প্রতিশ্রুতি
কিছুক্ষণ আগে যেন আমি তোমারই কথা ভাবছিলাম
পরিচিত বিকালগুলো শুকনো বারান্দা বেয়ে গুটি গুটি করে
খালি পায়ে হেঁটে গেছে খানিক আগে
আমার অন্যমনস্কতায় উঁকি দিয়ে, ভিজে হাতের ছাপ রেখে।
সারা দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদের তাপে পোড়া বুনো ঝোপের গন্ধ
পড়ন্ত রোদের আলোয়, গরম বাতাসে স্মৃতির ঝাঁপিতে রাখছে হাত।
সামনের পাতাহীন শুকনো বাঁশগাছটার মাথায় দোয়েলটা আজও বসেছে
আদিম ব্যথা
তুমি চলে যাওয়ার পর
সন্ধ্যাতারা উঠল
তখনও অন্ধকার হয়ে আসেনি গাঢ় হয়ে
গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে সদ্য জমছে অন্ধকার
ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক বাড়ছে ধীরে ধীরে
হালকা বাতাস সারা ছাদ আমার সাথে সাথে ফিরছে
একফালি চাঁদ যুগান্তরের বিরহ নিয়ে একা।
থাক
মাঝে মাঝে সব গুলিয়ে যাওয়া ভাল। আবার করে গোছাতে গিয়ে, কিছু জিনিসকে আবার নতুন করে চেনা যায়। যাকে মনের নীচের তাকে রেখেছিলাম তুচ্ছ করে, তাকেই হঠাৎ করে ড্রয়ারে তালা দিয়ে সুরক্ষিত রাখতে ইচ্ছা করে। মনে হয়, এতো মূল্যবান জিনিসটা চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল কি করে!
ধর্ম ও ধর্মান্ধতা
(আজ ধর্মান্ধতার বর্বরতা যখন আবার তার কালো ফণা তোলার উপক্রম করছে, তখন একটু ভয় ভয় করছে বৈকি। তবে কি আমরা...)
ধর্মের দুটো দিক আছে। এক অধ্যাত্মিকতা, দুই সমাজের রজ্জু হিসাবে।
বাজার
বাজারে তো আর জামার অভাব নেই। কত কায়দা, কত রঙ, কত বাহার! তা বলে কি সব জামা আমার মাপের হয়, না সব জামায় আমায় মানায়!?
এটা বুঝে গেলে, বাজার আর আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় না। বাজারের প্রয়োজন নিজের প্রয়োজন ফুরালেই ফুরায়।
এটা না বুঝলে বাজার আর কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। আত্মার দেহ ছাড়ার সময় হয়ে যায়, কিন্তু দেহের আর বাজার ছাড়ার সময় হয় না। মন সাবধান!
কিচ্ছু হয় নি ক্ষতি
যখন সে গেলো
এমন ধুলো উড়লো,
ভাবলাম
বুঝি বা সব হারালাম
ধূলো ওড়ার পর
থিতিয়ে শান্ত হল
দেখি কিচ্ছু হয় নি ক্ষতি!
খানিক ধুলো নাকে চোখে গেল।
অন্তর্লীন
প্রকাশ
আবরণ
ভারী বাতাস। জলে ভারী। কালো মেঘের বুকে জমে থাকা বিদ্যুতের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে অবাক হয়! এত আলো! এত তেজ! তবু সে মেঘের বুকে মিলিয়ে থাকে কি করে? কেন সে থাকে?
সে বৃষ্টি হয়ে নীচে পড়ে। কত রঙের ফুল পৃথিবীর বুকে ফুটে। তার অবাক লাগে। এত রঙ! এত রূপ! তবু এই একরঙা সবুজ গাছগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে কি করে? কেন তারা থাকে?
সৃষ্টি
ভক্ত-
এত স্বাধীনতা কেন দিলে তুমি?
স্বেচ্ছাচারী পাতকী হলাম, স্বামী!
প্রভু-
নিজের ছায়ায় গড়েছি তোমায়
সার্থক আমি প্রেমেতে তোমার
বাঁধনেতে বাঁধা নই কোনোদিন আমি।