Skip to main content

মা-ও তাই বলেন

ধ্যান থেকে উঠে, নিত্যকর্ম সেরে মন্দির বন্ধ করে সাইকেলটা নিয়ে যখন রাস্তায় নামে পরমানন্দ, মনটা বিষণ্ণ হয়ে যায়। সমাজ আর তার ধ্যানের জগতে কিছুতেই বনিবনা হয় না। সমাজে এত অসামঞ্জস্য, এত অবিচার, এত দুঃখ, এত পাপ, এত নিষ্ঠুরতা।

বিন্দু

চিঠি হাতে আসার আগেই বৃষ্টির জলে ভিজে গেল। সব লেখা মুছে গেছে। পোস্টকার্ডের হলুদ রঙটা পর্যন্ত বদলে গেছে। ঠিকানা লিখে পাঠিয়েছিল। যে ঠিকানায় চিঠি পাঠাবার কথা ছিল তার। সে ঠিকানাই গেল হারিয়ে।

এক মুঠো সুখ নিয়ে

পটলা হয় তো ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছিল। নইলে এমন কাণ্ড করবে কেন? পটলা কি করে এত বছর পর এরকম একটা সিদ্ধান্তে এলো, সে বিশ্লেষণ মনোবিদেরা করতে পারবেন, আমি না। আমি বলি পটলা কি করল।

গোটা আমি

না হয় তাই হল। না হয় কিছুই মনের মত হল না। না হয় সবাই এগিয়ে গেল।
না হয় আমিই রয়ে গেলাম একা। সম্পূর্ণ একা। ...

সেজে এলো আমের পল্লব

বামুনদের বাগানে কাকভোরে যখন নাপিতদের নধর ছাগলটা ঢুকলো, কেউ খেয়াল করেনি। প্রমাদ গুনেছিল লতাগাছটা, যে কয়েক মাস হল আমগাছটাকে জড়িয়ে সদ্য ডালপালা ছড়িয়ে সুখের মুখ দেখেছিল

মন্দিরের সামনে সেপাই

মন্দিরের সামনে সেপাইয়ের দল। পাগল জিজ্ঞাসা করল, তোমরা এখানে কেন গা? সেপাই বলল, মন্দিরের ক্ষতি করতে চায়। পাগল বলল, কারা গো? সেপাইয়ের দল বলল, সে আছে, আছে, আছে।

মা-ও তাই বলেন

ধ্যানে যখন বসে তখন সব কেমন সুন্দর, সবের মধ্যে কি সুন্দর শান্তি,

এক মুঠো সুখ নিয়ে

ভালোবাসার মানুষটাকে ভুলতে পটলা কি না করল। আরো ভালো করে বললে, ব্যর্থ,

বিন্দু

চিঠি হাতে আসার আগেই বৃষ্টির জলে ভিজে গেল। সব লেখা মুছে গেছে। পোস্টকার্ডের হলুদ রঙটা পর্যন্ত বদলে গেছে। ঠিকানা লিখে পাঠিয়েছিল। যে ঠিকানায় চিঠি পাঠাবার কথা ছিল তার। সে ঠিকানাই গেল হারিয়ে।

গোটা আমি

না হয় তাই হল। না হয় কিছুই মনের মত হল না। না হয় সবাই এগিয়ে গেল। না হয় আমিই রয়ে গেলাম একা। সম্পূর্ণ একা।
যখন আমি সম্পূর্ণ একা হয়ে যাই, নিঃশব্দে খোলা আকাশের নীচে এসে দাঁড়াই। কিম্বা দরজায় খিল দিয়ে চোখটা বন্ধ করে চুপ করে বসি।
...

সেজে এলো আমের পল্লব

বামুনদের বাগানে কাকভোরে যখন নাপিতদের নধর ছাগলটা ঢুকলো, কেউ খেয়াল করেনি। প্রমাদ গুনেছিল লতাগাছটা

মন্দিরের সামনে সেপাই

মন্দিরের সামনে সেপাইয়ের দল। পাগল জিজ্ঞাসা করল, তোমরা এখানে কেন গা?

চাঁদের টানে

চাঁদের টানে
সাগরের বুকে ওঠে ঢেউ
সাগর তাতেই খুশী
চাঁদের দখলদারি
    সে আর চাইল কবে!

কিন্তু বিবাগী হবে না

নিজেকে শোষিত হতে দেওয়া ছাড়াও
তার আরো অনেক কিছু পৃথিবীকে দেওয়ার ছিল
সেদিন তার শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস পড়েছিল
...

হালখাতা

বাবার লটারীর দোকানে বসে আছে তিন্নি। সে ক্লাস টু-তে পড়ে। বাবার দোকানে হালখাতা করতে কেউ আসে না। রাস্তায় প্রচুর ভিড়। সবাই কি সুন্দর সুন্দর সেজে রাস্তায় বেরিয়েছে। বাচ্চুকাকার সোনার দোকানে উপচে পড়ছে ভিড়। সরবত,

বাবা কি হিজবিজবিজ?

লালটু মিত্র ওরফে বুকাই, কালো হাফপ্যাণ্ট আর সবুজ টিশার্ট পরে ফ্ল্যাটের দরজায় দাঁড়িয়ে। গ্রাউণ্ডফ্লোরে ফ্ল্যাট। বাবা মা ঠাম্মিকে প্রণাম করতে ওল্ডেজ হোমে গেছে। সেও য

সত্য

আজীবন প্রশ্ন করে গেল লোকটা। সবাইকে। সময়কে, ধর্মকে, সমাজকে, প্রতিবেশীকে।

উত্তর পেল না।
কারণ মনের মত উত্তর সে খুঁজে পেল না। ...

ইউক্রেন

সংবাদ সংখ্যা জানায়। যন্ত্রণার বিবরণ জানায় না। ওটা অনুমান করে নিতে হয়। কারোর প্রত্যক্ষ বর্ণনা পড়লে বোঝা যায় মানুষকে আসলে ধর্ম খারাপ করেনি, মানুষ
আদতে খারাপই। বর্বরই। নইলে এত এত নীতির কথা রাতদিন শেখাতে হয় কেন, দিনের শেষে অবশেষে যা ব্যর্থ? স্বাভাবিকভাবে বিবেক কাজ করে না কেন?
একজন শিশুর যৌনাঙ্গে নিজেকে প্রবেশ করিয়ে যে উল্লাস, তার যন্ত্রণায় যে নিজের তৃপ্তি, সে শিক্ষক হোক, আত্মীয় হোক, রাশিয়ার সৈন্য হোক… সে আদতে
মানুষ তো? একজন যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাওয়া মানুষের শরীরকে পেষণ করে কি সুখ, কি আনন্দ? আমি সত্যিই বুঝি না বিশ্বাস করুন।
...

মূল্যবোধ

একজন নাইনের ছাত্রী। বাবা খুব টানাটানির মধ্যে সংসার চালান, তাও চান মেয়েটা পড়ুক। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছেন মেয়েকে। ক'দিন আগে ব্যাচে পড়তে এসেছে। মাস্কটা নাকের নীচে পরা। স্যার তাকে দু-একবার বললেন, মাস্কটা হয় নাকের উপরে তুলে নাও, নয় খুলে বোসো। ছাত্রী গা করল না। আরেকবার স্যার বলাতে, এক ব্যাচ ছেলেমেয়ের মধ্যে স্যারকে বলল, আপনি আমার মুখটা দেখতে চান... নিন দেখুন... সেটা বললেই পারেন..., এই বলে সে মাস্কটা খুলে ব্যাগে ঢোকালো।
...

বিষফল

গভীর জঙ্গল। ভাঙা মন্দির। ক্লান্ত মানুষ। আদতে প্রেমিক। আদতে সে পালাতে চায়। আদতে সে হারাতে চায়। আদতে সে.... ভাঙা মন্দিরে পড়ল ঘুমিয়ে। তখন রাত। আকাশে তারা। ধরিত্রীতে অন্ধকার। দূরে কাছে, ইতিউতি পশুপাখির ডাক। ভয়। ভোর হল। মন্ত্রোচ্চারণ শুনে ঘুম ভাঙল। একমুখ দাড়ি, কয়েকদিন না খাওয়া ক্লান্ত অবসন্ন শরীর। কোনো রকমে চোখ তুলে তাকাতেই হাতে এলো চারটে বাতাসা।

আমায় নাও

তপেন দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসে। নার্সদিদি এসে জিজ্ঞাসা করল, কেমন আছ তপেন?

কিছুই তো থাকে না

কিছুই তো থাকে না চিরটাকাল
তবু বন্ধ মুঠোর এত জেদ কেন?
...

সত্য আর বিজ্ঞান

বিজ্ঞান বলে কি কিছু আলাদা বিষয় আছে? সত্য আর বিজ্ঞান কি সমার্থক নয়? তেমনই কল্পনা আর ধর্মীয় গল্পগুলো কি একই নয়? কল্পনার সত্য আর পরীক্ষিত সত্যের মধ্যে বিরোধ কেন হবে? কল্পনা মানেই কি মিথ্যা? অবশ্যই নয়। কল্পনার সঙ্গে মানুষের ইচ্ছা, ভালোবাসা, কামনা বাসনার যোগ নেই?
...

সোশ্যাল মিডিয়া

সোশ্যাল মিডিয়া না থাকলে সত্যিই আমরা জানতাম না, আমরা এত এত বিদ্বেষ, অসহিষ্ণুতা এত সযত্নে লালন করি গোপনে, সব শিক্ষা সুবিচার এড়িয়ে। সব চাইতে বেশি বোঝা যায় নিউজলিঙ্কগুলোর নীচে চোখ বোলালে। একটা মৃত্যুর খবর, দুর্ঘটনার খবর, ধর্ষণের খবর কি অনায়াসে হাসির খোরাক হয়, টীকাটিপ্পনীর খোরাক হয়, রাজনীতির রঙ লাগানো হয়।
...

আইস্ক্রিম

বাচ্চাটা লজেন্স নিয়ে দোকান থেকে বেরোলো। পিঠে স্কুলের ব্যাগ। ঘেমেনেয়ে একশা অবস্থা। কিন্তু দাদুটা কই?

আমিই তো সব হই

নিভে আসা প্রদীপগুলো নিভিয়ে মন্দিরের দরজাটা টেনে, মা-কে প্রণাম করে পূজারি বলল,

আনন্দ

তবে আনন্দ কি? সুখ? শান্তি?
কোনোটাই নয়। আনন্দ একটা শক্তি। উদ্যম। যার বিপরীতের শব্দ বিষাদ। আনন্দলাভ করার উপায়?
...

অপূর্ব.. অপূর্ব..

এক গ্রামে সবাই একচোখে দেখত। আরেক চোখ ছিল কানা। সবারই।
সবাই জানে, কিন্তু কেউ কাউকে বলে না। কারণ? লজ্জা গো লজ্জা।
সে বহুযুগ আগের কথা। এক সাধু এই গ্রামের উত্তরে যে গুহা আছে না, ওখানে ধ্যান করত।...

তুমি ঠিক, আমিই ভুল

পাখি নদীর বুকে ভাসা কাঠে বসল। রাত যায়, দিন যায়। সে কত গল্প করতে করতে চলল। কিন্তু যতই নদী বলে, আর বারোদিন, আর ন'দিন, আর চারদিন... এই তো এসে
গেল সমুদ্র, ততই পাখির মন খারাপ হয়। নদী বুঝতে পারে না। একদিন যখন নদী বুঝল তার বুকে মিশছে নোনাজল, সে পাখিকে বলল, আর কিছুক্ষণ, এই এসে গেলাম আমরা সমুদ্রে!

দীর্ঘস্থায়ী অন্ধকার

কিছু কিছু অন্ধকার দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেন চেকমেট জানিয়ে নিষ্ঠুর হাসি হেসে দাঁড়িয়ে আছে সময়।
দর্শকের আসনে নিঃশব্দে বসে মহাকাল অযুত-নিযুত নক্ষত্ররাজি নিয়ে, অপলক তাকিয়ে।

OLD

এই যে বারবার সিসিটিভি হতে চাওয়া
এই যে বারবার পাপোশ কিম্বা চিরুনি হতে চাওয়া
এই যে বারবার জামাপ্যাণ্ট, এমনকি ইনার অবধি হতে চাওয়া
এই যে মনের মধ্যে ঢুকে ম্যাজিশিয়ানের মত
...

ঘুড়ি.. ঘুড়ি.. ঘুড়ি

অনেক রাত। নতুন বাড়িতে এমনিই আমার ঘুম আসে না। জানলার কাছে এসে দাঁড়ালাম। ঢিল ছোঁড়া
দূরত্বে পাশের বাড়ির জানলা। বাচ্চাটা এখনও ঘুমায়নি। দুদিন হল এ বাড়ি এসেছি। রোজই দেখি সন্ধ্যে
হলেই বাচ্চাটা ওর ঘরে জানলার উপর বসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে। তাকায়, কিন্তু কথা বলে না। ওই
বাড়িটা নাকি এক অধ্যাপকের। স্বামী স্ত্রী দুজনেই অধ্যাপনা করেন।

'তুমি' মানে

'তুমি' মানে অস্তিত্ব না, সম্পর্ক। কেমন করে হবে? হয় তো। মানুষের সব কিছুর সঙ্গে সম্পর্ক হয়। সাবান কেস, টুথব্রাশ, বালিশ, বিছানা, দেওয়ালের রঙ, ঘরের গন্ধ,
ছাদের কার্ণিশ, ল্যাপটপ, মোবাইল, চিরুনি, জুতো-চটি সবের সঙ্গে একটা আত্মবোধ থাকে। আমার বোধ থাকে। টবের গাছ, বাগানের গাছ, পোষা বেড়াল, কুকুর
এদের তো কথাই নেই। মানুষ সম্পর্ক ছাড়া বাঁচে না। পাড়া, জেলা, দেশ, ভাষা এসবের সঙ্গেও তো নিবিড়ভাবে আমার 'আমি' যুক্ত হয়। সেও সম্পর্ক।
...

আমি আর সে

কুকুরটাকে কি জোর লাথি মেরে গেল। কুকুরটা কেঁউ কেঁউ করে কয়েকবার চীৎকার করল, কাঁদল। চুপ
করে গেল একটু পর। ঘুমিয়ে পড়ল।

এ তো হৃদয়

এ তো হৃদয়
মাচা নয় বলো
যে তুমি প্রতিশোধ নেবে
শিকার করবে
একে তাকে ওকে
...