Skip to main content

অভিসার

        অবশেষে বর্ষা এলো। আজ থেকে যাও। আমায় একবার আজ ছাদে নিয়ে যাও। সিঁড়ির ঘরের দরজার সামনে আমার হুইলচেয়ারটা রেখো। হাত বাড়িয়ে সিঁড়ির ঘরের কার্ণিশ চোঁয়ানো জল এসে পড়ুক আমার হাতের তালুতে। হাতের তালুর ভাঁজে ভাঁজে বৃষ্টির জলের নদী।

        আমি জানি আকাশটায় আজ কাল পরশু মেঘ থাকবে। আমি জানি সারা সপ্তাহ মেঘ থাকবে। আমি জানি সারা মাস মেঘ থাকবে, যতদিন না কাশ এসে বলে, এবার তোমার ছুটি। মিনতি বৌদি আবার চীৎকার শুরু করবে কাল থেকে, “কাচা জামাকাপড়গুলো কোথায় মেলব? আমার মাথায়?... কি গন্ধ হয়েছে... একটাও শুকালো না... কবে যে সুয্‌যের মুখ দেখব?”... সেই মিনতি বৌদিই দুপুরবেলা “শাঙনগগনে ঘোর ঘনঘটা” গাইবে... ছায়া ঘনাইছে বনে বনে... গাইতে গাইতে কাঁদবে... তুমি রাতে কান পাতলে শুনবে আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার..... আসলে সব মানুষই তো অভিসারে যেতে চায়... ক'জন যেতে পারে বলো?... আমার সন্দেহ হয় রাধাও কি পেরেছিল... একটা মেয়ে এত ভালোবাসা সারাজীবন কোনো পুরুষের পায়?... রাধা পেয়েছিল?... ওই মেঘ সেই পুরুষ... রাধা কি তবে ওই সবুজ মাঠ?... এই কি অভিসার!
...

ছোটোবেলায় মনে হত প্লেনটার সাথে বুঝি তারাগুলোর ধাক্কা লাগবে এক্ষুণি


ছোটোবেলায় মনে হত প্লেনটার সাথে বুঝি তারাগুলোর ধাক্কা লাগবে এক্ষুণি। তারাগুলো ভেঙে পড়বে ঝুরঝুর করে। প্লেনটা মুখ ঘুরিয়ে চলে যাবে অন্যদিকে।
বাস্তবে তা হয় না তো! সব প্লেন ওড়া শেষ হয়ে যায়, তারাগুলোও অক্ষতই থেকে যায়।

ছায়া


বারবার একটা ছায়া মুখের ওপর এসে পড়ছে 
বারবার সরিয়ে দিতে চাইছি
  হাতের তালুতে পাঁচ আঙুলে চেপে ধরে 
               ছুঁড়ে দিতে চাইছি আস্তাকুঁড়ে 
বারবার ছায়াটা ফিরে ফিরে এসে মুখের ওপর পড়ছে
ছায়ার সাথে কথা বলি না

অ-সামাজিক


       (সেই সব তথাকথিত প্রান্তিক মানুষদের জন্য, যাদের কথা শুনলে মনে হয়েছে কত সমান্তরাল জগতের পাশাপাশি হেঁটে চলেছি)

তর্পণ

বাঁ হাতটা পড়ে গেছে, স্মৃতি বলতে অফিসের ঘরটা, শেষ সই করা পেপারের শেষ লাইন ক’টা। জানলার ধারে একটা আরাম কেদারায় বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ফুলের কুঁড়ি ধরা, পতঙ্গদের খেলা, রঙবেরঙের ফুলের সমাহার, ফুলের ঝরে পড়া, শুকনো পাতার স্তূপাকারে জমে থাকা, গেট দিয়ে নানা মানুষের যাতায়াত যারা সবাই অপরিচিত এখন, কুকুর বেড়াল পাখিদের মত সচল জীব - সব চোখের মণির উপর ধারাবাহিক অর্থহীন প্রতিবিম্ব এখন।
...

শিবনারায়ণ রায়

শিবনারায়ণ রায়কে বাঙালি বোধকরি সে ভাবে নেয়নি। অন্তত আমার পাঠ অভিজ্ঞতা তো তাই বলে। আমি ওনার নাম প্রায় বহু বছর জানতাম না। এ লজ্জা আমার ব্যক্তিগত না সমষ্টিগত বলতে পারি না। সে প্রসঙ্গ থাক। অকারণ স্বঘোষিত জ্ঞানীগুণীদের চটিয়ে লাভ নেই। মজার কথা হচ্ছে, মানুষটাকে পড়া মানে নিজের মুখোমুখি বাবু হয়ে বসা। মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমতা সে চিন্তা করতে পারে।
...

মজলিশ


আজও মজলিশে একটা তাকিয়াও খালি যায়নি
আজও হাসির ফোয়ারা উঠেছিল নিঃসঙ্গ দেওয়ালের
   আত্মমগ্নতাকে ক্ষুব্ধ করে

ভিক্ষুণী


প্রচণ্ড দাবদাহ
তাপ প্রবাহ চলছে আবহাওয়া দপ্তরের পরিভাষা অনুযায়ী
দুপুর দুটো। জনশূন্য রাস্তা। 
ঘরের কাছে কান পাতলে টিভির আর পাখার আওয়াজ

'ন্যূনতম' থিওরি

        শুনেছি, একজন লোকের নীচের রক্তচাপ (ডায়াস্টোলিক) কত সেটাই নাকি আসল কথা। সেটা বেশি হলেই নাকি দুশ্চিন্তা বেশি। অর্থাৎ হৃদিযন্ত্রখানা না চাপলে কত চাপ, সেই হল গিয়ে আমার চাপ। 

Subscribe to