো
পাখিটা উড়ে গিয়ে পুকুরপাড়ের গাছটায় বসল। সন্ধ্যে হব হব। বকের সারি ধানক্ষেতের উপর দিয়ে উড়ে গেল। একটু একটু শীত শীত করছে। এদিকটা এত ফাঁকা ফাঁকা। শেয়াল ডাকতে শুরু করল। এ সব শুনব বলেই তো গ্রামে আসা। তবে এবারের অ্যাডভেঞ্চারটা অন্য। আমার পিসেমশায়ের বন্ধুর ছেলে তারকদার সঙ্গে এসেছি। তারকদা কলেজ অবধি পড়েছে। অ্যাকাউন্টেন্সি অনার্স ছিল। খুব মিশুকে। আহেরিটোলায় আমাদের বাড়িও গিয়ে থেকে
চুপ করে গেলাম
নিশ্চিন্ত একটা জীবন।
ঈশ্বর। গুরু। ধর্ম। অর্থ। আইনকানুন। বিনোদন।
কেউ দিতে পারল কই?
বরং আরো গোলমাল করে দিল সব,
আরো জটিল।
সব শেষে মন জিজ্ঞাসা করল
আসলে কি চাইছিলে?
কিসের জন্য এত দৌড়াদৌড়ি?
বললাম, নিশ্চিন্ত জীবন।
প্রশ্ন
বাল্মীকি বিভ্রান্ত হইয়া তুলসীদাসকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ভাই একটি প্রশ্ন আছে?
তুলসীদাস বলিলেন, বলো দাদা।
বাল্মীকি উদ্বিগ্ন স্বরে কহিলেন, ভাই তুমি কি তোমার রামচরিতমানসে প্রভু শ্রীরামের কোনো নাম নেতাজী বা সুভাষ রাখিয়াছিলে?
তুলসীদাস কহিলেন, না তো দাদা।
সেন্টি গল্প
তো কি হল কিছু বঙ্গসন্তানের ইচ্ছা হল জঙ্গল থেকে বাঘকে আনবে আমন্ত্রণ করবে। বেজায় বড় উৎসব করবে, লোককে একেবারে তাক লাগিয়ে দেবে।
Love and Logic
Love and Logic - two stuffs of human mind. They are neither competitor nor substitute for each other. They are the counter parts.
আমি যে দেখতে শিখিনি
দুয়ার তো আমারও ঘরের ভেঙেছে
ঝড়ের রাতে
রবীন্দ্রনাথ
আমারও ঘরের আলো নিভেছে
হয়েছে সব কালো
রবীন্দ্রনাথ
নাকি অ্যাডজাস্ট হচ্ছে না?
শুনলাম তোমাদের নাকি অ্যাডজাস্ট হচ্ছে না?
কেন বলো তো?
তোমাদের নাকি একে অন্যের উপর প্রচুর অভিযোগ!
হয় তো সে সব সত্যি
একগ্লাস জল
- আজ বহুদিন পর একগ্লাস জল খেলাম
- পুরো গ্লাস?!!
ভুল পরিণতি
প্রাইভেসি
আরাম পেয়েছ এতটুকু?
তুমি কষ্ট পেতে ভয় পাও বলে
কষ্টের মানে খুঁজে মরো দিনরাত
সত্যি করে বলো তো
এতো ব্যাখ্যা, এত পাণ্ডিত্যেও
আরাম পেয়েছ এতটুকু?
চক্রান্ত
মানুষের তো শুধু মহিমাই নেই, মানুষের তো সঙ্কীর্ণতা, অসহায়তাও রয়েছে। সে সঙ্কীর্ণতাকে আমি যে নামেই ডাকি না কেন – স্বার্থপরতা, আত্মকেন্দ্রিকতা, ক্ষুদ্রবুদ্ধি – ইত্যাদি যাই বলি না কেন, আছে তো। এত যে চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, খুনোখুনি, অত্যাচার, ধর্ষণ – এ সবই মানুষেরই কাজ। এ তো মহত্ব নয়। যে মানুষটা ঠাণ্ডা মাথায় কারোর ক্ষত
পায়ের ছাপ
মাষ্টার বাসে উঠে গেল। ছেলেটা রাস্তায় ধুলো উড়িয়ে চলে যাওয়া বাসটার দিকে তাকিয়ে প্রথম যে কথাটা ভাবল, স্যারের সঙ্গে আর দেখা হবে না।
দেখা সত্যিই আর হল না। উনি অন্য স্কুলে হেডমাস্টার হয়ে চলে গেলেন।
অনেকদিন পরে ছেলেটা আবার গ্রামে ফিরল। একা। তার পরিবার মুম্বাইতে থাকে। তার গ্রামের এমন কিছু পরিবর্তন হয়নি। শুধু রাস্তাগুলো কালো পিচে ঢাকা সাপের মত শুয়ে। ধুলো ওড়ে না আর আগের মত।
ও খিদে পেলেই খাবে
ও খেতে ইচ্ছা হলে আপনিই খাবে...
শুশ্রূষা
শুশ্রূষা শিশুর হাসি
শুশ্রূষা তারায় তারায়
শুশ্রূষা তোমার গানে
শুশ্রূষা নোঙর তোলায়
শুশ্রূষা সবুজ ঘাসে
শুশ্রূষা গাছের ছায়ায়
শুশ্রূষা চোখের জলে
শুশ্রূষা বর্ষা ধারায়
শুশ্রূষা বিরাগী মনে
শুশ্রূষা পথের ধুলায়
শুশ্রুষা আমায় ভুলে
আমাকেই খুঁজে ফেরায়
একদেশী ভাব এখানকার নয়
গারদ
আগে মনে হত
আলোচনা চলছে
যে পাহাড়ের চূড়ায় উঠতেই চাইল না, তাকে পাহাড়ের শ্বেতশুভ্র চূড়া সুখ দেয়।
যে সেখানে নিজের পদচিহ্ন রাখতে চেয়েছিল, অথচ পারল না, তাকে সে যন্ত্রণা দেয়।
শুধু এই
ঘটনাটা শুধু এই
দেখা হয়নি কয়েকদিন
ঘটনাটা শুধু এই
শুধু এই
হ্যাঁ ঘটনাটা শুধু এই-ই
দেখা হয়নি কয়েকদিন
আর কিছু না
ঘটনাটা শুধু এই
দেখা হয়নি কয়েকদিন
শুধু এই
শুধু এই
শুধুই এই
privileged confinement
দস্তয়েভস্কি বলছেন, সর্বোপরি নিজেকে মিথ্যা বোলো না।
গুজব গল্প
বাঘের ইচ্ছা হল পিঠে খাবে। কিন্তু কি করে খাবে, সে তো পিঠে বানাতেই জানে না। গ্রামে এক ভালো শেয়ালের পরিবার ছিল। বাঘ খবর পেল তারা সংক্রান্তির দিন পিঠে বানাবে। শেয়ালের পরিবারে সে আর তার বউ শিয়াল আর তার দুই বাচ্চা শেয়াল থাকত। সত্যি সত্যিই তারা সংক্রান্তির দিন পিঠে বানাত।
দুটি বাঁধন
আমরা তখন ইউটিউবে কার্টুন দেখছি। যে কার্টুনের অর্থ তাৎপর্য এমনি সময়ে বিন্দুমাত্র বুদ্ধিগোচর হয় না, সেই কার্টুনই কি অসম্ভব বাস্তব তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল ইনি কোলে বসতেই। খানিক বাদে ইনি বললেন, তোমার মোবাইলটা দাও। দিলাম। তাতে চলল --- "টুম্পা সোনা"। আর ইউটিউবে তার সঙ্গেই চলছে চুচু চ্যানেলের কার্টুন। উনি কোল থেকে নেমে দু'পাক নেচে আবার কোলে বসে পড়ছেন। আবার কার্টুনের ঘটনাপ্রবাহে
সময়
আমার বিবেকানন্দ
বিবেকানন্দকে প্রথম দেখি
প্রাইমারি স্কুলে পড়তে
সেই যে বস্তির লোকটা
কি একটা দুর্ঘটনায় মারা গেল
তার বুড়ি মা আমাদের বাড়িতে ভিক্ষা করতে এলো
ওর পিছনে পিছনে এসে দাঁড়ালো বিবেকানন্দ
কিছু বলছিল না
শুধু বড় বড় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল
শর্তাবলী প্রযোজ্য
পকাদা ঘুমের মধ্যেই নাকে একটা বোঁটকা গন্ধ পেল। লঞ্চটা অল্প অল্প দুলছে, ঘুমটা দারুণ হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ গন্ধ কোত্থেকে এলো? পকাদার চোখ খুলে মনে হল সামনের বেডে কেউ একটা শুয়ে। চশমাটা চোখে দিয়েই আঁতকে উঠল পকাদা, একটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার তার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। পকাদা'র দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, গুড মর্নিং।
সব আছে
ভালোবাসা সব সময় গোল
সে অতি বিষম বস্তু
স্নেহ অতি বিষম বস্তু। স্নেহবস্তু যত সুক্ষ্ম তাকে নিয়ে সমস্যাও তত গুরুতর। যেমন ধরুন LDL এর কথা, যেই না রক্ত পরীক্ষায় এল যে সেই সুক্ষ্ম স্নেহ আপনার রক্তে ঘোরাফেরা করে বেড়াচ্ছে তখন আর নিশ্চিন্তে থাকার জো রইল না। যখন তখন যেখানে সেখানে জমে এক বিদিকিচ্ছিরি কাণ্ড ঘটিয়ে বসাবে। চিকিৎসকের স্নেহদৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হবেন। ঘরে
জেগে থাকো
সমস্তটুকু আড়ালেই ছিল
আমিও ছিলাম
যেদিন সবটুকু বাইরে এল
আমিও নিজেকে নিয়ে বাইরে এলাম
বাইরে সেদিন কিসের যেন মেলা
বাইরে সেদিন কিসের যেন উৎসব
ক্রমশ হাত ছেড়ে গেল
রেশ কেটে গেল
সুখ ভ্রান্তিতে মিশে গেল
ঘুম যখন ভাঙল
ভাঙা মেলার ফিরে যাওয়া
উৎসব শেষের অবসন্নতা
চাতুরী
কোনো অনুকম্পায় না
বড় কাঙালপনায় আমার শালটা
তোমায় গায়ে জড়াতে দিয়েছিলাম
মহত্ব না,
এ চাতুরী
শুধু সুবাসটুকু চুরির আছিলায়
ভাগ্য বরাদ্দ সময় পেরিয়ে
আরেকটু কাছে চেয়েছিলাম
দুই সত্য
সংসারে দুটো সত্য আছে।
একটা সত্যকে যুক্তি চেনে। তার দৃষ্টি আর কতটুকু? গভীর অন্ধকারে স্ট্রিট লাইটের অহংকার যতটুকু।
আরেক সত্যকে চেনে হৃদয়
যখন মুমূর্ষু রুগীর চোখে রেখে সকরুণ আশ্বাস
চিকিৎসক বলেন, এই তো সেরে উঠলেন বলে
কোনো সংশয়ের নেই যে অবকাশ
ভাপা পিঠে
- পা থাকলেই কি লাথি মারা লাগে বোকা?
- না, লাগে না?
- বুদ্ধিমানের লাগে না, বোকাদের লাগে।
- আমি কি বোকা তবে?
- তুই বল...
- আর চা নেবে?
আদিপর্ব
সেদিন রাত
সেইদিন রাত, কি অন্ধকার
"যেন অন্ধকার ছাড়া রাত হয়!"
সেইদিন রাত কুয়াশা জড়ানো
তারা ভরানো
কি শীতল, কি যে শীত
"পৌষের রাতে সেদিন যেন প্রথম পড়ল শীত!"
সেইদিন রাতে স্ট্রিট লাইট জ্বলছিল
"যেন দিনের আলোয় স্ট্রিট লাইটগুলো জ্বলে থাকে"
সেইদিন রাতে হাস্পাতাল কি নিঃশব্দ নির্জন
অপরাধবোধ
মাথার মধ্যে কোনো বোধ না
এক অজানা অপরাধবোধ কাজ করে
কোথায় যেন কি একটা ভুল হচ্ছে
বারবার হচ্ছে
তবু কেউ থেমে যাচ্ছি না
শুধরে নিতে চাইছি না
অন্যমনস্কতায় কারা যেন এসে দাঁড়ায়
ছায়ার মত হাঁটতে থাকে পাশে
অদৃশ্য অভিমান
উষ্ণ শ্বাসের মত ছুঁয়ে বলে
"এলে না তো"
সামাজিক প্রথা
দুপুরের রোদ এসে ছাদে পড়েছে। সঙ্গে শীতের হাওয়া। ব্রাহ্মণ উচ্চারণ করছেন, মধুবাতা ঋতায়তে মধু ক্ষরন্তি সিন্ধবঃ... রবীন্দ্রনাথ অনুবাদ করে দিচ্ছেন…
পিব রে... পিব রে...
ভীষণ অস্থিরতার মধ্যে রাগটা শেষ করতে হল। রাগ ‘জয়জয়ন্তী’। রাগটা ফুটল না। কোমল গান্ধারে সুরটা ঠিক লাগল না। কোমল গান্ধারে হৃদয়টা যেন পাহাড়ের চূড়ায় এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে সব অনুভূতি গলে গলে নদী হয়। আজ হাতড়ে হাতড়ে সে চূড়া অবধি ওঠাই গেল না। কে যেন নীচের দিকে পা টেনে থাকল।