উপমা
এখনো জীবন বিজ্ঞান বইগুলোতে লেখা থাকে, মাছের দেহ কেমন? না, মাকুর মত।
বোঝো, এ যুগের কটা ছেলেমেয়ে মাকু দেখেছে, যে চিনবে। তখন বাধ্য হয়ে বলতে হয়, মাকু ওই মাছের দেহের মতই আর কি।
নাও, কে কার উপমা হয়!
বিশ্বাস
বিশ্বাস করেছি, ঠকেছি। ফের বিশ্বাস করেছি, আবার ঠকেছি। কারণ -কখনো আমার নির্বুদ্ধিতা অথবা কখনো অন্যের সুনিপুণ অভিনয় ক্ষমতা।
সন্দেহ করে কি হবে? কাকে, কখন, কোন ক্ষেত্রে, কতটা সন্দেহ করতে হবে - এ কি খুব সহজ হিসাব? আর সব হিসাব মিললও বা যদি, তাও যে ঠকব না তার কি নিশ্চয়তা আছে?
অনেকবার শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে।
কাঁদা
অসহ্য ব্যাথা গায়ে হাতে পায়ে। লোকটা হাঁটতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল কাদায়। সারা গায়ে কাদা। শুধু কাদা? না পাঁক। কি বিশ্রী দুর্গন্ধ। অবশ্য দুর্গন্ধ তো বিশ্রী হবেই। লোকটা উঠতে গিয়েও উঠতে পারছে না। আরো কাদার মধ্যে দেবে যাচ্ছে। কাদার মধ্যে শামুকের ভাঙা খোলে ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে গা হাত পা।
বুদ্ধি
বুদ্ধির সীমাবদ্ধতাকে জানাই হল বুদ্ধিমত্তা। তাই ভালোবাসার প্রথম ধাপ। কারণ তা অহংশূন্য। একমাত্র ভালোবাসাই জানা-অজানাকে পাশাপাশি রেখে চলতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। অহংকার তা পারে না বলেই, শুধু 'জানা'র দিকে ঝুঁকে চলতে চায়। আর কিছু দূর গিয়ে পড়ে মুখ থুবড়ে।
বিছে
ঘর মোছার ন্যাতার নীচে একটা বিছে থাকে। বাড়ির বৌটা জানে আর কাজের মেয়েটা জানে। কেউ কাউকে বলেনি কোনোদিন। তবু দু'জনেই জানে যে তারা জানে। সাবধানে হাত দেয়। ঘাঁটায় না। কারণ ন্যাতাটা ছাড়া ঘরের কাজ হবে না। ঘরের কাজ না হলে, ঘরে থাকার অধিকারও থাকবে না।
ভয়
ভয় আতঙ্ক উদ্বেগ দুশ্চিন্তা....এদের পার্থক্য বোঝা খুব কঠিন। এদের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট হল, এরা খুব একটা যুক্তির ধার ধারে না। মনের মধ্যে অসম্ভব কল্পনাকে সম্ভব করে ভাবাতে এদের জুড়ি নেই। অকারণ, অযৌক্তিক এমন সব ভাবনার জাল বুনতে শুরু করে আর তাতে যে কখন আটকা পড়েছি - তা বোঝারও বিবেচনা শক্তি হারিয়ে যায়!
ঘরে-বাইরে
বাড়ির যেমন একটা বাইরের ঘর আর ভিতরের ঘর আছে, মনেরও সেরকম করে নিলে ভালো। কাকে বাইরের ঘরের থেকেই বিদায় করব আর কাকে ভিতরের ঘরে ডাকব - এ বিচারটা সহজ হয় তাহলে। না হলে ভুল লোককে ভিতরের ঘরে আনার মাশুল দিতে দিতে বেলা বয়ে যায়।
অনুশাসন
যে ভালোবাসায় শাসন নেই, শুধুই প্রশ্রয় আছে, সে ভালোবাসা খাঁটি না। সুদিনে তাতে লাগাম ছাড়া আমোদ চলতে পারে কিন্তু দুর্দিনে তাতে নির্ভর করা যায় না।
তাই প্রার্থনা করলেই যে মিলবে তা না। তাঁর প্রেম ভেজাল না। তাতে স্নেহের সাথে শাসনও আছে। প্রথমটি দু'হাত পেতে নেওয়ার আগে, দ্বিতীয়টির কাছে মাথা নীচু করতে শিখতে হয়। তখনই সে স্নেহ ধারণের অধিকার জন্মায়।
নির্ভরতা
আমি নীলাকাশ ভালোবাসি। সবুজ মাঠ ভালবাসি। দিগন্তে মনকে বিলীন করতে ভালবাসি।
এরকম আরো অনেক কিছু ভালোবাসি। কিন্তু নির্ভর করি কি এগুলোর ওপর? না। নির্ভর করি মাটির উপর, যে নীরবে আজন্ম আমার ভার বহন করে চলেছে। এমনকি তাতে কম্পন ধরলেও হুমড়ি খেয়ে পড়তে হয় তারই বুকের ওপর। আবার ঘরও বাঁধতে হয় তারই বুকে।
ফাঁকি
ফাঁকি দিয়েছি। পড়াশোনা, বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদির লম্বা লাইন। এ সবেতেই ফাঁকি দিয়েছি কম বেশি। সময়, দায়িত্ব, কর্তব্যতেও ফাঁকি আছে।
তাই আমায় কেউ ফাঁকি দিলে রাগ হয় না, হাসি পায়। মনে মনে বলি, এ কৌশল আমিও জানি।