পর্যবেক্ষণ
অনেকদিন আগের ঘটনা। স্কুলে পড়ি। দূরদর্শনে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠে রবীন্দ্রসংগীত হচ্ছে। মনোযোগ দিয়ে শুনছি। গান শেষ হল, আমার পাশে বসা একজন কাকু বললেন, বল তো উনি যে শাড়িটা পরেছিলেন তার দাম কত হবে? আর ওনার পায়ের কাছে যে কার্পেটটা রাখা ছিল তার দাম কত আন্দাজ কর তো?
narcissism
একটা প্রশ্ন পাচ্ছে।
ফেসবুক কি কোথাও narcissism এর গোড়ায় জল দিচ্ছে?
অর্থহীন
একটা সুর বেজে চলেছে দূরে কোথাও। কান পেতে শুনলে মনে হচ্ছে, দূরে কই, এই তো কাছে আমারই বুকের মধ্যে বেজে চলেছে সে। সুরটা যেন প্রথম কানে এলো, কিন্তু অচেনা নয়। নিজের ভিতর নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে শুনছি, বেজেই চলেছে, বেজেই চলেছে সে সুর। এখনই যেন বর্ষা নামবে, ভিজে চুপচুপ হবে আমার সমস্ত আমি। ভিজতে ভিজতে আমি শুনব, ভাবব - কে বাজালো এই সুর?
তোমার জন্য
কেউ জানে না
চৌমাথা পেরিয়ে ভাবলে, এবার বুঝি একটা হিল্লে হল। যে রাস্তাটায় চলেছো সেটা যাবে সিধা। হয় না। তোমার সোজা রাস্তাটা পাঁচমাথার মোড়ে এনে দাঁড় করায় তোমায়।
তুমি মনে মনে বলো, বিশ্বাসঘাতক।
অভিমান হয় তোমার।
আবার একটা সোজা রাস্তা। তুমি হয়ত আবার নিশ্চিন্ত। সামনে এসে দাঁড়ালো দশমাথার মোড়।
তুমি দীর্ঘশ্বাস ফেললে।
অভিমান কুঁড়ি হয়ে ফুল হতে হতে ঝরে গেল।
রক্তবাহ
রাস্তাটা ক্রমশ ছোটো হতে শুরু করেছে। সামনের দিকে কিছুই দেখা যাচ্ছে না প্রায়। তবু হাতড়াতে হাতড়াতে মানুষটা এগোচ্ছে। আচমকাই রাস্তাটার মাঝখান থেকে দুটো টুকরো হয়ে গিয়ে লোকটা তলিয়ে গেল।
আলোকবর্ষ
হাত পেতেছিলাম
কিছুটা সময় চাইব বলে
পেলাম না
শুধু আঙুলগুলো পিছিয়ে গেলো
কয়েক আলোকবর্ষ
আস্তিক অসম্পূর্ণতা
ভূত বলে কিছু আছে নাকি? আছে তো, খুব আছে। আমি নিজের চোখেই কতবার দেখেছি। প্রত্যেকটা অসময়ের মৃত্যুর একটা অসম্পূর্ণ গল্প রেখে যায়। যায় না? সেই অসম্পূর্ণ গল্পটাই তো ভূত। তাকে দেখা যায়, ছোঁয়া যায়, কোলে তুলে গল্প করা যায়। হয় না?
জুতো
কলিংবেল বাজল। রাত এগারোটা। ছেলেটা দরজা খুলে বাইরে কাউকে দেখতে পেলো না। এদিক ওদিক তাকিয়ে দরজাটা বন্ধ করতে গিয়ে খেয়াল করল, সামনের সিঁড়িতে দু'পাটি জুতো রাখা। ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে কিছু মনে করার চেষ্টা করল। পারল না। দরজাটা বন্ধ করে টিভির সামনে এসে বসল। টিভিটা চলছিলই।
ওপার
মেয়েটা বলত, তাকে যে বিয়ে করবে সে কত টাকা যেন মাইনে না পেলে বিয়েই করবে না, বেশ বড় অঙ্কের টাকা থাকবে, চারচাকা থাকবে, বড় বাড়ি থাকবে ইত্যাদি। খবরের কাগজে, ম্যাগাজিনে ক্রিকেটার, অভিনেতাদের ছবি বেরোলে কেটে কেটে বইয়ের ফাঁকে রাখত। তারাই তার জন্য আদর্শ হবু বর।