কিছু দৃষ্টি ছায়ার মত
রোদে তাপে হঠাৎ ঠান্ডা জলের মত।

বয়স বাড়তে বাড়তে সে ছায়াদৃষ্টি কমে
অনেক গাছ নেই যে আর।

তখন ছায়াহীন মরুভূমিতে সে একা।

তার চোখে তখন ছায়ার দৃষ্টি
কিছু তরুণ, শৈশবের মুখে চেয়ে।

মাত্র দুটো ছবি ছিল মনে
এক, তুমি আসবে
দুই, তুমি থাকবে

দিন গেল
মাস গেল
বছর গেল

আমার মনে দুটো আশা
এক, হয়তো তুমি আসবে
দুই, হয়তো তুমি থাকবে

দিন গেল
মাস গেল
বছর গেল

আমার মনে দুটো ভয়
এক, বোধহয় তুমি আসবে না
দুই, বোধহয় তুমি থাকবে না

দিন গেল
মাস গেল
বছর গেল

মন বাইরের দিকে ছুটেছে। সারাক্ষণ তার বাইরে বাইরে খোঁজ। সে ছুটে মহাকাশকে ছুঁতে চাইছে, সে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে গিয়ে নুড়ি কুড়িয়ে আনতে চাইছে। সে আলোর বেগে ছুটতে চাইছে, মাতাল হাওয়ায় নাচতে চাইছে। সেই ছোটবেলায় একরকমের খেলনা ছিল, একটা যন্ত্রকে পাঁই পাঁই করে ঘুরিয়ে যাওয়া, ওর সাথে একটা দড়ি লাগানো থাকত সেটাও পাঁই পাঁই করে চরকীর মত ঘুরত। আমাদের মনটাও সেরকম। সারাদিন পড়িমড়ি করে ছুটছে। কেন ছুটছে?

কিছু মুখ জানলার কাঁচের ওদিকে এখন
এদিকেই ছিল ওরা
এই তো কিছুক্ষণ আগেও

আর জল হাওয়া লাগবে না
আওয়াজ, আর্তনাদ, ডাক কানে যাবে না

আচমকাই হল,
কিছু বোঝার আগেই

একটা ইতস্ততঃ বাঁচা
আগু- পিছু ভাবছে
ভাবতে ভাবতে দু'পা গিয়ে
চার পা ফিরে আসছে

একটা অস্বস্তির হাসি
ঠোঁটের আগায় ঝুলছে
ভাবের ঘরে চুরি-
বুঝছে, তবু করছে

একটা না-ভরসার মানুষ
হাতেতে হাত রাখছে
আঙুলের ফাঁকে জ্বালা জ্বালা
তবু হাত দেখি না ছাড়ছে

কিছু স্বপ্ন ঝরে গেছে
কিছু স্বপ্ন মাড়িয়ে গেছে
কিছু স্বপ্ন একটা প্রজাপতি পেলো না সারাজীবন
শুকিয়ে গেছে

তবু বেঁচে আছি, কারণ-
আজও কিছু স্বপ্ন কুঁড়ি হয়ে আছে

কিছু সম্পর্ক এত আলগা
আগে থেকে যায় না বোঝা -
একটা হালকা ঝাঁকুনিতেই
এক্কেবারে ফালা ফালা!

কিছু সম্পর্ক এমনই ফাঁস
গলার কাছে এখনো লাল
ছেড়ে গেছে ফাঁস, তবু -
বুকের মধ্যে জ্বালা জ্বালা

কিছু সম্পর্ক এত পিছল
ধরতে শিখতে জম্ম কাবার
এই বুঝি সে কাছের ছিল
বাঁক ঘুরতেই, পালা পালা!

কি আশ্বাসে তাকাবো তোমার মুখে?
বিকালের পড়ন্ত রোদ বটগাছটার মাথায়
শুকনো কিছু পাতা ডাল ছড়ানো মাটিতে
এতো বিষন্ন কেন তোমার মুখ?
সারাদিনের সাজানো প্রদীপ ভেঙেছে?
আলগোছে রেখেছিলে হয়তো বা
কিম্বা হয়তো ওদের ভাঙারই ছিল আজ।
উঠে এসো
সামনের পুকুরটার পাড়ে গিয়ে বসো
দেখো একটু পরেই জ্বলবে সন্ধ্যাতারা
সে তোমারও সন্ধ্যাতারা, আমারও।

বিষুবরেখার মধ্যভাগে দাঁড়াতে পারি
চীৎকার করতে পারি গলা চিরে
হয়তো পৃথিবীর দুই প্রান্তদেশে
কিছু বরফের পাহাড়ে ধরতে পারে চিড়
কটা পেঙ্গুইন, শীল চমকে তাকাতেও পারে এদিকে