Skip to main content

যে এসেছিল

যে এসেছিল, সে শুধুই লজেন্সের জন্যে এসেছিল, খোসাটার জন্য না। খোসাটার বোঝার ভুল ছিল। লজেন্সটাকে বার করে ওকে যখন দুটো আঙুলের একটা টোকায় রাস্তায় ফেলে দিল - ও এমন হতভম্ব হয়ে তাকিয়েছিল সবার মুখে দিকে! যেন বিশ্বাসই করতে পারছে না। দেখলাম ডাস্টবিনে মুখ গুঁজে পড়ে আছে। অভিমানে পাথর।

শুধু

গাছ, শুধু শিকড়ের ভরসায় আকাশের দিকে তাকায়
   তুমি শুধু এটুকু বুঝলেই হবে
গাছ, শুধু শিকড়ের জোরেই ঝড়কে সামলায়
   তুমি শুধু এটুকু জানলেই হবে
গাছ, শুধু শিকড়ের রসেই সিঞ্চিত তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে
   ছেড়ে যেও না।
    শুধু এটুকু করলেই হবে।

 

INCLINATION

Let the Words immerse,into deeper heart ;
let the Thoughts untraced, losing route.
    Its a numerous fancy of mine ;
             to mark entirely ,
         A declining Sunshine.

এই তো জীবন

এই তো জীবন
   নিবিড় অন্ধকারে
এক টুকরো আলোকিত কোন

  এই তো জীবন


(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)

বুদবুদ

সাবানের ফেনায় তৈরি বাতাসে ভাসা বুদবুদ - সুখ,

পরিচয়

কিছু পরিচিত মানুষ ছিল
      নাগালের বাইরে তারা আজ

নাগালের মধ্যে যারা
     রক্তের পরিচয়ে অপরিচিত

তবু কোথায় যেন চির-পরিচিতের সাজ

 

প্রার্থনা শুধু এই

প্রার্থনা শুধু এই

  সজনে বিজনে
  আঁধারে আলোতে
  সম্পদে বিপদে
  নিন্দা খ্যাতিতে

সত্যভ্রষ্ট যেন না হই

বন্ধুতা

আমার সাথে ভাব করবি মেঘ?
আমি যুগযুগান্ত এখানেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে
সময়ের দাঁড়ি।
তোমায় দেখি খোলা আকাশটার বুকে কেমন রঙ পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে খেলো
জানো কতবার ভিজে গেছি তোমার ঢালা জলে
গর্বে বুক ফুলেছে। সবাইকে ডেকে বলেছি দেখ, ওই আকাশের জল আমারও সারা গায়ে!
পরেরদিনই সব জল শুষে নিয়েছে ওই আকাশের সূর্য, আমার যেন অধিকার নেই আকাশের জলে ভিজে থাকার!

মিথ্যার মত সত্যি কথা

ছেলেটা একলা হাঁটল অনেক দূর
মেঘের সাথে দেখা হল। সে বলল, যাবি?
ছেলেটা বলল, চল
মেঘের সাথে এক যুগান্ত হেঁটে এল
নদী বলল, যাবি?
ছেলেটা বলল, যাব
নদীর সাথে এক সমুদ্র বেড়িয়ে এল

এভাবে সে এক জঙ্গল হাঁটল গাছের সাথে
এক তেপান্তর হাঁটল দিগন্তের সাথে
এক স্বর্গ হাঁটল দেবতার সাথে
এক নরক হাঁটল অসুরের সাথে

শিক্ষার দোষ

 
গত দু'দিন ধরে ফেসবুকে দুটো পোস্ট অনেকবার চোখে পড়ল।

দিলীপকুমার ও সায়রা বানু

এ ছবিটা আজ থেকে বছর কুড়ি আগে এলে এতটা মনে দাগ কাটত কিনা জানি না। আমার কাছে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিসংখ্যান নেই। তবে সম্পর্কের মধ্যে অসহিষ্ণুতা আর আত্মকেন্দ্রিক নিষ্ঠুরতার মাত্রা যে বহুগুণ বেড়েছে তা স্পষ্টতই মনে হয়। ...

মমি

হাত বাড়ালে
          স্পর্শ দিও
                 শর্ত দিও না
অনেক হাত
       শর্ত নিয়ে
            থমকে আছে
মমির মত

সবার উপরে মানুষ সত্য

মানুষ মানুষের চাইতে অতিরিক্ত বেশি কিছু চায়। অতিমানবিক ক্ষমতা চায়, অতিমানবিক ঈশ্বর চায়, অতিমানবিক দর্শন চায়। কিন্তু সে সবই তার বিকারের চাওয়া। কথামৃতে একটা গল্প আছে, একজন বিকারের রুগী ঘরে শুয়ে শুয়ে বলছে, “ওরে আমি এক জালা জল খাব রে, ওরে আমি বিশমণ চালের ভাত খাব রে।“ বদ্যি বাইরে দাওয়ায় হুঁকো খেতে খেতে বলছেন, “ওরে খাবি খাবি, আগে জ্বরটা সারুক।“

অমিতাভ

যিনি এসে দাঁড়ালেন,
  তিনি গৌতম নন। তিনি বুদ্ধ।
সামনে তৃষ্ণার্ত মানুষের
      নিশিযাপন যুগান্তের অন্ধকারে।

বুদ্ধের কমললোচন স্নিগ্ধ করুণ জ্যোতিতে

স্বর্গের দেবতারাও হলেন উৎকর্ণ
       পাতালবাসী অসুরদের সাথে
কি বলবেন শাক্যমুনি?

যে হাতদুটো

যে হাতদুটো প্রবল উৎসাহে জানলার কপাট দিত
        দরজায় খিল দিত
এখন তার জানলা দরজার আগল খুলতেই মুক্তির স্বাদ
     সিঁথির সিঁদুরের দাগ কাঁপা
                  দ্বিধায়
সাতপাকের সুতোয় ঘিরছে ফাঁসের ঘের

ইচ্ছা

কথাগুলো ডুবুক
ভাবনাগুলো পথ হারিয়ে হোক নিরুদ্দেশ
আমার অনেক দিনের শখ
   আমি একটা আস্ত সূর্যাস্ত দেখি -
দেখতে দেখতে সারা আকাশে ফুটুক একটা একটা তারা
             সন্ধ্যাতারার হাত ধরে
আর ধীরে ধীরে মনের ভিতর ভরুক জুঁইয়ের সুবাস

সেজো না

সেজো না। আগেও বলেছি তো।
   এসো অনাড়ম্বরে
   তুমি আমার প্রতিদিনের,
           বিশেষ দিনের নও তো!

 

শম্ভু মিত্র

মন্দির থেকে ফিরে আসার পর মন্দিরের ধূপধুনোর গন্ধ কিছুটা গায়ের সাথে লেগে আসে। সময়ের মধ্যে দিয়ে অনেকটা পথ পাড়ি দিলেও তাই হয়। সময়ের কিছু অধঃক্ষেপ জমে মনে। সে কার গুণে বলতে পারি না, সময়ের - না মনের; নাকি দুজনেরই মিলিত কোনো রহস্যে।

ভিজে কাক

এলোমেলো ঝোড়ো হাওয়ায় কাঁপছে ভিজে কাক একটা সামনের আম গাছটায়।
বৃষ্টি মায়ার মত হাত বাড়িয়ে বলল, ভিজে আকাশটা ছুঁয়ে দেখো একবার....

ভিজে আকাশটা ছুঁয়ে কাকটার গায়েও হাত বুলিয়ে ফিরলাম।
  ওর শরীরে নিবিড় আত্মীয়তা
         এ কাক নয় তো!
  এ তো কাকের শরীরে আমার অসম্পূর্ণ কান্নারা!

বাগানে একটা গোলাপ ফুটে আছে

বাগানে একটা গোলাপ ফুটে আছে। সারাটা বাগানে এই একটাই গোলাপ। তবু ওকে একা লাগে না। ওর উপর যখন মাঝে মাঝেই একটা হলুদ প্রজাপতি এসে বসে, বেমানান লাগে না। কিম্বা কখনো কখনো যখন একটা সরু সবুজ ফড়িং এসে বসে, ভালোই লাগে তো দেখতে।

Oh silent eyes

Oh silent eyes
  Shall I take a dip within you?
    To lose my roaring ego
  Like a withered leaf on passing river!
     Let me touch bottom of the heart
       To speak from there
          Like you, where we all are one

অযত্ন

ভালোবাসতে নিয়ম লাগে নাকি?
               অনুমতি?
ফুলদানির ফুলের পরিচর্যা লাগে
          শৌখিন বাগানেরও লাগে

ঘন জঙ্গলের মধ্যে ফোটা ফুলের যত্ন লাগে নাকি?

সময়

জ্ঞান হওয়া ইস্তক দেখছি
   একটা সাদা চাদরে পা থেকে গলা অবধি ঢাকা আমার
   মাথার কাছে কিছু ছায়ামূর্তি ঘোরাফেরা করছে
   ফিসফিস করে বলছে -
 যা কাজ আছে তাড়াতাড়ি সেরে নাও
      বুঝে নাও সব কিছু
   ধর্ম বিজ্ঞান রাজনীতি ইতিহাস
      খানিক পরেই চাদরটায় ঢাকব মুখ

সৌজন্যতা

সব শাড়িগুলো মন খারাপে ভিজে
   একটা শাড়িও শুকাতে পারেনি সকাল থেকে।
ছাদে উঠেছে চোদ্দোবার, হারমোনিয়াম খুলেছে বন্ধ করেছে, সুর আসেনি গলায় কিম্বা আঙুলে।
 পুরোনো দিনের কথারা চুন সুরকির মত খসে খসে পড়েছে সারাটা দিন
      মেয়েটার মন ভাল নেই
   মেয়ে তো নয়, বউটার মন ভাল নেই।

"আচ্ছা, ও ভালো আছে?"

ভিজে মন খারাপ

সব শাড়িগুলো মন খারাপে ভিজে
   একটা শাড়িও শুকাতে পারেনি সকাল থেকে।
ছাদে উঠেছে চোদ্দোবার, হারমোনিয়াম খুলেছে বন্ধ করেছে, সুর আসেনি গলায় কিম্বা আঙুলে।
 পুরোনো দিনের কথারা চুন সুরকির মত খসে খসে পড়েছে সারাটা দিন
      মেয়েটার মন ভাল নেই
   মেয়ে তো নয়, বউটার মন ভাল নেই।

"আচ্ছা, ও ভালো আছে?"

শুধু তুমি

কিছু বোলো না
মুখের ওপর পড়ে থাকা চুলগুলো সরাও
তাকাও আমার দিকে
  হাতটা আলগা করো
      চুপ করে বোসো
         আমার আঙ্গুলে
 তোমার আঙ্গুল আলগোছে রেখে।
 সন্ধ্যার নিভৃত ঝর্ণার পাশে
      ঝিঁঝিঁ'র ডাক থাকুক গোপন উন্মুখ সুখে

দীর্ঘশ্বাসেরা তত দীর্ঘ নয়

দীর্ঘশ্বাসেরা তত দীর্ঘ নয়, যত দীর্ঘ তাদের ছায়ারা
কল্পনাদের চোখ ধাঁধিয়েছে উচ্চ আশার ধোঁয়ারা

হাত

যে হাতগুলো

মন্দিরের ভিত কাটল
দেওয়াল গাঁথল, ছাদ ঢালাই করল
বিগ্রহ বানালো, পূজার জোগাড় করল

নৈবেদ্য দিতে গিয়ে দেখি
সেই সব হাতই এক হয়ে
      আমার সে নিবেদন গ্রহণ করল

কিছু সময় থেমে থাকে

কিছু সময় থেমে থাকে
    থেমেই থাকে

কিছু কথা ফুরোয় না কিছুতেই
    বলার পরেও বলার তাগিদ
      নতুন কুঁড়ির মত জেগে ওঠে

কিছু মুহুর্ত মেলায় না কোনো সূর্যাস্তে
     প্রতিটা শ্বাসেই ফেরার চাবি থাকে


 (ছবিঃ দেবাশীষ বোস)

এক আমি গড়ছে ভাঙছে

এক আমি গড়ছে ভাঙছে
   আরেক আমি দেখছে
দুই আমিকেই বিশ্ব আমি
   নীরব চোখে দেখছে

বন্ধুত্ব

'বন্ধুত্ব' সবসময় একটা সরে সরে যাওয়া নাম। সম্পর্কের একটা নাম থাকে। তার একটা স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা থাকে। কোথাও বা একটা দায়ও থাকে। কিন্তু বন্ধুত্ব একটা স্থবিরতার নাম না। একটা ঘটমান চলমান অস্তিত্ব। 'বন্ধু' একটা সম্পর্ক হতেই পারে। কিন্তু বন্ধু নামক সম্পর্কে যে বন্ধুত্বটা টিকেই আছে তা কে জোর দিয়ে বলতে পারে?

হে কর্ণধার

রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিখ্যাত ‘সাধনা’ গ্রন্থের ভূমিকায় বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে নিজের ধর্মবোধ বলতে গিয়ে একটি জায়গায় বলছেন – 'উপনিষদ ও বুদ্ধের বাণী, শাশ্বত আত্মার বাণী, যা অসীমের পথে বিকাশের প্রেরণা। আমি নিজ জীবনে তা অনুসরণ করেছি, ও সেই বাণীই প্রচার করে এসেছি সারা জীবন...'

একটা ছোট প্রাণ

একটা ছোট প্রাণ
   চেতনার আদি জয়তোরণ
মাটির সব জড়ত্ব ভেঙে
        প্রাণের স্বপন উন্মোচন

(ছবিঃ দেবাশীষ বোস)

বিপরীত

(একটা দ্বিতল বাড়ির বারান্দায় দুই বন্ধুর কথোপকথন। বয়েস আনুমানিক, পঁচিশ। একজন সংস্কৃতের ছাত্র, অপরজনের নামে রসায়ন, আদতে কিছুরই ছাত্র না।)

থাক

খুব ছোট একটা কথা
   থাক, বলব না।
খুব বড় কথাটা
    বলে ফেললেই হবে।

খুব ছোট একটা কথা
     থাক, বলব না।
বললেই, যদি হারিয়ে গেলে!

তুমি আসবে

তুমি আসবে
  আমি বোঝার আগেই জানি
আকাশে বাতাসে
   সবুজে নীলেতে শোনোনি কানাকানি?

(ছবিঃ দেবাশিষ বোস)

হারায়নি কিছু


---
কষ্ট পেও না। হারায়নি কিছু।
কিছুটা সময় গেছে মাত্র,
  সময় আমারও না তোমারও না
   না হয় গেলই।
চোখের তারায় সময়ের কি মূল্য?

দেবজ্যোতিকে

বয়সে অনুজ ।
হলে কি হবে ?
মাথার মধ্যে লাইব্রেরী ।
নানান কাব্য এখানে ওখানে ,
মনের মধ্যে ছড়াছড়ি ।
কিছু কাব্য অনুবাদ কর ,
বললাম খুব আশায় ভাই ;
দেশ বিদেশের নানান লেখা ,
তোমার ভাষায় পড়তে চাই ।

 

Many a time I've missed a beat

Many a time I've missed a beat
Of the evening sonata
Loitered in the unwalked alleys of life,
In shameless pursuit of a dwelling
Which I could call my own....
At last in tired refrain,
I sheltered my tired limbs
At the shady crossroads of life..
And blabbered away
Some nonsense lullaby
From old forgotten days...

ছায়াপথ

মনের দু'পাশে দুটো হাত দিয়ে আগলে রেখেছো কিছুতেই যেন হারিয়ে না যাও ভিড়ে

বেসামাল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলে হাত
কামড়ে ধরো মনের দুটো পা
     যাতে পালাতে না পারে
         ঝর্নার মত নদী না হয় ছিটকিয়ে

এখন রাত্রি অনেক গভীর
    সারা আকাশে রহস্যময় হাসি
অবশ শরীরে তবু আগলে আছো মন

যার শুনেছি জগতখানা

যার শুনেছি জগতখানা, তাঁর এত নেই জোরাজুরি
তাঁর যত সব চ্যালা চামুন্ডা, তাদেরই দেখি তাড়াতাড়ি
যে কোনো ভাবেই মানাতে হবে, শেখাতে হবে 'জি হুজুরী'
কার ভাবে কে পূজা চায় রে, সবই দেখি দেখনদারি!

আপন হতে বাহির হয়ে

'বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর’ - আজন্ম শোনা কথা। যত বয়েস বাড়ছে তত হেঁয়ালির মত শোনাচ্ছে কথাটা।

জ্যোতিষী জানেন

জ্যোতিষী জানেন, কার হাতের কোন দাগ কাকে কোথায় নিয়ে যাবে
অথচ জানেন না, কার হাতের পর কার হাত তার সামনে পাতা হবে

মাদল

অসম্ভব যন্ত্রণা নিয়ে জন্মালো একটা তারা
    তার জন্মলগ্নেই যেন বিচ্ছেদযন্ত্রণার ব্যথা
সে মহাশূন্যে চোখ মেলে তাকালো
       বুকের থেকে ছিটকে পড়ল বিকিরণ
    খুঁজল তেষ্টা মেটানোর মত প্রেম
আলোতে অন্ধকারে
     রহস্যে সরলতায়

তখন দেরী নেই

 দরজার একটা পাল্লা ভীষণ ভারী ছিল
    হ্যাঁচড়াতে হ্যাঁচড়াতে যখন পাল্লাটা খুলল
  তখন সূর্যোদয়ের আর বেশি দেরি নেই
পূবাকাশ আলতার মত লাল টকটকে
     যেন মা হেঁটে গিয়েছেন খানিক আগেই আলতা রাঙা পায়ে
পাখিগুলো নীড় থেকে রওনা দিয়েছে নীলাকাশে
        ওদের ডানায় ডানায় মনের আদর