উপপত্র

হাত ছিল ভিজে
দেওয়ালে ছিল কাঁচা রঙ।

ভিজে হাতে লাগল রঙ
কাঁচা রঙে লাগল হাতের ছাপ।

ভিজে হাতে উঠল রঙের দাগ
পাকা রঙে এখনো হাতের ছাপ।

মেয়েটা এখনো সে ভিজে হাতের খোঁজে।

আমায় ধাক্কা দিতে দিতে
            ধাক্কা দিতে দিতে
              খাদের ধারে নিয়ে আসলে।

আমি ঝাঁপ দিলাম না।

বললে, অকৃতজ্ঞ।

কিছু মুখ জানলার কাঁচের ওদিকে এখন
এদিকেই ছিল ওরা
এই তো কিছুক্ষণ আগেও

আর জল হাওয়া লাগবে না
আওয়াজ, আর্তনাদ, ডাক কানে যাবে না

আচমকাই হল,
কিছু বোঝার আগেই

কিছু স্বপ্ন ঝরে গেছে
কিছু স্বপ্ন মাড়িয়ে গেছে
কিছু স্বপ্ন একটা প্রজাপতি পেলো না সারাজীবন
শুকিয়ে গেছে

তবু বেঁচে আছি, কারণ-
আজও কিছু স্বপ্ন কুঁড়ি হয়ে আছে

একবার উঠে কড়াটা নেড়েই দেখো না
হয়তো দরজাটা খুলবে
না হয় খুললোই না।
তবু জানবে, কড়া তো নেড়েছিলাম
নাকি বসে বসে ভেবেই যাবে-
'আহা রে, যদি দরজাটা খুলত!'

তুমি পারতে আরো আরো বেশি যন্ত্রণা দিতে, জানি
যদি পারতাম তোমায় আরো আরো ভালোবাসতে, মানি

তবু এতটুকুই থাক

বাকিটুকু রাখি বাকি
সব পলাশ কি এক বসন্তেই হবে লাল
কিছু পলাশ দিক না, এই বসন্তে ফাঁকি!

আয়নার কাঁচে ধুলো পড়েছিল
পরিস্কার করতে গিয়ে
কাঁচে পড়ল আঁচড়

এখন মুখ দেখতে গেলে আঁচড়ের দাগটাও দেখি
দেখতেই হয়
বুকের ভিতর প্রতিবারই চিনচিন করে ওঠে
বুঝতে পারি না কেন
ধূলোর জন্য না আঁচড়ের জন্য

জীবনটা খাদের ধারে আসলেও থামতে বলি না
দে ঝাঁপ! দিক ঝাঁপ!

নদী খাদের ধারে এসে থমকায় না
বলে না, ওরে বাবা, যদি মরি!
দেয় ঝাঁপ
সে ঝরণা হয়ে ঝরে
নতুন খাতে, নতুন স্রোতে ছোটে

(শুভ নববর্ষ। প্রবীণদের প্রণাম জানাই। নবীনদের শুভেচ্ছা জানাই। বয়স্যদের দিই আলিঙ্গন। সবাই ভাল থাকুন, শান্তিতে থাকুন, আনন্দে থাকুন এই প্রার্থনা।)

যদি ভালবাসতে
         পুড়তে পারতাম
যদি গালাগাল করতে
         রাগতে পারতাম

তুমি তো দেখেও দেখলে না
না ঝাড়া ঝুলের মত ঝুলে রইলাম

আমার শরীরে-বুকে স্মৃতির নদী
শাখা-প্রশাখায় প্রাণের শিকড় ছুঁয়ে গেছে
কোন শাখাতে কখন লাগে ঢেউ
সে খবর কি তার নিজের কাছেই আছে?

আমি যদি এ বলি,
এসব কথা ভুলেই আমি ছিলাম
সে বলে হেসে
ভোলো নি তুমি, সে কথা জানিয়ে গেলাম।