মানুষটাকে আমি অনেক ছোটো বয়েস থেকে চিনি। নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উদাস বসে থাকতেন, ভালো স্বাস্থ্য, যুবক একজন। চোখ জলে ভিজে যেত নাম-গানে। কথা বলতেন না কারোর সাথে। আমাদের থেকে বড় অনেক, আমার তো প্রশ্নই আসছে না কথা বলার।
...

তুমি আগুন নিয়ে বাঁচো
    আমি আগুন ছেড়েছি অনেক কাল
...

  ঝপ ঝপ করে হলের আলোগুলো নিভিয়ে দরজার কাছে এসেই স্বপনের খটকা লাগল। বি সিরিজের আট নম্বর সিটে কেউ বসেছিল মনে হল?
...

আবর্জনার স্তূপে পড়ে থাকা ভাঙা কাঁচে
  মহাকাশের নক্ষত্রের প্রতিফলন দেখেছি
...

যক্ষের মত আগলে রাখতে চাইছি
আয়ু, সুখ, ভালোবাসা
...

    বৈষ্ণব সাহিত্য মানুষকে সৌন্দর্যের বাঁধন থেকে মুক্তি দিল। জীবনে আনন্দের অভাব তখনই যখন সে আনন্দকে আমার বৈষয়িক সুখের নিমিত্তে খাঁচায় পুরে প্রতিদিন ছোলা খাওয়ানোর স্বপ্ন দেখি।
...

ভ্রান্তি
ভ্রান্তি ভ্রান্তি
ভ্রান্তি ভ্রান্তি ভ্রান্তি
...

ব্যাটারি ড্রেন হয়ে আসার শব্দ শুনতে পাও না
  জানো না কতক্ষণ নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক থাকে এদিকে
...

তুমি না মালী?

ফুলই তো নিয়ে গেছে
...

      এই গরমে ভালো মেজাজ রাখা দায়। ভোলা সক্কাল সক্কাল উঠে পড়াশোনার মত করে বই নিয়ে বসেছে সদ্য, অমনি জানলার বাইরে সজনে গাছটায় একটা দাঁড়কাক অভদ্রের মত চীৎকার করতে শুরু করল।
...

      ব্যক্তিত্ব – একটা অস্তিত্ব। মানবিক অস্তিত্ব। অর্জিত, আত্মগত সত্তা। কিন্তু ঝিনুক মানেই যেমন মুক্তো নয়, মানুষ মানেই তেমন মনুষ্যত্ব নয়। ব্যক্তি মানেই ব্যক্তিত্ব নয়।
...

অনশন কেন?
না খেয়ে রাস্তায় পড়ে আছ কেন?
...

জল ঘোলা করছ
করো
ক্লান্ত হবে এক সময়
...

    বয়েসের ছাপের থেকে একটা টানাপোড়েনের ছাপ বেশি সারা চোখেমুখে। প্রাইমারি স্কুলে পড়াতেন। উদ্বাস্তু কলোনি থেকে পড়াশোনা করেছিলেন।

তুমি যতই অগোছালো করে রাখো
যতই কাদার উপর কাদার স্তূপ তৈরি করে বলো,
        ওদিকে যেয়ো না ...

ততটা সৎ হয়ো না
    যতটা সৎ হত্যাকারী তার ছুরির সাথে
...

বন্ধ দরজা খুলতেই
সারা ঘর জুড়ে তুমি
    তোমার গায়ের গন্ধ

তুমি এসেছিলে
এ কথাটা শুধু
   আমার বুকেই বিঁধে ছিল না তবে

ভুলে গিয়েছিলাম, 
    তোমার গন্ধেই তো 
        আমায় ঘিরে বসন্ত

- এদিকটায় সরে এসে বসো

- কত নাম্বারে নাম?

আসলে ভয় আমারই

হাত বাড়ালে যদি 
     হাতটা না ধরো

আর হাত না বাড়ালে
       যদি অভিমান করো

এ দ্বিধায় আমি
       দ্বিখণ্ডিত 

তুমি ভাবলে
           নিষ্ঠুরতা

পোড়া গাছটা তবু বিদ্যুৎকে ভয় পেল না

বিদ্যুৎ ঝলসে উঠে সামনে এসে দাঁড়ালো
বলল, এখনও ভয় করে না আমায়!
...

ভালোবাসাকে বললাম, সাঁকো

ভালোবাসা দুলে উঠল


ভালোবাসাকে বললাম, আল

ভালোবাসা দুধার ছাপিয়ে ডুবে গেল
...

আগে মনে হত না কেউ তাকাচ্ছে। এখন মনে হয়। আমার বয়েস কত? মনে নেই। আমাদের বয়েস মনে রাখার কোনো প্রথা নেই। আমাদের পূর্বপুরুষেরা এসব নিয়ে মাথা ঘামাত না। আমিও ঘামাই না।

   এই যে আমার খাওয়া শেষ, আমি মাঠে বসে আছি, আমার গায়ে শীতের অল্প রোদ এসে পড়ছে, এ যে কি আরাম। তবে কি জানো আজকাল খেয়ে সে সুখ পাই না। সব ভেজাল, বিস্বাদ।
...

ছবিটা এতক্ষণে আমাদের অনেকেরই হয় তো স্ক্রোল করা হয়ে গেছে। হ্যাঁ, ছবিটা আনন্দবাজার পত্রিকার। তিনজন চিকিৎসকের মৃত্যুর।

   আমি ছবিটা দেখার খানিক পরই আবার এক গার্জেনের ফোন এল, "স্যার আপনি এবার অফলাইন শুরু করে দিতে পারেন। অনেকেই শুরু করে দিয়েছেন, এইভাবে পড়াশোনা হয় বলুন..?"
...

তুমি এলেই রাণী আবার অভিমান ভুলে রাজার পাশে রাজসিংহাসনে বসে।
তুমি এলেই গ্রামে থাকা দরিদ্র ব্রাহ্মণ আর ব্রাহ্মণীর ঝোলা ভর্তি ভিক্ষা মেলে।
তুমি এলেই সব রাক্ষসীর প্রাণভোমরারা ঘুমিয়ে পড়ে।
তুমি এলেই সব রাজপুত্ররা যুদ্ধ জিতে অর্ধেক রাজত্ব আর রাজকন্যা নিয়ে বাড়ি ফেরে।
...

আরেকবার যদি ঘুরে দাঁড়াই

আরেকবার যদি বলি,

  আবার প্রথম থেকে শুরু করি

আরেকবার যদি মাটি ছুঁয়ে
...

মানুষ নৌকায় চড়ে, পারে হবে বলে, এ বিশ্বাস। সে জানে যে পারে নাও পৌঁছানো হতে পারে, মাঝনদীতে কত নৌকা ডুবে গেল, সেকি জানে না? জানে তো, সে বাস্তব। তবু সে নৌকায় ওঠে।


অতুলপ্রসাদ সেন লিখছেন,

কী আর চাহিব বলো, হে মোর প্রিয়,

তুমি যে শিব তাহা বুঝিতে দিয়ো।
...

শব্দরা ধূসর হয় কখন বলো তো?

মাথা না তুলে হেঁটে চলে যায় শব্দের মিছিল -

    কখন?
...

'তাসের ঘর' হইচই'তে আসছে যখন শুনলাম, প্রথমে মনে হল তারাশঙ্করের? ইচ্ছা হল নতুন কোনো গল্প হলে হয় না, এই সময়ের, এক্কেবারে এই সময়ের? ফেসবুকে পোস্টগুলো দেখেও মনে হচ্ছিল, হয় তো তারাশঙ্করের শৈল এ নয়। এ হয় তো অন্য গল্প।
...

তখন সন্ধ্যে। সূর্যের ঘরে ফেরার তাড়া। সেই তাড়াহুড়োয় পায়ের ধাক্কা লেগে সিঁদুরের কৌটো গেল উল্টে। সমস্ত সিঁদুর এসে পড়ল গঙ্গার বুকে। এ ঘটনা নিছকই আকস্মিক না ষড়যন্ত্র? অসীম সময়ের লীলাখেলা, আমি ক্ষুদ্র আয়ু জীব, বুঝি কি করে?
...

মানুষ ঘেন্না করতে ভালোবাসে। যেমন ভালোবাসতে ভালোবাসে, তেমন বিদ্বেষ করতেও ভালোবাসে। এটা স্বাভাবিক। পছন্দের কথা না হলেও স্বাভাবিক।
   মসজিদের জনসমাগম এই পরিস্থিতিতে দুর্ভাগ্যজনক। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার
...

তোতলা ছিল। তাই কথা কম বলত। ভাবত। দেখত। হাসত। কাঁদত।

বোবা না, তোতলা ছিল। ...

তুমি যত হিংসা করো
তুমি তত অমানুষ হও ...

তোমার না আসার অনেক কারণ আছে ...

যেবার রাজস্থানে গিয়েছিলাম
মরুভূমির মধ্যে দাঁড়িয়ে
এক কণা বালি হাতে করে বলেছিলাম
  আমার সঙ্গে কলকাতায় চলো
...

"শুবি না? এই শালা, এদিকে আয়, এই... আরে এই... কাঁথাটা ফেললি কেন?"
     একটা ঘর। কাঠের পাতলা পাটাতনের দেওয়াল। শীতের হাওয়া, বর্ষার জল, কিছুই বাধা মানে না। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রেললাইন। ট্রেনের কাঁপুনিতে দেওয়ালে ঝোলানো আয়নায় সারাঘরের দুলুনি দেখা যায়।
     শীতের সন্ধ্যে। দুটো কাঁথার তলায় শুয়ে তিন চারটে রাস্তার কুকুর। প্রমাণ সাইজের কুকুর। ষাটোর্ধ মানুষটা একটা লুঙ্গি কোমরের কাছে জড়িয়ে, হাঁটু অবধি তুলে, মেঝেতে মদের বোতল নিয়ে বসে। ঘরে টিমটিম করছে হলুদ ডুমের আলো।