Skip to main content

চিঠি হাতে আসার আগেই বৃষ্টির জলে ভিজে গেল। সব লেখা মুছে গেছে। পোস্টকার্ডের হলুদ রঙটা পর্যন্ত বদলে গেছে। ঠিকানা লিখে পাঠিয়েছিল। যে ঠিকানায় চিঠি পাঠাবার কথা ছিল তার। সে ঠিকানাই গেল হারিয়ে।

দিন যায়। মাস যায়। সে জানে না কোন ঠিকানায় চিঠি পাঠাবে।

'মাস পর উত্তর এলো। অভিমানের চিঠি। সে এত অসহ্য অবহেলা সহ্য করবে না আর। সম্পর্ক শেষ করে দিতে চায়।

দিক। আগে আগে উতলা হত সে। প্রাণপণ চেষ্টা করেছিল তো তার ঠিকানা জোগাড় করার। পেলো না। একদিন হাল ছেড়ে দিল। সেদিন থেকে সে বাতাসের। পাল নামালো না। যেদিকে নিয়ে যেতে চায়, নিক, ভাগ্যের ঠিকানা বৃষ্টির জলে মোছে না।

এখন আর চিঠি আসে না। এখন আর সে চিঠির অপেক্ষাও করে না। আগে ঠিকানাহীন চিঠিগুলো গুছিয়ে রাখত যত্নে। এখন সে লেখাগুলো দেখলে মনে হয় হৃদয়েরও বয়েস হয়। কোনো তাপ জাগে না, না তো কৌতুহল। জীবন সাধারণ এখন। অতি সাধারণ। অথচ এই সাধারণ জীবনেই তার আগে ছিল কি ভীষণ আপত্তি। এখন নেই। এখন শান্ত দুপুরে একা একা ভাবে, ভাগ্যিস সে সাধারণ, নইলে অসাধারণত্বের দায় বইত কি করে? সাধারণ জীবনেই যদি এত হিসাবনিকাশ, অসাধারণ জীবনে না জানি কত? এখন তো তার হিসাবনিকাশের পালা শেষ, এখন শুধু দাগের পরে দাগ বুলিয়ে যাওয়া। অসাধারণ হলে? কোথায় থামত? আদৌ কি থামত সব?

তার বাড়িতে আর পিওন আসে না। সেও আর যায় না ডাকঘরে। যেটুকু আছে, এই কাছেই আছে। হাত পা ছড়িয়ে এইটুকুতেই সে সব। দূরের খবর আর তাকে টানে না। দূর, কাছে, অতীত, ভবিষ্য - এই এখনই, এই হাতের মধ্যেই।

গল্প এইটুকুই। মনে হতে পারে, মিছিমিছি গল্প। না হয় হল তাই। তবু কোনো এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে এ সত্যি। সে বিন্দু চোখের পলকের নীচে ঢাকা। তাকে দেখানোও যায় না, দেখাও যায় না। মাঝেমধ্যে খচখচ করে ওঠে খালি।