সৌরভ ভট্টাচার্য
8 February 2018
আই আই টি-য়ান সন্ন্যাসী দামী অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে গেম খেলছেন। সামনে ভক্তদের সারি। তিনি লাইন সামলানোর দায়িত্বে।
একজন ভক্ত জিজ্ঞাসা করতে গেলেন কিছু। তিনি মাথা না তুলেই উত্তর দিলেন, "পরে কথা হবে। এখন ব্যস্ত"।
প্রথম ভক্ত - উনি কি করছেন?
দ্বিতীয় ভক্ত - উনি গেম খেলছেন।
তৃতীয় ভক্ত - এটা তো উচিৎ নয়।
দ্বিতীয় ভক্ত - কেন উচিৎ নয়? এটাও এক রকমের ধ্যান সেটা বোঝেন? এত কোলাহলের মধ্যে মনকে নিবিষ্ট রাখা ওইতে, আপনি ওকে যা খুশী বলতে পারেন, সে গেমই হোক, আর যাই হোক।
সুন্দরী অল্প বয়েসী মহিলা দাঁড়ালেন সন্ন্যাসীর সামনে। কিছু জিজ্ঞাস্য আছে।
তরুণ সন্ন্যাসী মুখ তুলে চাইলেন। "আজি রজনীতে হয়েছে সময়, এসেছি বাসবদত্তা"।
প্রথম ভক্ত - কি সংযম না? এতটুকু বিকার নেই চোখেমুখে! দেখলেন?
দ্বিতীয় ভক্ত - সত্যিই ( জয় ঠাকুর! বলে কপালে দুহাত ঠেকালেন)
তৃতীয় ভক্ত - আর আমরা কি করে জীবনটা কাটালাম! কামিনী কাঞ্চনে জীবন গেল। কি ইচ্ছা ছিল বড় ছেলেটা অন্তত সন্ন্যাসী হবে, সে বাইরে চলে গেল ( বিষাদ দৃষ্টিতে রমনীকূলের লাইনে তাকালেন)।
গাড়ি এসে দাঁড়ালো। গাড়ি থেকে সাদা পাঞ্জাবি পায়জামা পরিহিত ধনী ভক্ত। পিছনে স্ত্রী। হাতে চাদর ঢাকা উপঢৌকনাদি। স্ত্রী - পুরুষ দুই লাইনের মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে এগোলেন। সবাই জায়গা ছেড়ে দিল সসম্ভ্রমে।
সন্ন্যাসী উঠে দাঁড়িয়ে হাতজোড় করলেন। মুখে মধুর হাসি। ভক্তকূলের প্রাণ বিগলিত হল। "আসুন"।
সামনে সন্ন্যাসী চলেছেন। পিছনে উপঢৌকন হাতে ধনী দম্পতি।
প্রথম ভক্ত - আপনি কি আরতি দেখেই বেরোবেন?
দ্বিতীয় ভক্ত - না, বাসে যা ভিড়, দাঁড়াতে পারি না, এখনই বেরোব।
তৃতীয় ভক্ত - গরমও যা হোক কিছু পড়েছে।
পাখিরা নীড়ে ফিরছে। গঙ্গা কুলুকুলু রবে বইছে। শাঁখের আওয়াজ হল খানিক পরে। প্রস্তরমূর্তিদের সামনে প্রস্তরীভূত মাথারা আবেগে টইটুম্বুর।
সংসার মিথ্যা। নারী মায়া। শরীর ভেলা। সামনে ঈশ্বর, বাঁশি বেজেছে... অন ইয়োর মার্ক... রেডি স্টেডি... 3... 2...1.... গো......