Skip to main content

কাঁচা বাদাম

এক প্যাকেট বাদাম। চিবোচ্ছেন, ভাবছেন। ভাবছেন, চিবোচ্ছেন। ভাবনাটা বেশ পুডিং-এর মত জমে আসছে। বেশ একটা বুড়ির চুলের মত মিহি সুখ আপনাকে আচ্ছন্ন প্রায় করে ফেলেছে... এমন সময় অকস্মাৎ আপনার মুখে এসে পড়ল - পচা বাদাম! 

গেল না পাকা আম মাটিতে থেঁতলে পড়ার মত, আপনার সুখ!

জলের দাগ


জীবনটা খানিকটা জলের দাগ কেটে খেলার মত। তুমি মনের আনন্দে একটা জলের দাগ কাটলে, কল্কা আঁকলে। সেটা কিছুক্ষণ থেকে গেল। আরেকটা কিছু আঁকতে লাগলে, ইতিমধ্যে আগেরটা মিলাতে শুরু করল। তুমি বিদায় নিলে, জলের সব দাগও চিরকালের জন্য মিলিয়ে গেল।

ছাদ


বাড়ির উপর যে ছাদ, সেখানে আমার প্রতিদিনের ছুটি, প্রতিদিনের মুক্তি। সে শুধু তার উপর অসীম নীল আকাশ আছে বলে। যদি আকাশ না থাকত, সেটা তবে হত - দোতলা, তিনতলা, চারতলা...খুব জোর চিলেকোঠা..তাতে আরাম থাকত হয়তো, ছুটি থাকত না, মুক্তি থাকত না।

ভুল ভালোবাসা


একটা ভুল মানুষকে ভালোবাসার অনেক জ্বালা। সব চেয়ে বড় জ্বালা হল, ভুলটা ভাঙলেও ভালোবাসাটা ভাঙে না। কিন্তু সেই ভালোবাসাকে শ্রদ্ধা করার মত শক্তিও আর থাকে না। কি সংকট। না যায় ভোলা, না যায় মানা। এ যে নিজের ভালোবাসা নিয়ে নিজেই নাজেহাল। না পারা যায় ভাসাতে, না পারা যায় ঘরে নিয়ে গিয়ে কুলুঙ্গীতে তুলে রাখতে। 

শূন্যপাত্র

একটা লোক তৃষ্ণার্ত। গ্লাস হাতে কলের কাছে গেল। কল খুলল। হাতের গ্লাসটা কলের নীচে না ধরে, উপরে ধরল।
      হাসির কথা না? 
      হ্যাঁ, অনেককেই দেখেছি শূন্যপাত্র নিয়ে ফিরছে। সঠিক স্থানে পৌঁছাচ্ছেও হয় তো বা। কিন্তু নিজেকে নীচুতে না রেখে, রাখছে ওপরে। পরিণাম? সেই শূন্যপাত্র!

অবসর


সেদিন সকালে ঝুল বারান্দায় বসে আছি। মনটা পদের না। কেন পদের না, বুঝছি না, বোঝার চেষ্টাও করছি না। পাত্তা দিলে পেয়ে বসে। খুব আদুরে বেড়ালের মত মন এক্কেবারে পছন্দ না আমার। সে যা হোক সামনের বাড়ির বাঁধানো উঠানে কটা ঝরা পাতা এলোমেলো বাতাসে উড়ছে, দেখছি, বেশ লাগছে।

সোজা পথ


লোকটা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস দেওয়ালটায় ঘুঁষি মেরে চলেছে। সে জানে দরজা আছে, তবু দরজার ছিটকিনি খুলে বাইরে যাবে না। সোজা পথে, সহজে যেতে তার নাকি লজ্জা লাগে, অহংকারে লাগে।

অবশেষে লোকটা দেওয়াল ভেঙে, হাত গুঁড়ো করে বাইরে এলো। 
 
এসে এবার সে পড়ল বিপদে। পথ কই? পথ তো ছিল দরজার সামনে। 

ধুর - দর্শন

ধারাবাহিক আর বিজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতা। শোয়ার ঘর, বসার ঘর, মাথার ঘর ভর্তি। তাকিয়ায় ঠেসান দিয়ে, খাটে পা এলিয়ে, বসার ঘরে পা ঝুলিয়ে - শুয়ে-বসে বিভিন্ন কাল্পনিক, পরা-বাস্তব চরিত্ররা।

সত্যি খবরের মিথ্যা গল্প আর সাথে বিজ্ঞাপনের ধারাবাহিকতা। মাথায় ধোঁয়া, চায়ের কাপে ধোঁয়া, শৌচাগারে ধোঁয়া - উড়ে উড়ে চোখের জ্বালা ধরিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে। আবার আসছে নতুন ধোঁয়া।

কৌতুক


জোকস পড়ে যতই হাসি পাক না কেন, ছোটোবেলার বন্ধুদের সাথে- সেই অকারণে, অসময়ে, ভুলভাল জায়গায় (তা স্কুলের প্রার্থনার লাইনই হোক, কি খুব কড়া স্যারের ক্লাসই) হাসতে হাসতে, তার চেয়েও বেশি, হাসি চাপতে চাপতে চোখের জলে, নাকের জলে হওয়ার অনুভূতিটার খুব অভাব বোধ করি। 

আক্ষেপ

এত বড় জীবন, কটা আক্ষেপ থাকবে না, তাও কি হয়! 

ছোটবেলায় যখন লুডো খেলতাম, তখন খেলার শেষে আক্ষেপ হত না? - ইস্, ছয় পড়ল না কেন? হায় রে এই গুটিটা না খেলে ওই গুটিটা খেললেই ভাল হত...এরকম আরকি। তা সামান্য লুডো খেলতেই যদি এত ক্ষোভ, তো এত বড় জীবনটা কি করে কটা নির্ভেজাল ক্ষোভ ছাড়া হয়!

Subscribe to চিন্তন