গুন্তেরের শীতকাল
বইয়ের নাম - গুন্তেরের শীতকাল। লেখক - খুয়ান মানুয়েল মার্কোস। অনুবাদক - Jaya Choudhury। প্রকাশক - এমব্যাসি অব প্যারাগুয়ে, বেস্টবুকস।
শুচি
অনবরত হাওয়ায় দুলতে দুলতে ফুলটা অবশেষে মাটিটা ছুঁয়েই ফেলল। তখন শেষ রাত্তির। শুকতারার গুনগুন শোনা যাচ্ছে কান পাতলেই।
লাল পাপড়িতে কাদা লেগে শূন্যে উঠে গেল - হুস!!!
ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি
প্রবল
প্রতিটা ধর্মের নিজস্ব মেনুকার্ড আছে। তাই রসনার ধার বোধের ধারের থেকে প্রবল।
প্রতিটা ধর্মের নিজস্ব কিছু বিধান আছে। তাই অনুকরণের মোহ চিন্তার পূণ্যের থেকে প্রবল।
উল্টো ভাঁজ
লুঙ্গিটা পরা, তবে গিঁট দেওয়া নেই
বেড় দেওয়া কোমরের কাছে
একহাতে ধরা,
মনে হয় এক্ষুণি বেসামাল হবে
হয় না। ধরাই থাকে
একটা হাত ধরে থাকতে থাকতে বেঁকে গেছে ধনুকের মত
শান্তি
শান্ত থাকা যায় কি করে? এ প্রশ্নটা বড় ঘোরেল। 'কিছু করা' আর 'শান্ত থাকা' কি এক বস্তু? অনেকে জপ-ধ্যান করে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন দেখেছি। আমিও করে দেখেছি। ওতে কি কাজের কাজ কিছু হয়? আমার মনে হয় না। এ অনেকটা সিনেমা দেখার মত। যতক্ষণ দেখছি, মনটা একাগ্র, স্থির। যেই হল থেকে বেরোলাম, যেই কে সেই। কিছুক্ষণের জন্য মনের বিরাম কি তবে শান্ত হওয়ার লক্ষণ?
কেউ না
বিস্তীর্ণ প্রান্তর
নিস্তব্ধ।
পাখিদের আওয়াজ অবশ্য আছে
পাখিরা বিরক্ত করে না
রোদে পোড়া ঘাসের গন্ধ আসছে
বিকালবেলা। সূর্যডোবার দেরি খানিক আরো।
টুপ!
বাড়ির পাশেই একটা পুকুর থাক
মিছিমিছিই না হয় হল
তেতেপুড়ে যখন তখন নামা যায়
এমন দূরত্বেই থাক
তার জল সবুজ। ঘন সবুজ।
ভুল করলাম কি?
ক্যান্সার খুব স্বাভাবিক ঘটনা। রাস্তায় চলতে গিয়ে কেউ গাড়ি চাপা পড়ে মারা গেছে, এও খুব শোনা ঘটনা। এরকম আরো অনেক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাই খুব স্বাভাবিক, গা-সওয়া ঘটনা। কতক্ষণ? যতক্ষণ না নিজের পরিচিতের গণ্ডীর মধ্যে ঘটে।
অপূর্ণ
কিসের টান?
যেন পাঁজরগুলো গুঁড়িয়ে যাবে এখনি
দূরের থেকে দেখলাম, তোমার ধ্যানমগ্ন মুখমণ্ডল
কি জ্যোতিতে উদ্ভাসিত, জানি না তো গো
সামনে গিয়ে দাঁড়াই সে সাহস নেই
যেদিক থেকে বাতাস বয়ে তোমার দিকে ছুটছে
কেন লিখছি
ক'দিন ধরে আমাদের রাজ্যে বেশ চাপান-উতোর চলছে। তার সাথে চলছে ফেসবুকীয় বিষোদগার। কি লাভ হচ্ছে সে প্রশ্নে যাব না? যেটা বলার ইচ্ছা সেটা হল, এ সবের গভীরতা কতদূর? মানে হাঁটু অবধিও তো ডোবে না দেখছি। রাজনৈতিক যে কোনো দল কিছু মানুষের দ্বারা গঠিত। যে মানুষেরা বেশিরভাগই এই বাংলার।
...
আলো ছায়া
প্রাণ-জল ব্যাখ্যা
ছাত্র বলল, সময় না হলে কিছু হয় না স্যার। সে আপনি যতই বলুন।
বললুম, বটে।
ছাত্র বলল, তা না তো কি? আচ্ছা আপনিই বলুন, নিউটন কি করে মাধ্যাকর্ষণ সূত্র আবিষ্কার করেছিল?
আপেল পড়ার গল্পটা আওড়ালাম।
তিন সন্ত
খানিক আগে একটা লাইভ ভিডিও শেয়ার করেছি। (নিম্নোক্ত বইটার উদ্বোধন করতে দলাই লামা ভারতে এসেছিলেন, তার) যারা এখন দেখেননি অনুগ্রহ করে পরে কোনোভাবে সুযোগ হলে দেখে নেবেন। দলাই লামা হাতজোড় করে অনুরোধ করছেন ভারতকে তার প্রাচীন জ্ঞানে ফেরার জন্য। এ কথা নতুন নয়। ভারতীয় নবজাগরণের সূত্
অনুকম্পা
আমার সারা গায়ে চন্দনের গন্ধ।
গলায় তুলসীমালা। ঈশ্বরের জন্য সেজেছি।
গোপালের জন্য পাত্রভরা মাখন - নৈবেদ্য।
চ্যালাকাঠ
আস্ত একটা চ্যালাকাঠ কিনে লোকটা বাড়ি ফিরছিল। সামনে জটলা দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। সামনে এগোতে পারছে না। প্রচণ্ড ভিড়। বেশির ভাগ মেয়ে মানুষ। আগে মেয়ে মানুষ ঠেলে ভিড়ে ঢুকতে বেশ লাগত। এখন লাগে না। বয়েস হয়েছে।
শূন্য আনন্দ ভালোবাসা
ভালোবাসার গায়ে একটা রঙীন চাদর জড়ানো থাকে। সেই চাদরটা হয় ঝড়ে উড়ে যায়, নয় পোকায় কাটে, কখনও বা আগুন লাগে।
অবৈধ
ছাদ মাটি ভালোবাসা
ছাদের উপর দাঁড়ালে
বাড়ির পর বাড়ি
কারোর আধখোলা জানলা, কারো হা-পাট্টা
কোথাও টুকরো চলাফেরা, কোথাও টিভির ভিতর নির্বাক নড়চড়া
শপথ নিয়েছি
নম্রতা বলতে মাথা নীচু বুঝিনি
বরং মাথা উঁচু করে "জানি না" বলাকেই বুঝেছি
আর কিছু না মিলুক,
হেমলককে নিরাশ না করার শপথ নিয়েছি
খোলস ত্যাগ
ঘোর
আমি তাকিয়েছিলাম
আমি তাকিয়েছিলাম
আমি তাকিয়েছিলাম
আর কিছু মনে পড়ছে না জানো
টেস্ট ড্রাইভ
রত্না মিষ্টির প্যাকেটটা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে নিয়ে হনহন করে হাঁটছে।
এই মিষ্টিগুলো না, ভুল মিষ্টি কিনে নিয়ে গেছে ছেলেটা, এতে টকটক গন্ধ লাগে তার। ফেরৎ দিতে হবে।
খাঁটি গল্প
অর্থ-নিরাপত্তা-রামকৃষ্ণ
মূল তত্ত্বটা কি তবে? এই যে এত ছোটাছুটি, এত ধর্ম, এত মত, এত দর্শন। কোথাও কি বাস্তবটা থেকে বিমুখ হওয়ার চেষ্টা। ব্যক্তিগত জীবনে যখন অত্যন্ত সংকটকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছি বারবার, মনে হচ্ছে, তবে কি প্রস্তুত ছিলাম না? নিজেকে ভুলিয়ে রাখার জন্য এত তোড়জোড় ছিল? সব বানানো গল্প? রূপকথা?
ধারাভাষ্য
তাকালে তো শুধু দৃশ্য
গেরুয়া বিলাসিতা
মহতী বিনষ্টি
আমি ফিনিক্সও নই, হোমাপাখিও নই
গরুড় কিম্বা কাকভূশণ্ডীও নই
চাতকের মত তৃষ্ণার্ত, তাকিয়ে আছি
তুমি শূন্য হলে, আমি শূন্য
তুমি পূর্ণ হলে, আমি পূর্ণ
তাই হয়
সাঁকোটা পেরোবার পর মনে হয় -
এমন কি আর দরকারি ছিল ওটা?
বাঁশে বানানো সামান্য একটা সাঁকোই তো
অমন সাঁকো ঢের দেখেছি, আরো কত দেখব!
তাই হয়
গোপাল
শরীরটা গ্রাম গ্রাম, তার মধ্যে কব্জা করতে চাইছে শহুরে আত্মা। কলকাতা থেকে বেশ কিছুটা দূরের একটা গ্রাম। এতটা দূরেরও নয় যে কলকাতা বিদেশ, আবার এতটা কাছেও নয় যে কলকাতার শ্বাস-প্রশ্বাসের আঁচ লাগে। আঁচটা না লাগলেও তাপটা লাগে।
বড়রাস্তা
সব গলিই ঘুরতে ঘুরতে বড় রাস্তায় মেশে।
তবু বড় রাস্তাটা এত শুনশান কেন?
গলি দিয়ে আসার সময় তো দেখে এলাম
হাজার লোকের চলাফেরা
সচেতনতা
জানো না
তুমি শূন্যতা দেখো, আমি দেখি আকাশ।
এত ভয় কেন তোমার? জানো না -
আকাশের নিলাম হয় না!
ঘুম নষ্ট
কোনো একদিন থেকে সে নিশ্চিন্তে ঘুমাবে।
শুধু এইটুকুই চাইত লোকটা,
বহু রাতের ঘুম নষ্ট করে।
এখন লোকটা মড়ার মত ঘুমায়।
শাড়ি কাকিমা
"মা বাড়ি আছেন?"
সাদার উপর নীল ফুল ফুল শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছেন শাড়ি কাকিমা। মাঝারি উচ্চতা। প্রায় সব চুলই সাদা। চোখে কার্বন ফ্রেমের চশমা, দুটো হাতে দুটো বড় বড় চটের ব্যাগ।
থাক না গোপনে
বেশ কিছুদিন ফেসবুকে অনুপস্থিত ছিলাম, তার একটা কারণ অবশ্যই ব্যক্তিগত পড়াশোনা তো নিশ্চই ছিল, কিন্তু তার সাথে আরেকটাও কারণ ছিল, ছিলই বা বলছি কেন?
দ্বিধা
ফেরার কথা ছিল দু'জনেরই
ফেরা হল না
অনায়াসেই ফেরা যেত যদিও
অসঙ্কোচে কাটানো সময়
ফিরতে চাইল না দ্বিধার হাত ধরে
কে কাছের
ফুলের শোভায় মুগ্ধ চোখ বৃন্তের সাদামাটা চেহারাকে উপেক্ষাই করে। ফুলই একমাত্র বোঝে, কে কাছের - বৃন্ত না মুগ্ধ চোখ।
সীমা
কে বলবে?
দরজায় তালা ছিল না। তবু ভাবলাম, ছিল হয়ত।
দিশাহারা হয়ে কড়া নেড়ে বেড়ালাম, এ দরজায়, সে দরজায়।
খুলল না।
DEPRESSION AND IT'S INSIGHT
Today in morning I was talking with a close friend who is suffering from a lot of troubles including economic, family and others.
তুমি বুদ্ধ হও
পথ পাচ্ছিল না মানুষটা। তার জাগতিক সুখ কিছু অপ্রাপ্ত হওয়ার কথা নয়। রাজার ছেলে সে। তবু কেমন গোলমাল হয়ে গেল সব কিছু। বার্ধক্য রোগ শোক মৃত্যু - এসবের কোনো একটা অর্থ তো থাকবে? সবই এমনি এমনি? মিছিমিছি। এতবড় সৃষ্টি শুধুই কিছু অন্তঃসারশূন্য অভিনয়ের জন্য? এ হতে পারে?
তুমি আছ বলে
তুমি আছ বলে আমি গাইলে বড়ে গুলাম
তুমি আছ বলে আমার তুলিতে ভ্যান গঘ
তুমি আছ বলে আমার শিসেতে হরিপ্রসাদ
তুমি আছ বলে কাঞ্চনজঙ্ঘা চিলেকোঠায়
তুমি আছ বলে লাইটপোস্টে কুতুবমিনার
তুমি আছ বলে রেশন দোকান তাজমহল
নীলিমায় নীল
গভীর জঙ্গল। সেই জঙ্গলের মধ্যে একটা নীলপদ্ম ফুটে। এই জঙ্গলে নীলপদ্ম বিশেষ একটা ফোটে না। সবাই ভাবল, এ কিরকম ফুল? কেউ দেখল সন্দেহে, কেউ দেখল ঈর্ষায়, কেউ দেখল তাচ্ছিল্যে। পদ্ম চুপ করে থাকে। কাকে বলবে সে? আর কি-ই বা বলবে?
বাংলা সিরিয়ালের কথা অমৃত সমান
বাংলা সিরিয়ালের কথা অমৃত সমান।
যেই শুনে তার হয় জীবন শ্মশান।।
সেট টপ উপরে ধরি নীচে জোড়া স্ক্রিন।
নাচিছে নাচাইছে সবে তাধিন তাধিন।।
নট-নটী অঙ্গসজ্জা কভু নাহি খুলে।
কথা কহে বসে নাহি, ঘরে বুলে বুলে।।
ডানা
আমি বহুবার চেষ্টা করলাম জানো
বহুবার।
আমার অন্তত একটা ডানা কেটে
তোমার তৈরি এত দামী খাঁচার সাথে
এক্কেবারে মানিয়ে গিয়ে -
ভাষা - শিক্ষা -শৈশব
শব্দগুলো যে সবসময় ভাব বা চিন্তা প্রকাশের সহায়ক হয় তা তো নয়, অনেক সময় যথেষ্ট প্রতিকূল অবস্থাও সৃষ্টি করতে পারে। বাধাও হয়ে দাঁড়ায়।
ফিলোলজী
কত হাজার বছরের পুরোনো কথাটা, তবু কতটা জরুরী...
দুই রূপেই
জেগে ছিলাম
নদীটাও জেগেছিল
সারারাত জেগে আমরা দুজনে
পাড় ভাঙার আওয়াজ শুনছিলাম
ভোরে উঠে দেখি
মুখ থুবড়ে পড়া নীড়ের পাশে
মাটিতে লুটিয়ে চোখ না ফোটা পাখি
আসবে বলো?
মন খারাপের অন্ধকারে
অন্ধ বাউল একতারাতে
কি বাজালো?
সিঁড়ি গিয়েছে তেপান্তরে
মেঘের মধ্যে বসত করে
চিনতে পারো?
বিশ্বাস
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণ। সকাল আটটা। উল্লেখযোগ্য ভিড় নেই। রামকৃষ্ণদেবের ঘরে ঢুকতে বাঁশ। ডাঁয়ে, বাঁয়ে, পিছনের দিকে বাঁশ আটকানো - প্রবেশ নিষেধ - এখানে জুতা রাখবেন না। ঘরে ঢুকতে গেলে মন্দিরের ভিতরের প্রাঙ্গণে ঢুকে তবে যাও। এখ
থুড়ি, শ্রমজীবী
বুদ্ধিজীবী তো সেও
যে জানে কোন জুতোতে কোন সেলাই হয় না
বুদ্ধিজীবী তো সেও
যে পোকা দেখলেই কোন ফসলের শত্রু ওটা চিনতে পারে