Skip to main content

ভাগ্যিস

নিস্তারবাবু নাস্তিক মানুষ। কিন্তু মনে প্রাণে বাঙালি। শ্যামাসংগীত শুনলে, কীর্তন শুনলে চোখে জল আসে। মহালয়ায় বীরেন্দ্রবাবুর গলা শুনলে গায়ে কাঁটা দেয়। কিন্তু এদি

চেতনার আমেজ

যা আছে, তা-ই আছে। নতুন যা, সে যে দেখছে তার কাছেই নতুন। যেমন ধরো তুমি চোদ্দোবার পুরী এসেছো। তোমার কাছে এই সমুদ্র পুরোনো। আমেজটা হয় তো প্রতিবার নতুন। কিন্তু দে

সোনার পাথরবাটি

ঈশ্বর ঐশ্বর্য বিলাসী। ঈশ্বর যদি ভোট দিতেন অবশ্যই তিনি ক্যাপিটালিস্ট হতেন। কেন?

পাগলা সানাই

ছেলেদের তো কাঁদতে নেই। কি পৌরুষ দেখিয়ে, কি দাপট দেখিয়ে আয়োজন তো করলে। খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে মাতব্বরি অবধি সব জায়গায় হাজিরাও দিলে। দেবে না?

এত নিস্তরঙ্গ কেন?

এত চুপচাপ কেন? 

কাশবন, প্যাণ্ডেল, কেনাকাটি, শারদসাহিত্যের পুঞ্জীভূত রাশি
পুজোর রান্নাবান্না, সাজগোজ, 
বেড়াবার নতুন ঠিকানার খোঁজ 

এত নিস্তরঙ্গ কেন? 

সাধারণ মানুষ তুমি, আমি
নাই বা হলাম ডাকাবুকো নারীবাদী
কি অন্য কোনের দলের 
    প্রফেশনাল প্রতিবাদী!

এত বেখেয়াল কেন?

২৬শে সেপ্টেম্বর

বিদ্যাসাগর আজ দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে, বাংলার মাঠ, ঘাট, স্কুল, কলেজ

আসল তর্পণ

ধ্যানেশ ভটচায্যি মশায় তামার বাটিতে গঙ্গাজল দিয়ে, দু ফোঁটা জিওলিন দ

বোঝেই না কিছু

সে সদ্য স্কুলে যাচ্ছে। তার নাম অজন্তা সরকার। তার বাবার লটারির দোকান। লক্ষ লক্ষ টাকা পাওয়া যেতে পারে টিকিটের নাম্বার মিলে গেলে। তার বাবা ইচ্ছা করে কাটে না। অত

বৃন্ত ও কয়েকটা ঘটমান ঘটনা

যদি বৃন্তের সৌন্দর্য না বুঝি তবে পাপড়ির সৌন্দর্যকে বুঝি কি করে? ফুল মানে কি কেবল পাপড়ির রঙ, রূপ, সজ্জা? 

     ওই যে মালা গাঁথা হচ্ছে, বৃন্তের বুকের মধ্যে সূঁচ বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে, সুতো পরিয়ে। বৃন্ত নির্বিকার। বৃন্ত জানে মালা গাঁথতে হলে এ তাকে সহ্য করতেই হবে, পাপড়ি সহ্য করতে পারবে না, ছিঁড়ে যাবে সে! 

জন্মদিনে

ঘটনাটা বলব ভাবিনি কোনোদিন। কিন্তু বলাটা দরকার। নইলে নিজের কাছে অপরাধী থেকে যেতে হবে। আর বিপুল, মানে আমার ছোটোবেলার বন্ধু, ও নিজে থেকেই বলল, বলে দিতে। কারণ ঘটনাটার সঙ্গে ও নিজেই জড়িয়ে। 

সে আর আরশোলা 

লোকটা যেখানে যেত পকেটে করে আরশোলাটাকে নিয়ে যেত। আরশোলাটার বাঁদিকের দুটো ডানাই ভাঙা। ডান দিকের দুটো পা-ও ছিল না। ফলে না ভালো করে উড়তে পারত, না তো ভালো করে হাঁটতে পারত। সে লোকটার বুক পকেটে, প্যাণ্টের পকেটে করে ঘুরে বেড়াত। লোকটা আরশোলাটার নাম রেখেছিল গুমশুম। 

হাম্বা হাম্ বা!

তুমি সান্ত্বনা পেতে চাও? যে কোনো কিছুর সহজ ব্যাখ্যা পেতে চাও? জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজতে চাও? জীবনের অর্থ পেতে চাও?

কিছু স্মৃতি

কিছু সম্পর্ক স্মৃতি এখন

 

চুপ থেকো

 

নইলে ওলোট-পালোট হয়ে যাব

 

কিছু স্মৃতি

 

বড় অভিমানী, জখম

 

 

(ছবি Joydeep Ghosh)
 

মহিষাসুর

মন্দিরের ছাদে একটা শালিক বসেছিল। যেই না উড়ে গেল, গণেশ বলল, হুস্! চলে গেল।

তেঁতুলগোলা জল

মোড়েই বসতো সে। বসতো কোথায়? দাঁড়িয়ে থাকতো। সেই উনিশ বছর থেকে। বাপ মরে গেল টাইফয়েডে। সেই থেকে! এখন তার তিরিশ ছুঁইছুঁই।

যোগ্যতম কে?

সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে বোঝা যায় না অনেক কিছু। না, আমি উচ্চস্তরের পড়াশোনার কথা বলছি না। আমি সমাজের কথা বলছি। আমাদের কথা বলছি।

পড়োনি বুঝি!

অন্ধকারে আলো জ্বালতে সাহস লাগে। অন্ধকারে আলো জ্বালা তো শুধু নয়, আছে আলোকে বাঁচিয়ে রাখার দায়! 

তাই, আলোর মধ্যে আলো জ্বেলে আছি বসে। নিভে যায় যদি, কেউ জানবে না। নিন্দে হবে না। বিদ্রুপ নেই, রূঢ়কথাও কেউ বলবে না। 

কিন্তু অন্ধকারে নিভে যায় যদি আলো! কি গভীর হবে অন্ধকার আরো! কি ব্যঙ্গ, কি বিদ্রুপ, কি নিন্দা, কি তামাশা! থাক থাক, এত বড় দায় কে নেবে ভাই! 

নেই

তুমি চলে যাওয়ার পর সব 

দেওয়াল বলল
         আমি নেই

ছাদ বলল
   আমিও নেই 

খাট, বিছানা, পাখা, আলো, বইপত্তর সবাই বলল
   আমি নেই

এমনকি ঘরের মধ্যে
 যেটুকু ছিঁটেফোঁটা সুখ, আরাম, বিশ্রাম ছিল
    তারাও বলল
           আমরা নেই

অনৃত 

আমার জ্ঞান যদি আমার অনুভবের শরিক না হয়, আমি স্বৈরাচারী হই, তুমি জানো না? 

আমার জ্ঞান যদি আমার অনুভবের অংশীদার না হয়, আমি ধূর্ত, কপট হই, তুমি জানো না?

আমার জ্ঞান যদি আমার অনুভবের অনুগামী না হয়, আমি শব্দ ব্যবসায়ী হই, তুমি জানো না?

আমার জ্ঞান যদি আমার অনুভবের ভালোবাসা না হয়, আমি শূন্যের প্রতিশব্দ হই… তুমি জানতে পারবে না কোনোদিন
     আমি জানি!

যা পালা!

একবার হল কি, তখন খুব ছোটো আমি, তো বোন আর ভাইকে নিয়ে সপ্তমীর দিন সন্ধ্যেবেলা ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছি। বলা বাহুল্য তারা আরো ছোটো।

"আও"

দ্বিধাকূল

বাঙালি সব সময়েই দ্বিধাকূল জাত। সৌমিত্র, না উত্তম; সত্যজিৎ, না ঋত্বিক; রবিশঙ্কর, না নিখিল ইত্যাদি ইত্যাদি।

অর্ধেক বাঁধা প্যাণ্ডেল

চন্দনার মাথাটা গরম ছিলই। চারটে বাড়ি কাজ। সমস্যা হয় মুখার্জি বাড়ির বৌদিকে নিয়ে। জন্মের শুচিবাই। অতগুলো বিছানার চাদর কেউ একসঙ্গে ভেজায়? জানে না এই এক সপ্তা হল ডেঙ্গু থেকে উঠেছে চন্দনা! লোকের বাড়ি খেটে খায় বলে কি মানুষ না!

শূন্য মন্দির মোর

"এ ভরা বাদর, মাহ ভাদর, শূন্য মন্দির মোর", বিদ্যাপতি লিখলেন। সুর তিনি কি করেছিলেন জানা নেই। রবীন্দ্রনাথ যে সুরটা করলেন, সেটা জানি। 

     বিদ্যাপতির লেখায় বিরহের সুর। শেষে প্রশ্ন, কি করে হরি বিনা দিন রাত কাটাবি? “বিদ্যাপতি কহ কৈছে গোঙায়বি হরি বিনে দিন রাতিয়া”। 

সাগর সামাল দেওয়া লাঠি

এ কদিন যতবার রাস্তায় বেরোলাম চোখে পড়ল শুধু পুলিশ, পুলিশ আর পুলিশ। কলকাতায় যেমন চোখে পড়ল, তেমনই কালনা থেকে ফেরার সময় বিভিন্ন মণ্ডপের সামনে চোখে পড়ল পুলিশ আর পুলিশ।

ছাতা

ব্যাঙ বলল, এরই মধ্যে যাবি স্কুলে? আরাধ্যা বলল, যাবই তো... আমার যে পরীক্ষা। ব্যাঙ বলল, কি পরীক্ষা ভাই? আমি তো জানতাম এই বৃষ্টিতে আমরাই শুধু বেরোই। তবে তোর ছাতাটা যদি দিতিস।

নাছোড় কম্পাস

(মামুর জেনারেশন যে ভাষায় কথা বলে)

 

কলঙ্ক

গোঁসাই বলল, দেখো, যে দীঘিতেই নামো, শরীর ভিজবে। কিন্তু মন ভরবে না। যদি একবার নিজের দীঘির সন্ধান পাও, হারিও না। এ দীঘি, সে দীঘির জলে নেমে শরীর ভিজিয়ে বেড়িও না। মন থেকে যাবে শুষ্ক। রিক্ত। একা।

সব আছে 

হাসি মানে সুখ নয়
হাসি মানে
   নেই ভয়, নেই ভয়
গোলমাল, অনিষ্ট
      সুসময়ে অসময়
সব আছে, সব আছে 
 তবু, ভয় মানে অপচয় 

(ছবি Prosenjit Aich)

প্রতিদিন

প্রতিদিন আমার একটা করে ঘোর ভেঙে যাক
 
প্রতিদিন আমি নতুন করে বুঝি
আমার বোঝার বাইরে সংসারে যা আছে
     তা অসীম
 
প্রতিদিন আমি নিজের কাছে ফিরি
ধুলোকাদা মেখে
      নিজেকে বলি, এই তো বেশ
        একটা বুদবুদ হারিয়ে গেলে
          সাগরের কিছু আসে যায় না

প্রলাপ

অকালে রাণী গেলা
কি দরিদ্র জীবন জিয়ে

নেটিজেন কাঁদি উঠে
ফুকারি ফুকারি হিয়ে 

বলে সবে ওগো রাজা
জাতীয় শোক কর ঘোষণা

পথে ঘাটে পর্দা টাঙি
হউক "ক্রাউন" প্রচারণা 

কি নির্লজ্জ বিরাট বাবা
শোকতাপ নাহি মানে

গত রাণীর জাতীয় খেলা
এরই মধ্যে সেঞ্চুরি হানে?

ব্যাট উঁচায়ে আকাশ পানে
কি দম্ভ প্রকাশ করে!

এলোমেলো কিউব

আসতেই হত। আজ এক বছর কমপ্লিট হল ফ্ল্যাটটায় আসা। ঈশান ঘুমাচ্ছে। কনক এক কাপ কফি নিয়ে বালকনিতে এসে বসল। সকাল ছ'টা। 

     কেউ খারাপ ছিল না। সবাই ভালো। শ্যামনগরের বাড়িতে ঘরের অভাবও ছিল না। তবে বিরাটি কেন? 

প্রতিবিম্ব

আসামীর সাজা ঘোষণা হয়ে গেছে। এদিকে তাও সে কাঠগোড়ায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। বিচারক বললেন, তুমি কিছু বলবে?0

     আসামী হাসল। বলল, বলি?

     বিচারক বললেন, কি মুশকিল, বলবে বইকি.. বলো….

জীবন হাঁটুক

যে যেখানে থাকুক
ভালো থাকুক
খুব লড়াই দরকার নেই তো
দরকার নেই হুড়োহুড়ি করে উপরে ওঠার
সবাই যেখানে আছে
শান্তিতে থাকুক। সুস্থ থাকুক। 
একে অন্যের সঙ্গে থাকুক। 
আর কেউ না থাক
    অবশ্যই নিজের হাত নিজে ধরুক,
নিজের চোখ নিজে মুছুক।

অসুর

সমস্যাটা হল অসুরকে নিয়ে। দুর্গোৎসব এখন আন্তর্জাতিক উৎসব। ছেলেখেলা নয়। গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষী, মা দুর্গা --- এঁদের আন্তর্জাতিক করতে বেগ পেতে হবে না। একটা 'গুডউইল' বলে ব্যাপার আছে। কিন্তু অসুর? 

পৃথিবী তোমার ধর্ম কি?

সবাই যে ধর্তব্যের মধ্যে ধরবে তা তো নয়। না তো কি সবাইকে আমিও ধর্তব্যের মধ্যে ধরব।

    কোনো মানুষকে যখন জানি, তখন শুধুই তাকে জানি। যখন তাকে ভালোবাসি তখনই সে মানুষটা সত্য হয় আমার কাছে। আমার ধর্তব্যের মধ্যে আসে।

    নইলে এই যে পোলাও আর আলুরদম খাওয়াচ্ছে, কেউ তো বলছে না, ও ঠাকুমা তুমি উঠে যাও, তোমার তো অন্য ধর্ম। কেউ তো বলছে না!

চাতাল

নিভা তার কাঁচাপাকা চুলগুলো গামছায় মুছছিল। হাত থেমে গেল। পরেশের নাতিটা স্নান করে বাঁধানো পুকুরঘাটে ছোটো ছোটো পায়ের ছাপ ফেলে এক দৌড়ে উঠে চলে গেল। নিভ