তাই তো বরাবর ছিল
        যা এখন আছে
আমিই চেয়েছিলাম অন্যরকম হোক
...

সবই কি ভালো লেগেছিলো ?
লাগে নি তো
তবু তো পসরা সাজিয়ে বসেছি রোজ 

উঠে যেতে ইচ্ছা তো করেছিল লক্ষবার
উঠিনি তো। পালাবো কার থেকে?
ভাগ্য আর মন
    পালালেও কি শান্তিতে থাকবে?
...

ভারতীয় রেলের, প্লেনের লোগো আছে। দেশ বিদেশের সব বিখ্যাত, কম খ্যাত, অখ্যাত কোম্পানীর লোগো আছে। আগে কুইজে লোগো দেখিয়ে প্রশ্ন করত - বলো তো খোকা এটা কিসের লোগো? 
        সব খেলাগুলোরও আছে। নামী নামী ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস ইত্যাদি খেলার রোজকার ফলাফল যখন কাগজে বেরোয় তখন বাঁদিকে উপরে ছোট্ট করে একটা লোগো আঁকা থাকে। দেখেই বোঝা যায় কোন টুর্নামেন্টের কথা লিখছে। 
...

ভবাকান্ত দুপুরে ভাত আর অল্প একটু ডাল তরকারি খেলেন। বাইরের বারান্দাটায় এখন রোদ। খেয়ে উঠে বসবেন। খাওয়ার থেকে রোদে বসার তাড়া বেশি। 
        গায়ে একটা শাল। শালটার বয়েস পঁচিশ। তার বয়েস একাশি। চেয়ারে বসলেন। মুখটা রোদের বাইরে রেখে চোখ বুজে শুলেন। মাইকের গান আসছে "চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে জো দিলকো"। সামনের ক্লাবে চলছে। উপরে পতাকা, নীচে নেতাজি। চারদিকে চারটে দড়ি। তাতে ছোটো ছোটো পতাকা। যাননি এবার দেখতে, তবু জানেন। নেতাজির জিলিপি খেতেও মন চায়নি। অম্বল হয়। কম দামী তেলে ভাজা। 
...

সবই তো আছে। নেতা আছে, নীতি আছে, ধর্ম আছে, ধর্মস্থান আছে, গুরু আছে, শিষ্য আছে। তবু কি যেন নেই। কার যেন একটা অভাব। কত পাণ্ডিত্য আছে। কত গবেষণা আছে। কত বড় বড় প্রতিষ্ঠান, কত চিন্তাবিদ আছেনই তো। তবু কি যেন নেই, কি যেন নেই। 
        সুভাষচন্দ্রের ভাষণ দিতে গিয়ে কণ্ঠ অবরুদ্ধ হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেছে। মোহনদাস গান্ধী নুন বানাতে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন তাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ সাড়া দিয়েছে – ইতিহাস সাক্ষী। সুভাষ বা গান্ধী কেউই তাদের মতাদর্শ অনুসরণ করলে চাকরি দেবেন এমন কথা দেননি। তবু মানুষ গেছে। মেরেছে। মরেছে।

বাংলা ভাষার গান কি শুধু শিক্ষিত মধ্যবিত্তের? আরেকটু নিচুতে নামলে বাংলা গানের সাথে কি নিজেকে 'রিলেট' করতে পারেন না বাঙালী? নাকি ওই রিদম, ওই ভাষার ঝোঁক বাংলা গানে হয় না। অবশ্য একটু বদলিয়ে মধ্যবিত্ত বাঙালী কথাটাও সরিয়ে দেওয়া যায়। বলা যায় এক ধরনের বাঙালী, মনে যাকে সংস্কৃতি মনস্ক, বা আঁতেল ইত্যাদি বলা যায় তারা ছাড়া সব্বাই হিন্দিগানের আবেগের সাথেই দেখি সহজ। 
...

ভাগ্যিস তুমি তুমিই, নইলে আমার পাশের বাড়ি আমার এত পাশের হত না। ওই যে প্রদীপটা জ্বলছে তুলসীমঞ্চের নীচে ওর উষ্ণতায় আমার বুক পুড়ত না। ওই যে চারজন মহিলা, অল্প টাকার খুব দামী শাড়ি পরে টোটো থেকে নেমে অপরাধীর মত মুখ করে বলল, বাড়িটা একটু দেখব (যেন আমি এই বাড়ির রক্ষক), ওদের আঁচলের গন্ধে আমার গরম ভাত আর আলুসিদ্ধ মাখা আটপৌরে গন্ধ পেতুম না। এত মানুষের মধ্যে হয়ত পরবাসী হয়ে জীবনটা কাটত। জীবনটা ধুলোমাখা হয়ে চোখে মুখে লেগে থাকত কি? জানি না।
...

সেদিন বেসিনে মুখ ধুচ্ছি। হঠাৎ খেয়াল করলাম বেসিনের সাদা রঙের উপর আরেকটা উজ্জ্বল সাদা আলো। বুঝলাম বেসিনের উপর যে ছোট্ট জানলা সেই দিয়ে চাঁদের আলো এসে পড়েছে। এ যেন হঠাৎ করে বাড়তি একটা পাওয়া। মন চমৎকৃত হল। খুব দূরের অধরা কিছু আজ যে তার নাগালের মধ্যে, সে যে কি পুলকিত হল, তা বলার নয়।

সব যন্ত্রপাতিগুলো ব্যাগে ভরে মিস্ত্রীটা বাড়ি ফিরে গেল খানিক আগে
      সন্ধ্যা হল। এবার বিশ্রাম নেবে ও। আজ আর কাজ না।

    সন্ধানী চোখদুটো আমার 
            অভিধানে বিশ্রামহীন এখনও